সৌদি নৃশংসতার স্পষ্ট প্রমাণ ইয়েমেন
সৌদি নৃশংসতার স্পষ্ট প্রমাণ ইয়েমেন
আজ ইয়েমেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় তায়েজ প্রদেশে সৌদি জঙ্গিবিমানের বোমাবর্ষণে অন্তত ১০ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে। ইয়েমেনে সম্ভাব্য মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও দেশটির ওপর নির্বিচার বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে সৌদি আরব।
এ ছাড়া, সা’দা প্রদেশের হাইদান এবং হাদিদা এলাকায় সৌদি বিমান বাহিনীর নৃশংস বোমাবর্ষণে নিহত হয়েছে আরো নয় জন। সেইসঙ্গে সা’দা প্রদেশের একটি জনাকীর্ণ বাজারে সৌদি বোমাবর্ষণে অন্তত ছয় ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী জিমি ম্যাক গোলড্রিক বলেছেন, দারিদ্র পীড়িত ইয়েমেনের এক কোটি ৯০ লাখ মানুষের জরুরি ত্রাণ প্রয়োজন। সেদেশের ৩৩ লাখ নারী ও শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশটিতে যে পরিমাণ ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এ ছাড়া, সৌদি বিমান হামলা নিরবচ্ছিন্নভাবে চলতে থাকায় দুর্গত এলাকাগুলোতে ত্রাণসাহায্য পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
গোলড্রিক মঙ্গলবার রাজধানী সানায় সাংবাদিকদের আরো জানান, সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব জোটের গত ২২ মাসের হামলায় ইয়েমেনের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে।
এদিকে আগ্রাসী সৌদি বাহিনী ইয়েমেনে চালানো হামলায় গুচ্ছ বোমাসহ বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ অস্ত্র প্রয়োগ করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব অস্ত্রের বেশিরভাগ সৌদি আরবে আসছে ব্রিটেন থেকে। ব্রিটেনে বসবাসকারী রাজনৈতিক কর্মী আহমাদ আল-মুয়িদ এ সম্পর্কে বলেছেন, ব্রিটিশ সরকার দ্বৈত নীতি গ্রহণ করেছে এবং মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের চেয়ে অর্থনৈতিক স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। ইয়েমেনে চলমান হামলায় গুচ্ছ বোমা ব্যবহার করা হচ্ছে জেনেও লন্ডন রিয়াদের কাছে এই অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে ইয়েমেনের সেনা ও গণবাহিনী দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শাবুবা প্রদেশে সৌদি ভাড়াটে বাহিনীর অগ্রাভিযান রোধ করে দিয়েছে। আল-মাসিরা টেলিভিশন জানিয়েছে, এই প্রদেশের আসিলান এলাকায় গতকাল সৌদি আরবের ভাড়াটে সেনাদের রুখে দিয়েছে ইয়েমেনের সেনাবাহিনী। এ সময় তীব্র সংঘর্ষে ৩৭ ভাড়াটে সেনা নিহত এবং অপর ২৩ জন আহত হয়েছে।
২০১৫ সালের ২৬ মার্চ মুসলিম প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনে বিমান হামলা শুরু করে মুসলমানদের কথিত নেতা হিসেবে পরিচয় দানকারী সৌদি আরব। রিয়াদ দাবি করছে, ১০ দেশের সমন্বয়ে সামরিক জোট গঠন করে এ হামলা চালানো হচ্ছে; কিন্তু বাস্তবে কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ছাড়া এই মানবতা বিরোধী অপরাধে অন্য কোনো দেশ রিয়াদকে সহযোগিতা করছে না। সৌদি আরব গত প্রায় দুই বছর ধরে নৃশংস আগ্রাসন চালানোর পরও এ হামলার একটি লক্ষ্যও অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু এ সময়ে ইয়েমেন দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ নিহত কিংবা স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করেছে এবং দেশটির অবকাঠামোর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন