ইমাম কাযিম (আ.)’এর কন্যা ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এর শ্রেষ্ঠত্বের কারণ
ইমাম কাযিম (আ.)’এর কন্যা ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এর শ্রেষ্ঠত্বের কারণ
এস, এ, এ
হজরত ফাতেমা (সা.আ.) ইমাম মূসা কাযিম (আ.)’এর সন্তানদের মধ্যে তাঁর ভাই ইমাম রেযা (আ.)’এর মতো পবিত্র এবং বিশেষ বৈশিষ্টের অধিকারি ছিলেন।
ইরানের কুম শহরে বিভিন্ন ইমাম (আ.)দের সন্তানদের মধ্যে তাঁর অবস্থান হচ্ছে উজ্জল নক্ষত্র এবং পূর্ণ চন্দ্রিমার ন্যায়। যার পবিত্র নূর কুম শহরটিকে নূরান্বিত করে রেখেছে। ইমাম মূসা কাযিম (আ.)’এর সন্তানদের মধ্যে রেযা (আ.)’এর পরে তাঁর ব্যাক্তিত্ব, আত্মিকপূর্ণতা ছিল অনেক বেশি। শেইখ মুফিদের বর্ণনামতে ইমাম মূসা কাযিম (আ.)’এর কন্যাদের সংখ্যা ছিল ১৮ জন। কিন্তু হজরত ফাতেমা (সা.আ.) ছিলেন তাদের মধ্যেমণি। শেইখ আব্বাস কুম্মি ইমাম কাযিম (আ.)’এর কন্যাদের সম্পর্কে লিখেছেন যে, হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.) ছিলেন অন্যান্যদের তুলনায় পবিত্র ও সম্মানিত। শেইখ মোহাম্মাদ তাকি তাশতারি লিখেছেন যে, হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.) শুধুমাত্র ইমাম কাযিম (আ.)’এর কন্যাদের মধ্যেই বিশেষ ফযিলতের অধিকারি ছিলেন না বরং তিনি ইমাম রেযা (আ.) ব্যাতিত ইমাম (আ.)’এর অন্যান্য সন্তাদের তুলনায় বিশেষ সম্মান ও ফযিলতের অধিকারি এবং তাঁর জুড়িদার কেউ ছিল না।
হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এর সম্পর্কে যে সকল রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে তা তাঁর অন্যান্য ভাই বোনদের সম্পর্কে বর্ণিত হয়নি এমনকি অন্যান্য ইমাম (আ.)’এর সন্তানদের সম্পর্কে বর্ণিত হয়নি। আর এ কারণে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নারিদের মধ্যে তাঁকেও গণনা করা হয়। নিন্মে এ সম্পর্কে কিছু বিষয় সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো:
১- পারিবারিক সম্মান: সন্তানের আত্মার উপরে তার পিতা মাতার প্রভাবকে কেউ অস্বিকার করতে পারে না। অনুরুপভাবে ইমাম রেযা (আ.)’এর মতো তিনিও তাঁর বাবা মা এর পক্ষ থেকে উক্ত ফযিলতের অধিকারি এবং ইমাম কাযিম (আ.)’এর সন্তানদের মধ্যে হতে পবিত্র উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলীর অধিকারি হন। কেননা বলা হয় যে, তাঁর মা নাজমা ইমাম কাযিম (আ.)’এর অন্যান্য স্ত্রীদের মধ্যের ছিলেন উজ্জ্বল তারকা স্বরূপ। আর উক্ত দুই পবিত্র ব্যাক্তির মাধ্যেমেই ইমাম রেযা (আ.) এবং হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এ ধরাতে জন্মলাভ করেন।
হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এর সৌভাগ্যে হচ্ছে যে তিনি এবং ইমাম রেযা (আ.) হচ্ছেন সহদর। ইমাম আ.)দের চরিতের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে দেখতে পাই যে পবিত্র স্ত্রী নির্বাচন ইমাম (আ.)দের জন্য একটি অপরিহার্য শর্ত ছিল। আর উক্ত বিষয়টি ছিল হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
২- শাফায়াত: হজরত মোহাম্মাদ (সা.) হচ্ছেন সর্বত্তোম শেফায়াতকারি। কিন্তু রাসুল (সা.)’এর বংশের এমন দুইজন নারীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে যারা শাফায়াত করবেন এবং তাদের শাফায়াত হবে ব্যাপক, বিস্তৃত এবং বিশ্বজনীন। উক্ত দুইজন নারির মধ্যে একজন হচ্ছেন হজরত ফাতেমা যাহরা (সা.আ.)এবং অপরজন হচ্ছেন হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)।
হজরত ফাতেমা (সা.আ.)’এর শাফয়াতের সম্পর্কে শিয়া সুন্নি উভয়েই হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর শাফায়াত করার ক্ষেত্রে কোন নারিই হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এর সমতুল্য নেই। ইমাম জাফর সাদিক (আ.) এ সম্পর্কে বলেছেন: হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এর শাফয়াতের কারণে আমাদের অনুসারিরা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
৩- অন্যান্য বৈশিষ্ট সমূহ: তাঁর পবিত্রতা এবং হাদিস বর্ণনাকারি হিসেবে এবং তাঁর সম্পর্কে বিশেষ যিয়ারত বর্ণিত হওয়ার কারণে তিনি অন্যান্য ইমাম (আ.)’এর সন্তাদের তুলনায় এক বিশেষ পদমর্যাদার অধিকারি হন।
৪- কারামত: আহলে বাইত (আ.)’এর অনুসারি ও ভক্তগণেরা অনেকেই তাদের নিজেদের জিবনে হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)এর কারামতকে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। অনেক অসুস্থ ব্যাক্তি সুস্থ হয়েছেন অনেকের সমস্যার সমাধান হয়েছে। আবার অনেকেই আধ্যাতিকতা অর্জন করেছে।
৫- ইমাম (আ.)দের বাণী: হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.) সম্পর্কে একাধিক হাদিস ইমাম (আ.)দের থেকে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম রেযা (আ.) বলেছেন যারা কুম শহরে আমার বোনের যিয়ারত করবে সে জান্নাতবাসি হবে।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন