বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার পরামর্শ দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার পরামর্শ দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের এক সমাবেশে ছাত্রদের নানা সমস্যা এবং বর্তমান আর্থ-রাজনৈতিক নানা বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন। তিনি ঈমান ও পবিত্র কুরআনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ইরানি জাতির সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আমরা যখন থেকে স্বাধীনতা ও উন্নতির পথে যাত্রা শুরু করেছি তখন থেকেই এ সংগ্রাম শুরু হয়েছে। কারণ আমাদের এ সংগ্রাম বৃহৎ শক্তিগুলোর স্বার্থকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তিনি তার বক্তব্যে শত্রুদের চাপ ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা সম্পর্কে বলেন ইসলামী বিপ্লবের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিরোধ অব্যাহত রয়েছে এবং বর্তমানে শত্রুদের ষড়যন্ত্র আরো জটিল হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যতদিন পর্যন্ত ইরানি জাতি শত্রুদের আগ্রাসী ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে ততদিন পর্যন্ত লড়াই চলবে। এ লড়াইয়ের অবসান ঘটানোর ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যেমনটি বলেছেন, শত্রুদের দাবি অনুযায়ী হয় ইরানকে তার অর্জিত শক্তি সামর্থ্যকে ত্যাগ করে প্রতিরোধের পথ থেকে সরে আসতে হবে অথবা শুধু নামে মাত্র ইরানে এমন এক ইসলামী সরকার থাকবে যার কোনো সত্যিকারের ইসলামী পরিচিতি থাকবে না। তবেই শত্রুরা খুশি থাকবে। তিনি বলেন, বর্তমানে আমেরিকা ইরানের কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে এবং কর্মকর্তাদেরকে ভালো ও মন্দ এ দু’টি ভাগে বিভক্ত করেছে। তিনি বলেন, এটাও ঠিক আমেরিকা যদি এ মুহূর্তে তাদের দৃষ্টিতে তথাকথিত ভালো কাউকে পেয়ে থাকে তবে এক পর্যায়ে এরাও খারাপে পরিণত হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শত্রুদের এ ধরণের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় প্রয়োজন নিজস্ব শক্তি ও কঠিন ঈমান। শত্রুরা অর্থনৈতিক অবরোধ থেকে শুরু করে সামরিক হামলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রয়োজন অর্থনৈতিক ভিত্তিগুলোকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানো। আর এ ক্ষেত্রে যুবকরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এ ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, যদি চোখ খোলা রাখা না হয় তাহলে সরলমনা ছাত্ররা শত্রু ও বন্ধু চিনতে ভুল করবে কিংবা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে বিশ্লেষণ করতে ভুল করে বসতে পারে।
হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ছাত্ররাই শত্রুদের টার্গেট এ কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ইসলামী শাসন ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য শত্রুরা বিপুল অর্থ ব্যয় করার পাশাপাশি বিষাক্ত প্রচারণা যুদ্ধে নেমেছে যাতে ইরানের শক্তি সামর্থ্যকে আড়াল করার পাশাপাশি দেশটির জনগণ ও যুব সমাজের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করা যায়। তিনি অতীতের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেছেন, ইরানের জনগণের ওপর পাহলাভি রাজবংশের স্বৈরশাসন চাপিয়ে দেয়া, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনপ্রিয় সরকারের পতন ঘটানো, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহযোগিতা করা, অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া ও সাদ্দামের প্রতি পাশ্চাত্যের সমর্থন, ইরানের যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করা, পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি প্রভৃতি ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন শত্রুতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সমাবেশে ইরানের বিরুদ্ধে শত্রুদের নানামুখী ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে অত্যন্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন