ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর ইমামতকাল
ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর ইমামতকাল
এস, এ, এ
ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর আয়ু হচ্ছে মোট ২৯ বছর মাত্র। আমরা ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর এই আয়ুকালকে তিনভাগে ভাগ করতে পারি।
প্রথম ভাগঃ তিনি ১৩ বছর পর্যন্ত মদীনাতে জীবন যাপন করেন
দ্বীতিয় ভাগঃ সামেরায় ইমামত প্রকাশের পূর্বে ১০ বছর।
তৃতীয় ভাগঃ প্রায় ৬ বছর তাঁর ইমামতকাল।
ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর ইমামতকাল ছিল বণী আব্বাসের যুগে। আর তাই তাঁর ইমামতের ৬ বছরের মধ্যে ৩ বছর কাটে কারাগারে। তিনি যে কারাগারে বন্দি ছিলেন তার কারারক্ষি ছিল সালেহ বিন ওয়াসিফ সে দুইজন জালিম দাশকে ইমাম (আ.)-র উপরে নজরদারী করার জন্য কারাগারে রাখে যেন উক্ত দুই দাশ তাকে কষ্ট দিতে পারে। কিন্তু উক্ত দুই দাশ ইমাম (আ.)-এর সানিধ্যে অর্জনের কারণে পরিবর্তন হয়ে যায়। যখন উক্ত দুই দাশকে ইমাম (আ.)-এর সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় তখন তারা বলে তিনি সারাদিন রোজা রাখতেন এবং সারা রাত ইবাদত করতেন এবং তিনি কারো সাথে খঅরাপ ব্যাবহার করতেন না। মোতামেদ আব্বাসীর উজির উবাইদুল্লাহ বিন খাকান যে সকল সময়ে গর্ব সহকারে চলাফেরা করতো কিন্তু যখনই সে ইমাম (আ.) এর কাছে উপস্থিত হতো তখন সে ইমাম (আ.)-এর ভদ্রতার খাতিরে উঠে দাড়াতো এবং ইমাম (আ.) কে নিজের স্থানে বসাতো। সে বলতো আমি সামেরাতে ইমাম (আ.)-এর মতো কাউকে দেখিনি তিনি হচ্ছেন এ যুগের সব চেয়ে জ্ঞানী এবং আত্মসংযমী ব্যাক্তি। উবাইদুল্লাহ খাকান-এর পুত্র বলে আমি ইমাম (আ.)-এর সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার জন্য লোকদেরকে তাঁর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি যে লোকজনও তাঁকে যথেষ্ট সম্মান করে এবং ভালবাসে। আর এ কারণে আব্বাসী খেলাফতের খলিফা নিজেদের রাজতন্ত্রকে বাচানোর লক্ষ্যে তাকে অধিক সময় কারাগারে বন্দি এবং নজর বন্দি করে রাখে। উবাইদুল্লাহ খাকানকে খলিফার পক্ষ থেকে কুম নামক এলাকায় নিযুক্ত করা হয় কেননা সে রাসুল (সা.)-এর আহলে বাইত (আ.)-এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতো। এ কারণেই ইমাম রেজা (আ.)-এর শাহাদতের পরে ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর সাহাবীরা বিক্ষিপ্তভাবে জীবন যাপন করতো যেন আব্বাসীয় খলিফার রোষনলে যেন পতিত না হয়। তারা
ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর সাহাবীরা ছিলেন বিভিন্ন স্থানে জীবন যাপন করতো যেমনঃ কুম নামক এলাকায় আবু আলী আহমাদ বিন ইসহাক আশআরী, বাগদাদে আবু সাহল ইসমাইল নোবাখতি।
খলিফারা সর্বদা ইমাম হাদী (আ.) এবং ইমাম আসকারী (আ.) কে নজর বন্দি করে রাখতো এবং তাদের সাথে কাউকে সাক্ষাত করতে দিত না। যদিও ইমাম আসকারী (আ.) ২৯ বছরের বেশী জীবন যাপন করেন নি কিন্তু মাত্র ৬ বছর ইমামতকালে তিনি ইসলামের যথেষ্ট খেদমত করেন যেমনঃ কোরআনের তাফসীর, আহকাম বর্ণনা, শিয়াদেরকে পথ নির্দেশনা দিতেন। ইয়াকুব বিন ইসহাক কেনদি ছিলেন সে যুগের একজন প্রসিদ্ধ দার্শনিক তিনি ইমাম (আ.)-এর কাছে বিদ্যা অর্জন করেন এবং অবশেষে সে ইমাম (আ.)-এর অনুসরণ করতে থাকে। কিন্তু এত সমস্যা থাকার পরেও তিনি ইসলামের খেদমত করে গেছেন।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন