সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -১৭
সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হজরত মোহাম্মাদ (সা.) -১৭
'বিশ্বনবী (সা.)বলেছেন : যার দিকে উপকারের হাত বাড়িয়ে দেয়া হয় তার উচিত এর প্রতিদান দেয়া। আর তা সম্ভব না হলে অন্তত উপকারীর প্রশংসা করতে হবে। আর কেউ যদি তা-ও না করে তা হলে সে নেয়ামতের কুফরি (অকৃতজ্ঞতা) করলো।
মহানবী(সা.) বলেন : পরস্পর করমর্দন করো। কারণ, করমর্দন (পারস্পরিক) বিদ্বেষ দূর করে।
তিনি বলেন : মুমিন যে কোনো বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে পারে তবে কখনোই মিথ্যা ও বিশ্বাসঘাতকতার বৈশিষ্ট্য তার মধ্যে থাকতে পারে না।
তিনি আরো বলেন : নিশ্চয় কিছু কিছু কবিতায় প্রজ্ঞা রয়েছে, বর্ণনান্তরে কিছু কিছু কবিতা হলো প্রজ্ঞা। আর কিছু কিছু বক্তৃতা যাদুর প্রভাবসম্পন্ন।
মহানবী আবু যারকে বললেন : ঈমানের কোন্ রশিটি বেশি শক্ত? তিনি বললেন : আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন : আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব করা, আল্লাহর জন্য শত্রুতা করা আর আল্লাহর জন্য বিদ্বেষ পোষণ করা।
বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন : মানব জাতির জন্য কল্যাণকর হলো আল্লাহর কাছ থেকে মঙ্গল কামনা করা আর আল্লাহ্ যা কিছু নির্ধারণ করেছেন তাতে সন্তুষ্ট থাকা আর মানব জাতির জন্য দুর্ভাগ্য হলো আল্লাহর কাছ থেকে মঙ্গল কামনা বর্জন করা আর আল্লাহ্ যা কিছু নির্ধারণ করেছেন তাকে মন্দ জ্ঞান করা।
মহান আল্লাহর সর্বশেষ রাসূল বলেছেন : অনুতাপ নিজেই তওবা।
বিশ্বনবী বলেন : সেই ব্যক্তি কোরআনে ঈমান আনে নি যে হারামকে হালাল গণ্য করে।
এক ব্যক্তি মহানবী (সা.)-কে বলল : আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বললেন : তোমার জিহ্বাকে রক্ষা করো। অতঃপর ওই ব্যক্তি বলল : হে রাসূলুল্লাহ্! আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বললেন : তোমার জিহ্বাকে রক্ষা করো। পুনরায় সে বলল : হে রাসূলুল্লাহ্! আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বললেন : আক্ষেপ তোমার ওপর! লোকেরা তাদের জিহ্বা দ্বারা যা কিছু ফসল তোলে তা ছাড়া অন্য কিছুর মাধ্যমে কি দোযখে নিক্ষিপ্ত হয়?
বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন : ভালো কাজগুলো মন্দ মৃত্যু থেকে রক্ষা করে আর গোপনে দান আল্লাহর ক্রোধকে প্রশমিত করে। আর আত্মীয়তার সম্পর্ককে জোড়া লাগানো আয়ু বাড়িয়ে দেয়। আর প্রত্যেক সদাচারই হলো সাদাকাহ্। আর দুনিয়ার সদাচারী ব্যক্তি পরকালে সদাচার লাভের যোগ্য। আর যে দুনিয়ায় খারাপ কাজ করে সে পরকালে মন্দ লাভ করার যোগ্য। আর সদাচারীরাই সর্বপ্রথম বেহেশতে প্রবেশ করবে।
রাসূলে পাক বলেছেন : নিশ্চয় আল্লাহ্ যখন তাঁর বান্দাকে নেয়ামত দান করেন তখন তার ওপর সে নেয়ামতের প্রভাবকে দেখতে পছন্দ করেন। আর জীবনকে মন্দ করা ও মন্দভাবে জীবন যাপন করাকে ঘৃণা করেন।
বিশ্বনবী আরো বলেছেন : উত্তম প্রশ্ন হলো জ্ঞানের অর্ধেক। আর নমনীয়তা তথা অন্যের সাথে মানিয়ে চলা হলো জীবিকার অর্ধেক।
মহানবী (সা.) বলেন : আদম সন্তানরা বৃদ্ধ হয়ে যায়, কিন্তু তার মধ্যে দু’টি জিনিস যৌবন লাভ করে : লোভ ও উচ্চাশা।
তিনি আরো বলেন : লজ্জা ঈমানের অঙ্গ।
বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন : যখন কিয়ামত সংঘটিত হবে তখন কোনো বান্দারই পা সরবে না যতক্ষণ না তাকে চারটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে : তার আয়ুষ্কাল সম্পর্কে তা কোন্ পথে নিঃশেষ করেছে, তার যৌবন সম্পর্কে তা কোন্ কাজে পরীক্ষা করেছে, তার আয়-উপার্জন সম্পর্কে তা কোন্ পথে অর্জন করেছে এবং কোন্ কাজে ব্যয় করেছে আর আমার আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা সম্পর্কে।
রাসূলে পাক বলেন : যে ব্যক্তি মানুষের সাথে লেনদেন করে অথচ তাদের সঙ্গে অন্যায় বা অবিচার করে না ; তাদের সাথে কথা বলে তবে মিথ্যাচার করে না ; তাদের সাথে অঙ্গীকার করে তবে তা ভঙ্গ করে না- সে হলো এমন ব্যক্তি যার পৌরুষত্ব পূর্ণতা পেয়েছে এবং তার ন্যায়পরায়ণতা প্রকাশ পেয়েছে ও তার প্রতিদান অপরিহার্য হয়েছে আর তার গীবত করা নিষিদ্ধ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন : মুমিনের আপাদমস্তক সম্মানীয় : তাঁর সম্ভ্রম, তাঁর মাল-সম্পদ এবং তাঁর রক্ত।
মহানবী (সা.) বলেন : তোমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ককে জোড়া লাগাও যদি তা সালাম দেয়ার মাধ্যমেও হয়।
বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন : ঈমান হলো অন্তরে বিশ্বাস করা, জিহ্বা দিয়ে ব্যক্ত করা, আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে পালন করা।
মহানবী বলেন : প্রাচুর্য বেশি মাল-সম্পদের অধিকারী হওয়ার মধ্যে নেই, বরং তা রয়েছে মনের অমুখাপেক্ষিতার মধ্যে।
তিনি বলেন : মন্দ করা থেকে বিরত থাকাই সদ্কাস্বরূপ।
তিনি আরো বলেন : চারটি জিনিস রয়েছে যা আমার প্রত্যেক হৃদয়বান বুদ্ধিমান উম্মতের জন্য আবশ্যক। আরজ করা হলো : হে রাসূলুল্লাহ্! সেগুলো কী কী? তিনি বললেন : জ্ঞান শ্রবণ করা, তা রক্ষা করা, তা প্রচার করা এবং তা মেনে চলা।
রাসূলে পাক (সা.) বলেন : নিশ্চয় কিছু কিছু বক্তৃতা হলো যাদু আর কিছু কিছু জ্ঞান হলো অজ্ঞতা আর কিছু কিছু কথা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
বিশ্বনবী (সা.) বলেন : প্রথা হলো দু’টি। একটি প্রথা হলো যা কাজে লাগানো জরুরি এবং আমার পরে তা আমল করা হেদায়েত ও তা বর্জন করা পথভ্রষ্টতার নামান্তর। আরেক প্রথা হলো যা জরুরি নয়, তবে তা কাজে লাগানো মর্যাদাকর এবং তা বর্জন করা গুনাহ নয়।
তিনি আরো বলেন : যে ব্যক্তি আল্লাহকে রাগিয়ে শাসককে সন্তুষ্ট করে সে আল্লাহর দীন বা ধর্ম থেকে বেরিয়ে গেছে।
সূত্রঃ তেহরান রেডিও
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন