পুলিশ সদরদপ্তর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অরাজকতায়; দখল হলো
পুলিশ সদরদপ্তর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অরাজকতায়; দখল হলো
পুলিশের সদরদপ্তরে হামলা চালাচ্ছে অস্ত্রধারীরা
রুশ-পন্থী অস্ত্রধারীরা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ক্রামাতোর্স্ক শহরের একটি পুলিশ সদরদপ্তর দখল করে নিয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা সদরদপ্তরে ঢোকার সময় পুলিশ বাধা দিলে সেখানে বন্দুকযুদ্ধ হয়।
এ ছাড়া, শনিবার দোনেত্স্ক অঞ্চলে আরো বেশ কিছু সরকারি ভবনও রুশ-পন্থী আন্দোলনকারীরা দখল করে নিয়েছে। ইউক্রেনের পাশ্চাত্যপন্থী নয়া অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে মস্কো-পন্থী নাগরিকদের টানাপড়েন তীব্রতর হওয়ার কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। এর আগে শনিবারই স্লোভিয়ান্স্ক শহরের একটি থানা দখল করে অস্ত্রধারীরা।
ক্রামাতোর্স্ক-ভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে হামলাকারীরা দু’টি বাসে করে পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে নামে। কয়েক মিনিটের গোলাগুলির পর তারা এটির দখল নিয়ে নেয়। তবে গোলাগুলিতে কেউ হতাহত হয়নি। অস্ত্রধারীরা দপ্তরটি দখল করেই সেখানে দোনেত্স্ক প্রজাতন্ত্রের পতাকা উড়িয়ে দেয়।
সামরিক পোশাক ও মুখোশ পরিহিত এসব অস্ত্রধারী নিজেদেরকে ‘গণবাহিনী’ হিসেবে উল্লেখ করে শহরবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেয়। তারা বলে, “আমরা ইউক্রেনের সেনাবাহিনী নই। আমরা গণবাহিনীর সদস্য। আমরা কিয়েভের দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশকে হটিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছি।” ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেয়ার হুমকি দিয়েছে।
দেশটির একটি টেলিভিশন চ্যানেল প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ক্রামাতোর্স্কের পুলিশ সদর দপ্তরের কাছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে লোকজন তামাশা দেখছে এবং এক পর্যায়ে বেশ কিছু সময় ধরে গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে এ ভিডিও’র সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রয়েছে রুশ-ভাষাভাষি বিপুল জনগোষ্ঠীর বাস। গত ফেব্রুয়ারি মাসে পাশ্চাত্যপন্থী আন্দোলনের জের ধরে রুশ-পন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের পতনের পর থেকে পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোতে রাশিয়ার পক্ষে ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। ইউক্রেনের নয়া সরকার বিক্ষোভকারীদের উস্কে দেয়ার জন্য মস্কোকে দায়ী করলেও রাশিয়া এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইয়ানুকোভিচ সরকারের পতনের পর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রজাতন্ত্র ক্রিমিয়া রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিয়েছে। ক্রিমিয়ায় অনুষ্ঠিত এক গণভোটের জের ধরে এ ঘটনা ঘটলেও আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিযোগ করছে, রাশিয়া বলপ্রয়োগ করে ক্রিমিয়া দখল করে নিয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো ভয় পাচ্ছে, রাশিয়া ইউক্রেনের আরো কিছু অঞ্চল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে পারে।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন