মিশরে নতুন মন্ত্রীসভার কাজ শুরু
মিশরে নতুন মন্ত্রীসভার কাজ শুরু
মিশরের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম মাহলাব প্রেসিডেন্ট আদলি মানসুরের কাছে শপথ নেয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ শুরু করেছেন।
নতুন মন্ত্রীসভায় আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং মোহাম্মদ ইব্রাহিম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদেই বহাল থাকছেন। এ ছাড়া সাবেক অন্তর্বর্তী সরকারের আরো দু’জন মন্ত্রীও নতুন মন্ত্রীসভায়ও নিজ নিজ পদে বহাল রয়েছেন। এ থেকে বোঝা যায়, মিশরে মৌলিক পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ দেশটির নিরাপত্তা বিষয়ক দায়িত্ব এমন সব ব্যক্তিদের হাতে রয়েছে সামরিক অভ্যুত্থান ও প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের পেছনে যাদের অনেক বড় ভূমিকা ছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মিশরে নতুন করে সরকার ও মন্ত্রীসভা গঠিত হলেও এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইব্রাহিম মাহলাবকে নিয়োগ দেয়া হলেও দেশের বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির অবসান ঘটবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোনো কোনো খবরে জানা গেছে, আব্দুল ফাত্তাহ সিসি আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন। এ অবস্থায় মিশরের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, আব্দুল ফাত্তাহ সিসি’র অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করাই সাম্প্রতিক এসব পরিবর্তনের উদ্দেশ্য এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
মিশরে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরাসরি ভূমিকা থাকবে। এ অবস্থায় মিশরে আগামীতে কি ঘটতে যাচ্ছে তা দেখার বিষয়। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, মিশরে সামরিক অভ্যুত্থান ও প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘটনায় সেদেশের ইসলামপন্থী ও জনগণের একটা বিরাট অংশ খুবই মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। মিশরে ইসলামপন্থীদের প্রতি জনগণের বিরাট সমর্থন রয়েছে এবং তারা বর্তমান সরকারকে দখলদার ও অবৈধ সরকার বলে মনে করে। এ কারণে আগামীতে মিশরে ব্যাপক সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে সিসি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার ঘোষণা দেন তাহলে পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটতে পারে।
মিশরে এতটাই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে যে, বর্তমান সরকারের যে কোনো উস্কানিমূলক পদক্ষেপে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠতে পারে যা কিনা এখন সুপ্ত অবস্থায় আছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেনা সমর্থিত সরকারের বিরোধীরা সুযোগের অপেক্ষায় আছে যাতে আবারো এ সরকারের পতন ঘটানোর জন্য আন্দোলন শুরু করা যায়। এ অবস্থায় মিশরের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম মাহলাব সম্ভাব্য আন্দোলন দমনে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিশরের ইসলামপন্থীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল মনে করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতাকে আরো সুসংহত করার জন্যই নতুন মন্ত্রীসভা গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য। তবে মিশরের জনগণ মনে করেন, দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম মাহলাবও সাধারণ মানুষের আন্দোলন থামাতে পারবেন না।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন