কোনো উদ্বাস্তু শিবিরেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মতো শোচনীয় অবস্থা নেই

কোনো উদ্বাস্তু শিবিরেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মতো শোচনীয় অবস্থা নেই

রোহিঙ্গা, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, বৌদ্ধ, মুসলমান, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, জাতিসংঘ, রাখাইন, Shia, Sunni, Islam, Quran, Karbala, najaf, kufa, mashad, samera, madina, makka, jannatul baqi, kazmain, ali, Fatima, hasan, hussain, mohammad, imam mahdi, সিফফিন, জামালের যুদ্ধ, নারওয়ানের যুদ্ধ, খলিফা, খেলাফত, ইমামত, আলী, সিদ্দীক, ফারুক, মোর্তযা, বদর, ওহদ, খন্দক
রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার মহাসচিব গিয়াস উদ্দিন বিন মাওলানা আব্দুস সালাম বলেছেন, মালয়েশিয়ায় প্রায় ৮৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে। তিনি মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী এসব শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতি আহবান জানান। তিনি অভিযোগ করেছেন, মালয়েশিয়ায় অবস্থিত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত তার দেশের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের মুসলিম বিদ্বেষী নীতি অনুসরণ করে শরণার্থীদের অধিকারের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।

মিয়ানমারে উগ্র বৌদ্ধদের হামলা থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ষার জন্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়নে গড়ি মসি করায় এ পর্যন্ত হাজার হাজার মুসলমান নিহত হওয়া ছাড়াও এক লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে। উগ্র বৌদ্ধদের হামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এ পর্যন্ত লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়া এসব শরণার্থীদের করুণ অবস্থা মিয়ানমারে অবস্থিত নির্যাতিত মুসলমানদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।

জাতিসংঘ মহাসচিবের ত্রাণ বিষয়ক সচিব ভ্যালেরি অমুস বিভিন্ন দেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের শরণার্থী শিবিরের অবস্থাকে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ শরণার্থী হিসেবে অভিহিত করে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সীমাহীন জুলুম নির্যাতনের ঘটনায় মুসলিম দেশগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ দেশগুলো মুসলমানদের ওপর উগ্র বৌদ্ধদের হামলা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে। কিন্তু সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের সহযোগিতায় এগিয়ে তো আসেইনি এমনকি মুসলিম দেশগুলোর পক্ষ থেকে ত্রাণ সাহায্য পৌঁছে দেয়ার পথেও বাধা সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি মিয়ানমার সরকার দেশটির মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন (আরকান) প্রদেশে ত্রাণ কাজে নিয়োজিত অন্যতম বড় ত্রাণ সংস্থা ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডার’ বা এমএসএফের তৎপরতা বন্ধ করে দেয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। এরপর সরকার এমএসএফের তৎপরতার অনুমতি দিলেও তাদেরকে রাখাই প্রদেশের বাইরে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডার’ বা এমএসএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমানের ভবিষ্যতের ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন। কারণ তারা মারাত্মক স্বাস্থ্য সংকটে পড়েছে। অসহায় এসব মানুষ হাসপাতালে যাওয়ার বা চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এ কারণে তারা ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডার’ বা এমএসএফের ওপর নির্ভরশীল। এমএসএফ গত জানুয়ারিতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল তারা একদল মুসলমানকে চিকিৎসা দিয়েছে যারা উগ্র বৌদ্ধদের হামলার হাত থেকে প্রাণে রক্ষা পেয়ে পালিয়ে এসেছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণ সংস্কারের দাবিদার মিয়ানমার সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করবে। রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে বলা হচ্ছে বহিরাগত। অথচ বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা যায় মুসলমানরা সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা এবং গত এক হাজারের বেশি সময় ধরে তারা সেখানে বসবাস করে আসছে।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন