কারজাই চুক্তিতে সই না করলে মার্কিন সাহায্য বন্ধের হুমকি
কারজাই চুক্তিতে সই না করলে মার্কিন সাহায্য বন্ধের হুমকি
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বিষয়ে বিশেষ মার্কিন দূত জেমস ড্যাবিনজ ওয়াশিংটনের সঙ্গে প্রস্তাবিত নিরাপত্তা চুক্তিতে সই করার বিষয়টি পিছিয়ে দেয়ার ব্যাপারে কাবুলকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট কারজাই যদি আমেরিকার সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তিতে সই না করে তাহলে আফগানিস্তানকে মার্কিন সামরিক ও অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয়া হবে।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বিষয়ে বিশেষ এ দূত ওয়াশিংটনে মার্কিন শান্তি বিষয়ক সংস্থার এক বৈঠকে দাবি করেছেন, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট কারজাই যদি নিরাপত্তা চুক্তিতে সই করতে অস্বীকৃতি জানান তাহলে সেদেশে সহিংসতা বাড়বে এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতাও হুমকির মুখে পড়বে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নিরাপত্তা চুক্তিতে সই করার জন্য আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে মার্কিন কর্মকর্তাদের হুমকি নতুন কিছু নয়। চুক্তিতে সই করানোর জন্য গত কয়েক মাস ধরে মার্কিন কর্মকর্তারা আফগান সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছে। মার্কিন সরকার বারবার বলে আসছে, ২০১৪ সালের পরও আফগানিস্তানে তাদের সেনা মোতায়েন রাখার জন্য প্রস্তাবিত ওয়াশিংটন-কাবুল নিরাপত্তা চুক্তি সই খুবই জরুরী। তারা এও বলেছে, কাবুল যদি চুক্তিতে সই না করে তাহলে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হোয়াইট হাউজ নিরাপত্তা চুক্তিতে সই করতে কাবুলকে বাধ্য করার জন্য রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি দেশটিকে দেয়া সাহায্যের পরিমাণ অর্ধেকে নামিয়ে আনার হুমকি দিয়েছে। এমনকি আফগানিস্তানকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়ারও হুমকি দিয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও প্রেসিডেন্ট কারজাই এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা চুক্তিতে সই করতে রাজি হননি। মার্কিন দূত এমন সময় চুক্তি সই না করলে আফগানিস্তানকে সামরিক ও অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন যখন মাত্র কিছুদিন মার্কিন কংগ্রেস আফগানিস্তানের জন্য সাহায্যের পরিমাণ ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
মার্কিন সরকার ওয়াশিংটন-কাবুল নিরাপত্তা চুক্তি সই করতে প্রেসিডেন্ট কারজাইকে রাজি করানোর জন্য রাজনৈতিক চাপ ও হুমকি দেয়ার পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতাও চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে গত সপ্তাহে মার্কিন সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল মার্টিন ডেম্পসি চুক্তির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট কারজাইয়ের মনোভাবে পরিবর্তন আনার জন্য আফগানিস্তান সফর করেছেন।
চুক্তি সইয়ের জন্য ওয়াশিংটন এমন সময় কাবুলের ওপর চাপ বৃদ্ধি করেছে যখন প্রেসিডেন্ট কারজাই কিছু শর্তের কথা ঘোষণা করেছেন। এসব শর্তে আফগানদের ঘরবাড়িতে হামলা চালানো বন্ধ করা এবং আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার কথা বলেছেন তিনি। হামিদ কারজাই এও বলেছেন, আগামী এপ্রিলে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরই তারা প্রস্তাবিত চুক্তিতে সই করবেন।
তবে আফগানিস্তান সফরকারী মার্কিন দূত বলেছেন, সেদেশে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর প্রস্তাবিত নিরাপত্তা চুক্তি সইয়ের তেমন আশা নেই। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সম্প্রতি বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ছয় প্রার্থী চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। কাজেই আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরও নতুন সরকার চুক্তিতে সই করবে বলে হোয়াইট হাউজ আশা করছে।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন