মিয়ানমার সরকারের গড়িমসি: মানবাধিকার সংস্থার নিন্দা

মিয়ানমার সরকারের গড়িমসি: মানবাধিকার সংস্থার নিন্দা

মিয়ানমার, মানবাধিকার সংস্থা, মুসলমান, বিবাহ, Shia, Sunni, Islam, Quran, Karbala, najaf, kufa, mashad, samera, madina, makka, jannatul baqi, kazmain, ali, Fatima, hasan, hussain, mohammad, imam mahdi, সিফফিন, জামালের যুদ্ধ, নারওয়ানের যুদ্ধ, খলিফা, খেলাফত, ইমামত, আলী, সিদ্দীক, ফারুক, মোর্তযা, বদর, ওহদ, খন্দক, খায়বার, বণী সাকিফা, বণী সায়াদা, সাহাবী
মিয়ানমার সরকার সেদেশের মুসলমানদের ওপর জুলুম নির্যাতনের ব্যাপারে তদন্ত করতে গড়িমসি করছে।

একটি মানবাধিকার সংস্থা রোহিঙ্গা মুসলমানদের ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের অবমাননাকর ও বৈষম্যমূলক নীতির তীব্র সমালোচনা করেছে। মানবাধিকার সংস্থা (ফোরটিফাই রাইটস) ৭৯ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের আচরণকে মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে। এ মানবাধিকার সংস্থা মিয়ানমারের মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, স্বাধীনভাবে চলাফেরা, বিবাহ ও পরিবার গঠনের অধিকার দেয়ার আহবান জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারের মুসলমানরা উগ্র বৌদ্ধদের হাতে নৃশংসভাবে নিহত হওয়া ছাড়াও প্রথম থেকেই তারা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মিয়ানমারের মুসলমানরা শিক্ষা ও চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি সরকারি পরিচয় পত্রও তাদেরকে দেয়া হচ্ছে না এবং তাদেরকে বেআইনি অভিবাসী অভিহিত করে সেদেশ থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। মিয়ানমারে সামরিক শাসনামল থেকেই মুসলমানদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ চলে আসছে। গত দুই দশকে দুই থেকে তিন লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান হয় নিহত অথবা সেদেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। মুসলমানরা সেদেশের নাগরিক নয় এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলে দীর্ঘদিন ধরে তাদের ওপর এ ধরণের জুলুম নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

অথচ বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা গেছে, মিয়ানমারের মুসলমানরা সেদেশে এক হাজারের বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছে এবং তারা সেখানকার স্থানীয় অধিবাসী। যেহেতু সামরিক শাসনামল থেকেই মিয়ানমারে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বৈষম্য চলে আসছে। তাই সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তনের পর মুসলমানদের অবস্থার উন্নতি এবং তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সে আশা পূরণ হয়নি।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, মিয়ানমারে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বৈষম্য অব্যাহত থাকায় এবং সরকারও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় উগ্র বৌদ্ধরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করে তাদেরকে নাগরিক অধিকার দেয়ার জন্য এ পর্যন্ত বহু দেশ মিয়ানমার সরকারকে অনুরোধ করেছে। থেইন সেইন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর গত দুই বছরে হাজার হাজার মুসলমান উগ্র বৌদ্ধদের হাতে নিহত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতায় বৌদ্ধরা মুসলিম বিরোধী গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার মুসলমান নিহত হওয়া ছাড়াও তাদের বহু ঘরবাড়ি ও মসজিদ ধ্বংস ও অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত এক লাখ ৪০ হাজার মুসলমান শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে মিয়ানমারে মুসলমানদের ওপর হত্যা নির্যাতনের বহু ঘটনা প্রকাশিত হলেও এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা প্রতিবাদ জানালেও মিয়ানমার সরকার তাতে কর্ণপাত করছে না এবং মুসলিম বিরোধী শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তবে অনেক দেরিতে হলেও জাতিসংঘ এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে। এ ছাড়া, জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধি সম্প্রতি মিয়ানমার সফর শেষ করে বলেছেন, সেখানে মুসলমানদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং তাদের সঙ্গে যে বৈষম্য চলছে সে ব্যাপারে সরকারের উচিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। তিনি সহিংসতা বন্ধের জন্যও মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানান।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন