আফগানিস্তান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্লেষকদের অভিমত

আফগানিস্তান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্লেষকদের অভিমত

Shia, Sunni, Islam, Quran, Karbala, najaf, kufa, mashad, samera, madina, makka, jannatul baqi, kazmain, ali, Fatima, hasan, hussain, mohammad, imam mahdi, সিফফিন, জামালের যুদ্ধ, নারওয়ানের যুদ্ধ, খলিফা, খেলাফত, ইমামত, আলী, সিদ্দীক, ফারুক, মোর্তযা, বদর, ওহদ, খন্দক, খায়বার, বণী সাকিফা, বণী সায়াদা, সাহাবী , ন্যাটো, মার্কিন, আফগানিস্তান, তালেবান, কাবুল, দুবাই,
আফগানিস্তান সরকার সহিংসতা ও রক্তপাত বন্ধের জন্য নানা রকম পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও সেদেশে সহিংসতার মাত্রা তো কমেইনি বরং গত কয়েকদিনে নিরাপত্তাহীনতা অনেক বেড়েছে।

একদিকে, ন্যাটো ও মার্কিন সেনাদের হাতে নিরীহ মানুষ নিহত হওয়ার প্রতিবাদে হেরাত প্রদেশের জনগণ ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে অন্যদিকে, নিরাপত্তা বাহিনীর ঘাঁটিতে তালেবানের হামলায় ২১জন সরকারি সেনা নিহত হয়েছে। এসব ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়, আফগানিস্তানে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার যে চেষ্টা চালাচ্ছে তাতে এখন পর্যন্ত কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ওই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার নিরাপত্তা বাহিনীকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি তালেবানের সঙ্গেও আলোচনার ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আফগানিস্তানে সহিংসতা অব্যাহত থাকার পেছনে অনেকগুলো কারণ জড়িত। প্রথমত, ন্যাটো ও মার্কিন বাহিনী কাবুলের সঙ্গে সাক্ষরিত বিভিন্ন চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিকতা দেখাচ্ছে না। অর্থাৎ এসব চুক্তি অনুযায়ী বিদেশি সেনারা বেসামরিক মানুষ হত্যা করতে পারবে না।

দ্বিতীয়ত, সরকার শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নিলেও আলোচনার ব্যাপারে তালেবানদের মধ্যে এখনো ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যখনই আলোচনার জন্য সরকার ও তালেবান পক্ষকে উদ্যোগ নিতে দেখা যায়, তখনই তালেবানের কোনো না কোনো প্রভাবশালী নেতা নিহতের ঘটনা ঘটে। আর এর পর পরই প্রতিশোধ হিসেবে তালেবানরাও সরকারি সেনাদের ওপর হামলা চালায়। উদাহরণ স্বরূপ সম্প্রতি কুনার প্রদেশে হামলা চালিয়ে ২১ সরকারি সেনাকে হত্যার কথা উল্লেখ করা যায়। এ থেকে বোঝা যায়, দুবাইয়ে অবস্থিত যেসব তালেবান নেতা সরকারের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের যে চেষ্টা করছে আফগানিস্তানে অবস্থিত তালেবানরা তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে সরকারের গৃহীত শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

তৃতীয়ত, সরকারি সেনাদের ওপর তালেবানের হামলাও সহিংসতা অব্যাহত থাকার অন্যতম কারণ। এ ছাড়া, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগে তালেবানের প্রভাব রয়েছে। কুনার প্রদেশের গভর্নরও সেনা ঘাঁটিতে সশস্ত্র তালেবানদের হামলায় সেনা বাহিনীর কোনো কোনো অংশের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

চতুর্থত, আফগানিস্তানে আত্মঘাতী হামলার কথা উল্লেখ করা যায়। কারণ ধর্মের ভুল ব্যাখ্যার কারণে বেহেশত পাওয়ার আশায় অনেকে আত্মঘাতী হামলা চালাতে উৎসাহিত হচ্ছে। এ কারণে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সচেতন ধর্মীয় নেতারা নিরীহ মানুষ হত্যা ও সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে এ দুদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়ার আহবান জানিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের কোনো কোনো ধর্মীয় স্কুল বা মাদ্রাসা ওহাবিদের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের জনগণকে বিভ্রান্ত করার ক্ষেত্রে তাদের বড় ভূমিকা রয়েছে। পাকিস্তানের সচেতন আলেমদের মতে, যতদিন পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মের ভুল ব্যাখ্যার বিরুদ্ধে এ দু’দেশের আলেমরা ঐক্যবদ্ধ না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে রক্তপাত ও সহিংসতা অব্যাহত থাকবে। এ পরিস্থিতি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তান সরকারকেও বেকায়দায় ফেলেছে।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন