তালেবান ও আফগান সরকারের শান্তি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে
তালেবান ও আফগান সরকারের শান্তি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুন খোয়া প্রদেশের পেশোয়ার শহরে তালেবানদের একজন কমান্ডার নিহত হওয়ার পর আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এ ঘটনাকে সরকারের সঙ্গে তালেবানদের শান্তি আলোচনা বানচাল করার ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন।
আফগান প্রেসিডেন্ট তালেবান কমান্ডার মৌলভি আব্দুর রাকিবকে হত্যার নিন্দা জানিয়ে আবারো তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করতে তার সরকারের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। আফগানিস্তান সরকারের শান্তি আলোচক দল তালেবানের সঙ্গে আলোচনার জন্য দুবাইতে পৌঁছার মাত্র একদিন পর গত সোমবার তালেবান কমান্ডার মৌলভি আব্দুর রাকিবকে হত্যা করা হল। তালেবানদের অন্যতম শীর্ষ নেতা অগাজান মোতাসেম সম্প্রতি দুবাইতে তাদের নেতাদের বৈঠক শেষে বলেছেন, পাকিস্তানের তেহরিকে তালেবানের সঙ্গে দেশটির সরকারের শান্তি আলোচনা শুরু পর আফগানিস্তান সরকারের সঙ্গেও তালেবানদের আলোচনা শুরু হতে পারে। তালেবানদের এ ঘোষণাকে আফগানিস্তান সরকার স্বাগত জানায় এবং গত রবিবার তালেবান নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য আফগান শান্তি পরিষদের সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল দুবাইতে যায়।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে তালেবানদের আগ্রহকে সেদেশে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় নয়া অধ্যায়ের সূচনা করবে মন্তব্য করে বলেছেন, তারাও যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অনেক বিষয়ে সরকার ও তালেবানদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে এবং যখনই সংলাপের কথা বলা হত তখনই তালেবানদের মধ্যে যারা সংলাপের ব্যাপারে আগ্রহী নিহত মৌলভি আব্দুর রাকিব ছিলেন তাদের অন্যতম।
এদিকে, তালেবানের অন্যতম শীর্ষ নেতা আগাযিন মোতাসেম দুবাইতে তালেবান নেতাদের বৈঠকের খবর দিয়েছেন। ওই বৈঠকে পাকিস্তান কোয়েটা পরিষদ নামে তালেবান নেতাদের পরিষদের সদস্যরাও উপস্থিত রয়েছেন। আলোচনার বিষয়ে এদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। আফগানিস্তানের তালেবানরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী হলেও পাকিস্তানের তালেবানরা কারজাই সরকারের সঙ্গে তালেবানদের আলোচনার বিরোধী।
তালেবানদের সঙ্গে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সরকারের আলোচনার পথে অন্যতম বড় বাধা হচ্ছে তালেবানদের মধ্যকার মতবিরোধ। কারণ তালেবানদের একটা অংশ কোনো সরকারের সঙ্গেই আলোচনা চায় না। সম্প্রতি তালেবানদের হাতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর ২৩ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তেহরিকে তালেবানের সঙ্গে পাক সরকারের আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়।
যাইহোক, তালেবান নেতারা আফগান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনাকে সমর্থন জানালেও পাকিস্তানে তালেবান নেতা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ায় ইসলামাবাদের সহযোগিতার ব্যাপারে আফগান কর্মকর্তাদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এ কারণে আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা বহুবার সেদেশের শান্তি প্রক্রিয়ার ব্যাপারে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণের জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছেন। কারণ শান্তি আলোচনায় যেসব তালেবান নেতা অংশ নিচ্ছে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব পাকিস্তান সরকারেরও বলে আফগান কর্মকর্তারা মনে করেন।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন