হজরত ফাতেমা (সা. আ.) এর ফেদাক কার দখলে ছিল?
হজরত ফাতেমা (সা. আ.) এর ফেদাক কার দখলে ছিল?
ইতিহাসে বর্ণিত হয়েছে যে,প্রথম খলিফা যখন খোলাফতের ক্ষমতা অর্জন করেছিলেন তখন ফাতিমাকে বঞ্ছিত ও দখলচ্যুত করে ফদক রাষ্টায়ত্ব করেছিলেন।ঐতিহাসিকগন লিখেছেনঃ “ নিশ্চয়ই,প্রথম খলিফা ফাতিমার কাছ থেকে ফদক কেড়ে নিয়েছেন”( হাদীদ,১৬ খন্ড,পৃঃ২১৯;সামহুদী,৩য় খন্ড,পৃঃ১০০০; হায়তামী,পৃঃ৩২)।
প্রথম খলিফার এহেন কাজে ফাতিমা সোচ্চার হয়ে উঠলেন এবং তিনি প্রতিবাদ করে বললেন, “রাসুল(সাঃ) তাঁর জীবদ্দশায় আমাকে ফদক দান করে গিয়েছিলেন অথচ আপনি তা দখল করে নিয়ে নিয়েছেন।“ এতে প্রথম খলিফা সাক্ষী উপস্থাপন করার জন্য বললেন।ফলে,আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলী (আঃ) ও উম্মে আয়মন ফাতিমার পক্ষে সাক্ষ্য দিলেন ।এখানে উল্লেখ্য যে, উম্মে আয়মন রাসুলের(সাঃ) একজন মুক্তিপ্রাপ্ত দাসী ছিলেন। তিনি উসামা ইবনে জায়েদ ইবনে আল-হারিছাহর মাতা ছিলেন। রাসুল (সাঃ) প্রায়ই বলতেন,“ আমার মাতার ইন্তেকালের পর আয়মন আমার মাতা”। রাসুল(সাঃ) তাঁকে বেহেস্তবাসীর একজন বলে আখ্যায়িত করে ছিলেন। (নায়সাবুরী,৪র্থ খন্ড,পৃঃ৬৩;তাবারী,৩য় খন্ড,পৃঃ৩৪৬০;বার,৪র্থ খন্ড,পৃঃ১৭৯৩;আছির,৫ম খন্ড,পৃঃ৫৬৭;সাদ,৮ম খন্ড,পৃঃ১৯২;হাজর,৪র্থ খন্ড,পৃঃ৪৩২)।
ফাতিমা প্রথম খলিফাকে বলেছিলেন,আল্লাহর রাসুল ফদক আলাদা করে আমাকে দিয়েছিলেন।সুতরাং আপনি আমাকে তা ফেরত দিন।এতে প্রথম খলিফা তাঁকে বললেন তিনি যেন উম্মে আয়মন ছাড়া আরো ১জন সাক্ষী হাজির করেন। প্রথম খলিফা আরো বললেন,হে রাসুলের কন্যা,আপনি জানেন যে, ২জন পুরুষ বা ১জন পুরুষ ও ২জন মহিলা ছাড়া সাক্ষ্য গ্রহনীয় হয় না। এসব ঘটনার পর একথা অস্বীকার করার উপায় থাকে না যে,ফদক রাসুলের(সাঃ) ব্যক্তিগত সম্পদ ছিল এবং তাঁর জীবদ্দশায় তিনি এর দখল ফাতিমার হাতে তুলে দিয়ে তাঁকে তা দান করেছিলেন। কিন্তু প্রথম খলিফা তা বেদখল করে ফদক নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি আলী ও উম্মে আয়মনের সাক্ষী বাতিল করেছিলেন।এ বাতিলের ক্ষেত্র হিসাবে তিনি উল্লেখ করলেন যে,১জন পুরুষ ও ১জন মহিলার সাক্ষ্য পরিপুর্ন হয় না। এছাড়াও ইমাম হাসান (আ.) ও ইমাম হুসাইন (আ.) ফাতিমা (সা.আি.) এর বক্তব্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। কিন্তু পিতামাতার পক্ষে সন্তানের সাক্ষ্য গ্রহনযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করে প্রথম খলিফা তা বাতিল করে দিয়েছিলেন। তারপর রাসুলের (সাঃ) গোলাম রাবাহকে সাক্ষী হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল,কিন্তু তাকেও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।( বালাজুরী,১ম খন্ড,পৃঃ৩৫;ইয়াকুবী,৩য় খন্ড,পৃঃ১৯৫;মাসুদী,৩য় খন্ড, পৃঃ২৩৭;আশকারী,পৃঃ২০৯;সামহুদী,৩য় খন্ড,পৃঃ৯৯৯-১০০১;হামাবি,৪র্থ খন্ড,পৃঃ২৩৯;হাদীদ,১৬শ খন্ড,পৃঃ২১৬-২২০;হাজম,৬ষ্ট খন্ড,পৃঃ৫০৭; শাফী,৩য় খন্ড,পৃঃ৩৬১;রাজী,২৯তম খন্ড,পৃঃ২৮৪)।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন