সিরিয়া বিষয়ক সম্মেলন কোনো অগ্রগতি নেই

সিরিয়া বিষয়ক সম্মেলন কোনো অগ্রগতি নেই

সিরিয়া, সুইজারল্যান্ড, মন্ট্রিক্স, মার্কিন, ওয়ালিদ, তেহরান, মামা বাড়ির আবদার
সুইজারল্যান্ডের মন্ট্রিক্সে সিরিয়া বিষয়ক কথিত আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের প্রথম দিন কোনো ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছে। ইরানের অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলন কোনোপক্ষ তার অবস্থান থেকে সরে আসার বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখায়নি।

বুধবার প্রথম দিনের বৈঠকের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পক্ষ ও বিপক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। এ কারণে এ সম্মেলন থেকে কোনো ইতিবাচক ফলাফল এখন আর কেউই আশা করছে না। তবে আয়োজকরা এখন একথা বলে বিশ্ববাসীকে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছেন যে, সিরিয়ার সংঘর্ষরত দু’পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসানোই (!) ছিল তাদের বড় সাফল্য।

বুধবারের বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা তাদের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য রাখেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন আলোচনার টেবিলে বসে সিরিয়ার সরকার ও বিরোধীদেরকে সংকট সমাধানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “যথেষ্ট হয়েছে। এবার আলোচনায় বসুন।”

কিন্তু সিরিয়ার সরকারি ও বিদ্রোহী প্রতিনিধিদলের বিবৃতিতে কোনো ধরনের ছাড় দেয়ার মানসিকতা লক্ষ্য করা যায়নি। সিরিয়ার সরকারি প্রতিনিধিদলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্তদের সঙ্গে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে কোনো আলোচনাই হতে পারে না। অন্যদিকে বিরোধীদের প্রতিনিধিদল প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদকে ক্ষমতা ত্যাগ করে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

কিন্তু সিরিয়ার তথ্যমন্ত্রী ওমরান আল-যোবি সম্মেলনের অবকাশে বলেছেন, “আসাদ ক্ষমতা ত্যাগ করবেন না।” পাশাপাশি সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ আল-মুয়াল্লেম বলেছেন, “বিরোধীরা নিজেদেরকে সিরিয়ার জনগণের প্রতিনিধি বলে দাবি করছে। আপনারা যদি জনপ্রতিনিধি হয়ে থাকেন তাহলে বিদেশিদের কাছ থেকে গ্রহণ করা অস্ত্র দিয়ে কেনো জনগণকেই হত্যা করছেন?”

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির বক্তব্যের কঠোর জবাব দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের কেউই একটি দেশের প্রেসিডেন্টের বৈধতাকে প্রশ্নের মুখোমুখি করতে পারে না, একমাত্র সিরিয়ার জনগণই তাদের দেশের ভাগ্য নির্ধারণের অধিকার রাখে। কেরি তার বক্তব্যে দাবি করেছিলেন, সিরিয়ার আগামী অন্তর্বর্তী সরকারে প্রেসিডেন্ট আসাদের স্থান হবে না।

ওয়ালিদ আল-মুয়াল্লেম বলেন, সিরিয়াকে গণতন্ত্র শেখাতে চায় এমন এক দল সরকার যারা সন্ত্রাসীদের সমর্থন দিচ্ছে এবং নির্লজ্জ এইসব সরকার অজ্ঞতার যুগে বাস করছে। তিনি বলেন, এইসব সরকার সন্ত্রাসবাদ ও হত্যার সাজ-সরঞ্জাম রপ্তানি করছে এবং তারা এমনভাবে এসব কাজ করছে মনে হয় যেন আল্লাহ তাদেরকে এ সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার দিয়েছেন যে কাদের হত্যা করতে হবে ও কাদেরকে সাহায্য করতে হবে। মুয়াল্লিম সিরিয়ার আসাদ বিরোধী গ্রুপগুলোকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ ও ‘বিদেশীদের দালাল’ বলেও অভিহিত করেন। তিনি বলেন, জেনেভা-২ সম্মেলনে খুনিদের উপস্থিতিতে আমরা মর্মাহত।

অন্যদিকে সিরিয়ার প্রধান বিরোধী গ্রুপ সিরিয়ান ন্যাশনাল কোয়ালিশনের প্রধান আহমান জাবরা বলেন, প্রেসিডেন্ট আসাদকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্ত করতে হবে। ওয়ালিদ আল-মুয়াল্লেম এ দাবিকে ‘মামা বাড়ির আবদার’ বলে মন্তব্য করেছেন।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন