কেন সিরিয়ার ধ্বংস চায় ইসরাইল, আমেরিকা ও ব্রিটেন?
কেন সিরিয়ার ধ্বংস চায় ইসরাইল, আমেরিকা ও ব্রিটেন?
আমেরিকা, ব্রিটেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও ইউরোপীয় জোট অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক নানা বিষয়ে দামেস্কের স্বাধীনচেতা নীতির কারণেই সিরিয়াকে ধ্বংস ও দেশটির বাশার আসাদ সরকারকে উতখাত করতে চায়।
সিরিয়ার পক্ষে প্রচার-অভিযান ও যুদ্ধ-বিরোধী জনমত গঠনের আন্দোলনে সক্রিয় একজন কর্মী সম্প্রতি এই মত প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে তার এইসব মতামত। সচেতন ও দেশপ্রেমিক সিরিয় এই নাগরিকের স্পষ্ট-ভাষণে সিরিয়া পরিস্থিতির অনেক না-বলা-কথা ও নেপথ্যের নানা কারণ উঠে এসেছে যা সত্য-সন্ধানী বিশ্লেষকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ওই সিরিয় নাগরিক নিজেকে দেশপ্রেমিক, পাশ্চাত্যের কথিত নতুন বিশ্ব-ব্যবস্থা, ইহুদিবাদ ও নব্য-রক্ষণশীলতার বিরোধী বলে দাবি করেছেন।
তার মতে সিরিয়ার ওপর আমেরিকা, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও সাম্রাজ্যবাদী পশ্চিমা শক্তিগুলোর ক্ষিপ্ত হওয়ার ৮টি প্রধান বা আসল কারণ হল: সিরিয়ার ব্যাংকিং ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইহুদিবাদী ধনকুবের তথা রথসচাইল্ডদের নিয়ন্ত্রিত নয়, সাম্রাজ্যবাদীদের মহাজনী সংস্থা আইএমএফ বা আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের কাছে সিরিয়ার কোনো দেনা নেই, দেশটিতে জেনিটিক উপায়ে রূপান্তরিত খাদ্য সামগ্রী না থাকা, পশ্চিমাদের কর্তৃত্বের আওতামুক্ত তেল ও গ্যাস সম্পদ থাকা, ফ্রিমেশনারির মত গুপ্ত বা গোপন দলের বিরোধিতা, ইহুদিবাদের বিরোধিতা এবং ধর্ম বিষয়ে সহনশীলতা ও জাতীয়তাবাদী আদর্শ।
আর্জেন্টিনার বিশিষ্ট গবেষক ও বিশ্লেষক আদ্রিয়ান সালবুশি (Adrian Salbuchi) মনে করেন কেবল সিরিয়া নয় যে কোনো স্বাধীনচেতা দেশ বা সরকারের ওপর এইসব কারণেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো ক্ষিপ্ত হয়ে থাকে এবং স্বাভাবিকভাবেই সিরিয়ার দেশপ্রেমিক ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আসাদ সরকারও তার ব্যতিক্রম নয়। আদ্রিয়ান সালবুশি সিরিয়ার চলমান সংকটের মধ্যেই সেদেশে বসবাসকারী ওই সিরিয় নাগরিকের এ সংক্রান্ত বক্তব্যকে বিন্যস্ত করে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন।
ওই প্রবন্ধের আলোকে সিরিয়ার ওপর আমেরিকা, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও সাম্রাজ্যবাদী পশ্চিমা শক্তিগুলোর ক্ষিপ্ত হওয়ার ৮টি প্রধান বা আসল কারণগুলোর ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণের প্রধান অংশ এখানে তুলে ধরা হল:
প্রথমত: সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত এবং এর ওপর রথসচাইল্ডের নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক ব্যাংকারদের নিয়ন্ত্রণ নেই। অন্য কথায় সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশটির জনগণের সেবায় নিবেদিত এবং সিরিয় জনগণের প্রকৃত চাহিদা, শ্রম, উতপাদন ও স্বার্থের আলোকে এর মুদ্রা বা নোট ইস্যুসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
নিউইয়র্ক, লন্ডন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, তেল-আবিব, বাসেল ও প্যারিস-কেন্দ্রীক রথচাইল্ডের ব্যাংকাররা নানা দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাতে কৃত্রিমভাবে ওইসব দেশের মুদ্রা বা নোটের পরিমাণ কিংবা মূল্য সীমিত করা যায়। এ ধরনের প্রচেষ্টার ফলে প্রকৃত অর্থনৈতিক চাহিদা মেটানোর কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। অথচ প্রকৃত অর্থনীতিতে সুদবিহীন ঋণ দরকার হয় নানা কল্যাণকর কাজের জন্য। যেমন, বিদ্যুত স্থাপনা, রাস্তা, গ্যাস প্রকল্প, আবাসন, প্রাইভেট সংস্থা ইত্যাদি। কৃত্রিমভাবে নোটের মূল্য বা মুদ্রা নিয়ন্ত্রণের ফলে এইসব জরুরি কাজের জন্য উচ্চ হারের সুদের জালে আটকা পড়ছে বিশ্বের দেশগুলো। আর একবার সুদের ফাঁদে পা দিয়ে বহু বছর ধরে বা দশকের পর দশক ধরে দেশগুলোকে চক্র-বৃদ্ধি সুদের মাশুল গুণতে হচ্ছে। (পশ্চিমা দেশগুলোর ঋণ-সংকটেও সম্ভবত এ ধরনের কৃত্রিম সংকটের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।)
স্বাধীন সার্বভৌম কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর পাবলিক মুদ্রা বা নোট ইস্যুর পরিমাণ সম্পর্কে বিকৃত তথ্য পরিবেশনের ফলে দেশগুলো ইহুদিবাদী রথসচাইল্ড, রকফেলার, ওয়ারবার্গ, গোল্ডম্যান স্যাশস, এইচএসবিসি, সিটিকর্প, জেপি মরগ্যান চ্যাজ প্রভৃতি ব্যাংকের প্রাইভেট মুদ্রা ঋণ নিতে বাধ্য হয়। এই ব্যাংকগুলো একচেটিয়া কারবার করে এবং তাদের সুদের হার খুবই চড়া। এইসব শোষক ও পরজীবী ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক কারণেই তাদের অবাধ্য ও স্বাধীন সিরিয়ার বিলুপ্তি কামনা করবে।
দ্বিতীয়ত: আইএমএফ বা আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের কাছে সিরিয়ার কোনো ঋণ নেই। সিরিয়ার সরকার এটা জানে যে এই তহবিল নিয়ন্ত্রিত হয় বৈশ্বিক মেগা-ব্যাংকারদের মাধ্যমে এবং এই সংস্থাটি তার সদস্য দেশগুলোর অডিটর ও ঋণ-সংগ্রহকারী পুলিশ হিসেবে কাজ করে। যখনই এ সংস্থার কোনো দুর্বল সদস্য কথিত সার্বভৌম ঋণ-সংকটের শিকার হয় বা অন্য কথায় যখন কোনো দেশ তাদের বাস্তব অর্থনীতি (তথা জনগণের শ্রম, কাজ, প্রচেষ্টা থেকে উদ্ভূত অর্থনীতি) থেকে যথেষ্ট অর্থের যোগান পায় না তখন আইএমএফ দেশটিকে পরজীবী বা শোষক বিশ্ব-ব্যাংকারদের হাতে তুলে দেয়। আসলে আইএমএফ-এর মূল কাজ হল বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর হর্তা-কর্তাদের শুল্ক বা কর-অফিসের কাজ করা। আইএমএফ-এর অভ্যন্তরীণ আয় সার্ভিস বা আইআরএস জনগণের ওপর সরাসরি করারোপ করে না কিন্তু এ কাজটি তারা করছে প্রক্সি বা দালাল সরকারগুলো এবং জাতি-রাষ্ট্রগুলোর শুল্ক দপ্তরগুলোর মাধ্যমে।
এটা এখন সবার কাছেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে গ্রিস, সাইপ্রাস, আয়ারল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, স্পেন, ইতালি, ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পর্তুগাল ও ফ্রান্সের কথিত ঋণ-সংকটের মূল কারণগুলো কী? এ যেন বৈশ্বিক দাস-প্রথারই পরিকল্পিত রূপ। মুসলিম দেশগুলো সুদ-প্রথাকে অনৈতিক বলে মনে করে। ইরান ও সিরিয়ার ওপর এ কারণেই পরজীবী ব্যাংকাররা ক্ষুব্ধ এবং তারা এ দুটি দেশের ধ্বংস কামনা করছে।
তৃতীয়ত: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ জেনিটিকভাবে পরিবর্তিত বীজ (জিএমও) নিষিদ্ধ করেছেন। কারণ তিনি জানেন ‘মনসান্টো’ বিশ্বের সব খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে এবং ভবিষ্যতের সংকট কেবল তেলের মধ্যে সীমিত থাকবে না, বিশ্বের দেশগুলো জনগণের টেবিলে কতটা খাদ্য রাখতে পারবে তা নিয়েও সংকট দেখা দেবে। এ কারণেই আমেরিকা ইরাকে হামলার পর এ নির্দেশ দিয়েছিল যে কেবল মনসান্টোর বীজই ব্যবহার করতে হবে! বিশ্বের বহু দেশের সেবাদাস সরকার মনসান্টোর দাবির কাছে নতজানু হয়ে স্বদেশের জমিতে বিষ বুনছে। তাই মনসান্টো তার অবাধ্য সিরিয়ার ধ্বংস কামনা করতেই পারে।
চতুর্থত: সিরিয়ার জনগণ কথিত নয়া-বিশ্ব-ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতন। সিরিয়ার গণমাধ্যম ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নানা বিষয়ের ওপর বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের প্রভাব সম্পর্কে প্রকাশ্যেই বিতর্কের আয়োজন করে থাকে। তাই তারা এটা খুব ভালভাবেই জানে যে, পাশ্চাত্যে ক্ষমতার মূল কেন্দ্রগুলো হোয়াইট হাউজ, দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট, কংগ্রেস বা সংসদ নয় বরং এলিট থিংক-ট্যাংকের জটিল ও ক্ষমতাধর নেটওয়ার্কই হচ্ছে মূল ক্ষমতার মালিক। এইসব কেন্দ্রের নেতৃত্ব দেয় নিউইয়র্কের কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস, বিল্ডারবার্গ কনফারেন্স, ট্রাইলেটারাল কমিশন, আমেরিকাস সোসাইটি, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, লন্ডনের রয়েল ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স। এইসব কেন্দ্র বিশ্বের মেগা-ব্যাংকার, মিডিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী, বহুজাতিক কোম্পানি ও কর্পোরেট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে থাকে।
সিরিয়ার নাগরিকরা ফ্রিমেশনারি কিংবা ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কাল এন্ড বোন লজ’-এর মত গোপন সমিতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলছে। অথচ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিও বুশ, বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির মত শীর্ষস্থানীয় নেতারা হলেন এইসব গোপন সমিতির সদস্য। আর তাই সিরিয়াকে ধ্বংসের জন্য তাদেরই ফুট-ফরমায়েশ খাটা বালক বা কর্মচারী ওবামাকে নির্দেশ তারা দিতেই পারেন।
পঞ্চমত: সিরিয়ার রয়েছে বিপুল তেল ও গ্যাসের রিজার্ভ। পাশ্চাত্য সব সময়ই যুদ্ধে যায় কথিত স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলে। কিন্তু বাস্তবে তেলের গন্ধই তাদের মাতাল করেছিল ইরাক, লিবিয়া, কুয়েত, ফকল্যান্ড ও আফগানিস্তানে। সিরিয়ার সাগর-তলায় ও ভূভাগে রয়েছে গ্যাস আর তেলের বহু খনি। দেশটি ইরানের সহায়তা নিয়ে নির্মাণ করছে তেল-গ্যাসের বিশাল পাইপ-লাইন। অথচ এসব কাজের ওপর পশ্চিমা তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। অথচ ব্রিটেন ও আমেরিকা বিশ্বের সবগুলো তেল-খনি থেকে তেলের উতপাদনকে পুরোপুরি সামরিকীকরণ করতে চায় এবং নির্বিঘ্নে নিজ ঘরে তেল নিয়ে আসতে তেল পরিবহনের রূটগুলোকেও সামরিকীকরণ করা অন্যতম প্রধান ও চলমান ইঙ্গ-মার্কিন যৌথ কৌশল।
তাই এটা খুবই স্বাভাবিক যে ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম, এক্সোন, রয়েল ডাচ শেল, টেক্সাকো, রেপসল এবং শেভরন কোম্পানিগুলো সিরিয়াকে ধ্বংস করতে চায়।
ষষ্ঠত: সিরিয়া স্পষ্টভাবে ইহুদিবাদ ও ইসরাইলের বিরোধী। ইহুদিবাদী ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বর্ণবাদী আচরণ করছে। সিরিয়ার সরকারি নেতৃবৃন্দ কোনো ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়াই ইসরাইলকে বর্ণবাদী, সাম্রাজ্যবাদী, গণহত্যাকারী শক্তি, ফিলিস্তিনের চারপাশে ঘৃণার দেয়াল নির্মাণকারী বলে উল্লেখ করেন। ইসরাইলই প্রকৃত হলোকাস্ট চালাচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞসহ নানা ধরনের নিপীড়ন চালিয়ে। এমনকি ফিলিস্তিনি শরণার্থী ও বন্দিদের ওপর যখন তখন হত্যাযজ্ঞ ও নিপীড়ন চালাচ্ছে। এ ধরনের ভূ-রাজনৈতিক বিষয় ইরান ছাড়াও চীন, রাশিয়া ও ভারতের কাছে স্পষ্ট। তাই আমেরিকান-ইসরাইলি পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি বা আইপাক, বিশ্ব ইহুদি কংগ্রেস, এডিএল বা এন্টি ডিফেমেশন লিগ, (ইসরাইলের রাজনৈতিক দল) লিকুদ, কাদিমা এবং ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও প্রেসিডেন্ট লিবারম্যানরা সিরিয়াকে ধ্বংস করতে চাইবেন- এটাই স্বাভাবিক।
সপ্তমত: সিরিয়া ধর্ম বিষয়ে একটি সহনশীল রাষ্ট্র। অন্যদিকে ইহুদিবাদীরা কেবল নিজেদেরকেই ‘বিধাতার মনোনীত বা পছন্দের মানুষ’ বলে মনে করে। বুশের মত পাশ্চাত্যের ইহুদিবাদী-খ্রিস্টানরা এবং সাম্রাজ্যবাদী ক্ষমতাধররা মনে করে ইসরাইলের ‘শ্রেষ্ঠত্ব’ সবাইকেই মেনে নিতে হবে। কিন্তু ইরান ও সিরিয়ার মত কোনো কোনো স্বাধীন দেশ তা মানতে প্রস্তুত নয়।
সিরিয়ায় বহু ধর্মের অনুসারীরা হাজার হাজার বছর ধরে পরস্পর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রেখেছে, যা অন্য অনেক আরব দেশে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইউরোপীয় জোটভুক্ত কোনো দেশে দেখা যায় না। বরং পাশ্চাত্য দিনকে দিন ইসলাম সম্পর্কে আতঙ্ক জোরদার করছে। পাশ্চাত্যে ধর্মীয়, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে নানা মিথ্যা তত্ত্ব বা তথ্যের ভিত্তিতে গড়ে উঠছে নব্য-রক্ষণশীল গোষ্ঠীসহ নানা ধর্মান্ধ গোষ্ঠী। (আলকায়দার মত যেসব দলকে পাশ্চাত্যই সন্ত্রাসী ও ধর্মান্ধ বলে উল্লেখ করে থাকে তারা বা তাদের সমমনা গ্রুপগুলো সিরিয়ায় পাশ্চাত্যের ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের সর্বাত্মক মদদ পাচ্ছে।)
তাই ধর্মীয় বিষয়ে সিরিয়া সরকারের সহনশীলতার কারণে স্বাভাবিকভাবেই দুনিয়ার সব ধর্মান্ধ গোষ্ঠীগুলো এই সরকারের ধ্বংস চায়।
অষ্টমত: সিরিয়া বেশ গর্বের সঙ্গে তার নিজস্ব রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিচিতি রক্ষা করছে। বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদীদের চাপিয়ে দেয়া আদর্শ ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সিরিয় সরকার বেশ সচেতন। পাশ্চাত্যের চাপিয়ে দেয়া মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি মোকাবেলা করতে গিয়ে সিরিয়ার বিপ্লবী যুব সমাজ পশ্চিমা শপিং মল, ফ্যাশন ও পানীয় সম্পর্কে সতর্ক এবং দেশীয় সংস্কৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ পণ্য ব্যবহারকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই কোক, পেপসি, ম্যাকডোনাল্ডস, লেভিস, লডার, প্ল্যানেট হলিউড ও বার্গার কিং-এর মত কোম্পানিগুলো স্বাভাবিকভাবেই সিরিয়ার আসাদ সরকারের পতন চায়।
এটা স্পষ্ট সিরিয়ার আসাদ সরকারের পতনের অর্থ হবে বিশ্বের ওপর নতুন বিশ্ব-ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা সফল হওয়া।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন