কন্যার সন্ধানে সিরিয়ায় নরওয়েজিয়ান এক পিতা

 

কন্যার সন্ধানে সিরিয়ায় নরওয়েজিয়ান এক পিতা


ঘর ছেড়ে পালিয়ে সিরিয় সন্ত্রাসীদের পাশে অবস্থান নেওয়ার তথ্য পেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঐ দুই যুবতির নরওয়েজিয়ান পিতা। তাদেরকে খুঁজে পেতে ঐ ব্যক্তি তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে যান। উদ্দেশ্য এই যে, হয়তবা তাদেরকে বাড়ী ফিরিয়ে আনতে পারবেন। কিন্তু তিনি দেরী করে ফেলেছেন এবং সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তার ১৬ ও ১৯ বছরের দুই কন্যাকে ততক্ষণে মৃত্যু কূপে ঠেলে দিয়েছে।
সৌদি আরবের ‘ইলাফ’ ওয়েব সাইট লিখেছে : হয়তবা কেউ তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে এবং তাদেরকে সাথে করে ফিরিয়ে নিতে পারবেন -এ আশায় নরওয়েজিয়ান ঐ পিতা ভারাক্রান্ত মনে সকলের কাছে তার দুই কন্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে থাকেন। কিন্তু আল-কায়েদার এক শাখা সংগঠনের নিয়ন্ত্রণাধীন তুরস্ক সীমান্তবর্তী সিরিয়ার ‘আ’যায’ অঞ্চলে সক্রিয় ব্যক্তিরা তাকে জানিয়েছে যে, তার প্রদত্ত বর্ণনার সাথে মেলে এমন ২ জন যুবতিকে তারা আলেপ্পোর উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া গাড়ীতে উঠতে দেখেছেন।
ওসলো কর্তৃপক্ষ কয়েকদিন পূর্বে ঘোষণা করেছিল যে, সুমালীয় বংশোদ্ভূত নরওয়েজিয়ান ঐ দুই যুবতিকে খুঁজে বের করার জন্য ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছে। নরওয়ে সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী নরওয়েজিয়ান দুই যুবতি তাকফিরী সন্ত্রাসীদের সাথে যোগদাদের জন্য গোপনে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
নরওয়ে পুলিশ জানিয়েছে যে, তাদের পরিবার গত শুক্রবার তাদের নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পুলিশকে জানিয়েছে। বর্তমানে যে উদ্দেশ্যে তাদের কন্যারা সিরিয়ায় গেছে সে বিষয়ে অত্যন্ত উদ্বেগের মাঝে দিনাতিপাত করছে পরিবারটি। তারা শঙ্কিত যে, হয়তবা এতদিনে তাদের উভয়ই সিরিয়ায় প্রবেশ করতে পেরেছে।
দুই যুবতি তাদের এক আত্মীয়ের নিকট ই-মেইল করে তাদের সফরের কারণ এভাবে লিখেছে যে, ঘরে বসে থেকে সিরিয়ায় যুদ্ধরতদেরকে আর্থিক সহযোগিতা করার দিন শেষ হয়েছে। এ জন্যই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সাহায্যের জন্য সিরিয়ায় যাব এবং নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করবো।
পরিবারের পিতা দৈনিক টেলিগ্রাফকে জানিয়েছে : আমি অত্যন্ত মধ্যপন্থী একটি পরিবারের সদস্য। উগ্রতার কোন নজীর আমাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে এ পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি। আমার কন্যারা উভয়ই সুন্দরী। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম তারা নেই।
সিরিয়ার স্থানীয় কিছু কিছু সক্রিয় ব্যক্তি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, নরওয়েজিয়ান ঐ দুই যুবতি হয়তবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বর্তমানে সিরিয়ায় যুদ্ধরত কিছু কিছু তাকফিরী সন্ত্রাসীর সাথে যোগাযোগ করে তাদের মাধ্যমেই ‘জিহাদি’ মিশনের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে।
আহমাদ নামক সক্রিয় এক ব্যক্তিত্ব এ সম্পর্কে জানিয়েছেন : এ ধরনের ঘটনা অতিতেও ঘটেছে। কেননা যে সকল সশস্ত্র ব্যক্তিরা আল-কায়েদায় যোগ দানের জন্য সিরিয়ায় প্রবেশ করেছে তারা নারীদেরকেও তাদের সংগঠনে যোগদানের জন্য উত্সাহিত করে। কিন্তু তারা নারীদেরকে ফ্রন্ট লাইনে যুদ্ধ করতে দেয় না বরং তাদের জিহাদকে রান্নাঘর, পরিচ্ছন্নতার কাজ এবং কখনও কখনও সশস্ত্র ব্যক্তিদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের মাঝেই সীমাবদ্ধ রাখে।
নরওয়েজিয়ান এ দুই যুবতির পিতা বলেছেন : তার কন্যারা সিরিয়ায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র একবার তাদের সাথে কথা বলতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি ঐ ফোনালাপে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য বারংবার চেষ্টা করলেও তারা জবাবে জানিয়েছে : আব্বাজান! এ বিষয়টি ভুলে যান। কেননা কাঙ্খিত ও প্রতিশ্রুত সময় এসে গেছে।
এরপরও ঐ ব্যক্তি জানিয়েছেন, আমি হাল ছাড়ব না। আমার কন্যাদেরকে ফিরে পেতে এবং তাদেরকে পরিবারের মাঝে ফিরিয়ে নিতে আমি সিরিয়ায় যাব।
সূত্রঃ বার্তা সংস্থা আবনা

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন