লালমণির হাট জেলার বিভিন্ন স্থান সমূহঃ

লালমণির হাট জেলার বিভিন্ন স্থান সমূহঃ

নিদাড়িয়া মসজিদ

কিভাবে যাওয়া যায়:
লালমরনরহাট সদর হতে সিএনজি/ অটোরিক্সা/ বাসে যাতায়াত করা যায়।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
মোগল সুবেদার মনছুর খাঁ ১১৭৬ হিজরীতেমসজিদটির জন্য ১০.৫৬ একর জমি দান করেন এবং মসজিদটি নির্মান করেন। ঐ সময়ের মোতয়াল্লি ছিলেন ইজার মাহমুদ শেখ , বিজার মাহমুদ শেখ, খান মাহমুদ শেখ প্রমূখ। সুবেদার মনছুর খাঁর দাড়ী না থাকায় তার নির্মিত্ত মসজিদটি নিদাড়ীয়া মসজিদ হিসেবে জনগন অবহিত করে আসছে মর্মে জনশ্রূতি রয়েছ। বর্তমানে স্থানীয় জনগন মসজিদটিতে নামাজ আদায় করেন।
অবস্থান:
লালমনিরহাট সদর উপজেলাধীন কিশামত নগরবন্দ মৌজায় অবস্থিত। এর অবস্থান রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক হতে ২ কিমি দক্ষিনে।

তিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আংগরপোতা ছিটমহল
কিভাবে যাওয়া যায়:
লালমনিরহাট জেলা সদর থেকে বাস যোগে পাটগ্রাম উপজেলা হয়ে তিন বিঘা করিডোর যাওয়া যায়।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
লালমনিরহাট জেলাধীন পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ছিটমহল দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা। এ ছিটমহলের সাথে তৎকালীন পাকিস্তানের মূল ভূখন্ডের যোগাযোগের জন্য একটি ‘প্যাসেজ ডোর’ এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, যা বর্তমানে ‘তিন বিঘা করিডোর’ নামে পরিচিত। পাকিস্তান আমল পেরিয়ে বাংলাদেশ আমল পর্যন্ত তিন বিঘা হস্তান্তর প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের অনেক বৈঠক এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহল পাটগ্রাম উপজেলার একটি স্বতন্ত্র ইউনিয়ন ‘দহগ্রাম ইউনিয়ন’ হিসেবে পরিগণিত হয় এবং ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ আগস্ট এখানে ইউনিয়ন পরিষদের শুভ উদ্বোধন ঘটে। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জুন ইজারার মাধ্যমে উক্ত তিন বিঘা বাংলাদেশকে প্রদান করা হয়। তবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১ ঘন্টা পর পর করিডোর দিয়ে বাংলাদেশীদের যাতায়াতের সুযোগ দেয়া হয়। অতঃপর করিডোর দিন- রাত খোলা রাখার জন্য দাবী উথুাপিত হলে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ এপ্রিল থেকে তা সকাল ৬-৩০ মিনিট হতে সন্ধ্যা ৬-৩০ পর্যমত খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০১১ খ্রি. তারিখে ঢাকাতে অনুষ্ঠিত হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে স্বাক্ষরিত চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশীদের যাতায়াতের জন্য তিনবিঘা করিডোর বর্তমানে ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা হচ্ছে।
দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল
সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত বিভাগের মাধ্যমে তৎকালিন পূর্ব পাকিস্থান ও ভারতের মধ্যে ছিটমহলগুলোর উদ্ভব যা পরবর্তীতে বাংলাদেশ ও ভারতে মধ্যে ছিটমহল হিসেবে পরিচিতি পায়। বর্তমানে ভারতের অভ্যমতরে বাংলাদেশের ছিটমহলের সংখ্যা ৫১টি। এগুলোর মধ্যে লালমনিরহাট জেলার সীমামত সংলগ্ণ ৩৩টি এবং কুড়িগ্রাম জেলার সীমামত সংলগ্ণ ১৮টি। আবার বাংলাদেশের অভ্যমতরে ভারতের ছিটমহলের সংখ্যা ১১১টি। এগুলোর মধ্যে লালমনিরহাট জেলায় ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি, কুড়িগ্রামে ১২টি এবং নীলফামারীতে ৪টি। এ ছিটমহলগুলোর মধ্যে লালমনিরহাট জেলাধীন পাটগ্রাম উপজেলার সীমামতবর্তী ভারতের অভ্যমতরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ছিটমহল- দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ব্যাপকভাবে পরিচিত। এ ছিটমহলের সাথে তৎকালীন পাকিসতানের মূল- ভূখন্ডের যোগাযোগের জন্য একটি "প্যাসেজ ডোর'- এর ব্যবসহা হয়েছিল, যা বর্তমানে "তিন বিঘা করিডোর' নামে পরিচিত। পাকিসতান আমল পেরিয়ে বাংলাদেশ আমল পর্যমত তিন বিঘা হসতামতর প্রশেণ প্রধানমমএী ও পররাষ্ট্র সচীব পর্যায়ে অনেক বৈঠক এবং চুত্তিু স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ আমলে ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ মে ইন্দিরা-মুজিব চুত্তিুর পর ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এইচ. এম. এরশাদ এবং ভারতের প্রধানমমএী ইন্দিরা গান্ধির মধ্যে আবারও চুত্তিু স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহল পাটগ্রাম উপজেলার একটি স্বতমএ ইউনিয়ন- "দহগ্রাম ইউনিয়ন' হিসেবে পরিগনিত হয় এবং ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ আগষ্ট এখানে ইউনিয়ন পরিষদের শুভ উদ্বোধন ঘটে। অবশেষে দু'দেশের পররাষ্ট্র পর্যায়ে আবারও এক চুত্তিু স্বাক্ষরিত হওয়ার পর ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জুন ইজারার মাধ্যমে উত্তু তিন বিঘা বাংলাদেশকে প্রদান করা হয়। তবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যমত ১ ঘন্টা পর পর করিডোর দিয়ে বাংলাদেশীদের যাতায়াতের সুযোগ দেয়া হয়। অতঃপর করিডোর দিন- রাত খোলা রাখার জন্য দাবী উথুাপিত হলে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ এপ্রিল থেকে তা সকাল ৬-৩০ মিনিট হতে সন্ধ্যা ৬-৩০ পর্যমত খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০১১ খ্রি. তারিখে ঢাকাতে অনুষ্ঠিত হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে সাক্ষরিত চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশীদের যাতায়াতের জন্য তিনবিঘা করিডোর বর্তমানে ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা হচ্ছে।
অবস্থান:
অবস্থান পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ী ইউনিয়ন ও দহগ্রাম-আংগরপোতা ছিটমহলের মাঝখানে।
তুষভান্ডার জমিদার বাড়ি
কিভাবে যাওয়া যায়:
বাসযোগে লালমনিরহাট সদর হতে কালীগঞ্জ হয়ে তুষভান্ডার জমিদার বাড়ীতে যাওয়া যায়।
তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের উত্তর ঘনেশ্যাম মৌজায় অবস্থিত।মহারাজা প্রাণ নারায়ণের সময় ‘রসিক রায় বিগ্রহ’ নিয়ে ১৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দে তুষভান্ডার জমিদার বংশের আদিপুরুষ মুরারি দেব ঘোষাল ভট্রাচার্য ২৪ পরগনা/ কলিকাতার জয় নগর থেকে কোচবিহার আগমণ করেন এবং উপেঞ্চৌকি ব্যবস্থায় একটি তালুক লাভ করে এখানে বসতি স্থাপন করেন। তৎকালে ধর্মীয় কার্যাদির জন্য উপঞ্চৌকি ব্যবস্থায় ভূমি দান করা হতো। মুরারি দেব ঘোষাল ভট্রাচার্য ব্রাহ্মন হওয়ায় শূদ্র রাজার দান ভোগে আপত্তি উত্থাপন করেন এবং প্রদত্ত সম্পত্তির জন্য খাজনা গ্রহণের আবেদন জানান। মহারাণী অবশেষে খাজনা স্বরূপ ধানের তুষ গ্রহণে সম্মত হন। খাজনা স্বরূপ প্রদানের জন্য তুষ সংগ্রহ করে বর্তমানে জমিদার বাড়ীর পূর্ব পাশে অনতিদূরে স্তুপাকারে রাখা হতো এবং পরে তা কোচবিহার রাজবাড়ীতে প্রেরণ করা হতো। এ তুষ দিয়ে রাজবাড়ীতে বিভিন্ন ধরণের যজ্ঞানুষ্ঠান সম্পাদন করা হতো। জনশ্রুতি মতে, সংগৃহীত তুষের স্তুপের কারণে তৎকালে স্থানটি তুষভান্ডার (তুষের ভান্ডার) হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। ব্রাহ্মন মুরারি দেব ভট্রাচার্যের মাধ্যমে তুষভান্ডার জমিদারীর গোড়াপত্তন ঘটে, আর ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে জমিদার গিরীন্দ্র মোহন রায় চৌধুরীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সুদীর্ঘ চারশত বছরের জমিদারীর সমাপ্তি ঘটে।
অবস্থান:
তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের উত্তর ঘনেশ্যাম মৌজায় অবস্থিত।
কাকিনা জমিদারী বংশ ও জমিদার বাড়ী
কিভাবে যাওয়া যায়:
সড়ক পথ/রেলপথ ঢাকা হতে ৩৬৮ কিঃমিঃ । । ঢাকা থেকে ঢাকা-লালমনিরহাট জাতীয় মহাসড়ক পথে লালমনিরহাট হয়ে পুনরায় লালমনিরহাট হতে বুড়িমারী (পাটগ্রাম উপজেলা) স্থল বন্দরগামী রাস্তায় মহাসড়ক পথে (লালমনরিহাট হতে প্রায় ২১কিঃমিঃ) কাকিনা বাজার বাসস্ট্যান্ড। বাসস্ট্যান্ড হতে ২০০ গজ পশ্চিমে জমিদার বাড়ির ভগ্নাবশেষ অবস্থিত। । । । লালমনিরহাট থেকে লালমনিরহাট- বুড়িমারি মহাসড়ক পথে প্রায় ২১ কিঃমিঃ দূরে জমিদারবাড়ি অবস্থিত। । । । রংপুর হতে লালমনিরহাট হয়ে বুড়িমারি স্থল বন্দরের রাস্তায় ৬৬ কি মি দূরে জমিদারবাড়ি অবস্থিত। । । রেলপথ রেলপথঃ লালমনিরহাট হতে বুড়িমারি রেলপথে কাকিনা রেল স্টেশন নেমে প্রায় ২ কি মি দক্ষিণ দিকে জমিদারবাড়ি অবস্থিত।

বর্তমানের কালীগঞ্জ উপজেলাধীন কাকিনা ইউনিয়নের কাকিনা মৌজায় এক কালে গড়ে উঠেছিল বড় বড় ইমারত বিশিষ্ট জমিদার বাড়ী, যা কালের স্রোতে নিশ্চি হয়ে গেছে। কাকিনা জমিদার বাড়ীর অতীত স্মৃতি ধারণ করে এখন নীরবে দাড়িয়ে রয়েছে শুধুমাত্র- "হাওয়াখানা'।
ইতিহাস বিশ্লেষণে জানা যায়, মহারাজা মোদ নারায়নের সময় কাকিনা ছিল কোচবিহার রাজ্যাধীন একটি চাকলা। তৎকালে কাকিনার চাকলাদার ছিলেন ইন্দ্র নারায়ণ চত্রুবর্তী। ১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে ঘোড়াঘাটের ফৌজদার এবাদত খাঁ মহারাজা মোদ নারায়ণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে কোচ রাজ্যে অভিযান চালানোর সময় রঘু রামের দু'পুত্র রাঘবেন্দ্র নারায়ণ ও রাম নারায়ণ ফৌজদারের পক্ষ অবলম্বন করেন। মোগলদের এ অভিযানে কোচ বাহিনী পরাজিত হলে ইন্দ্র নারায়ণ চত্রুবর্তীকে কাকিনার চাকলাদার পদ থেকে অপাসারণ করা হয় এবং রাঘবেন্দ্র নারায়ণকে পরগনা বাষট্রি ও রাম নারায়ণকে পরগনা কাকিনার চৌধুরী নিযুক্ত করা হয়। এভাবেই ইন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তীর চাকলাদারী শেষ হয়ে কাকিনায় রাম নারায়ণের মাধ্যমে নতুন জমিদারীর সূচনা ঘটে। রাম নারায়ণ চৌধুরীর পিতা রঘু রাম সম্পর্কে যতদূর জানা যায়, চাকলাদার ইন্দ্র নারায়ণ চত্রুবর্তীর সময় তিনি কাকিনা চাকলার একজন সাধারণ কর্মচারী ছিলেন। তবে রঘু রামের পিতা রমা নাথ ১৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দে কোচবিহার মহারাজা প্রাণ নারায়ণের সময় (১৬৩২-৬৫ খ্রিঃ) রাজ দফ্তরে মজুদদারের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে রাম নারায়ণ কাকিনা পরগনার চৌধুরী নিযুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে কাকিনায় যে জমিদারীর সূচনা ঘটেছিল, জমিদার মহেন্দ্ররঞ্জনের সময় তাঁর অপরিণামদর্শী ব্যয় ও বিলাসিতার কারণে তা ধ্বংসের মুখে পতিত হয়। মহাজনদের বকেয়া ও সরকারি রাজস্ব পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর জমিদারী নিলাম হয়ে যায় এবং এর পরিচালনার ভার কোর্ট অব ওয়ার্ডস- এর অধীন চলে যায়। অতঃপর তিনি প্রায় নিঃস্ব অবস্থায় সপরিবারে কাকিনা ত্যাগ করে কার্সিয়াং (দার্জিলিং)- এ চলে যান। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে সেখানেই তাঁর জীবনাবসান ঘটে।
অবস্থান:
কাকিনা বাস স্ট্যান্ড হতে ২০০ গজ পশ্চিমে। কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট
সূত্রঃ ইন্টারনেট

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন