এলার্জিমুক্ত গরুর দুধ উৎপাদনে সফল হলেন বিজ্ঞানীরা
এলার্জিমুক্ত গরুর দুধ উৎপাদনে সফল হলেন বিজ্ঞানীরা
গরুর দুধ অনেক শিশুই খেতে পারে না তীব্র এলার্জি দেখা দেয়ার কারণে। একটি হিসাবে বলা হয়েছে, গড়ে ১.৫ শতাংশ শিশুর গরুর দুধে এলার্জি হয়। গরুর দুধের বেটাল্যাকটোগ্লোবিউন না বিএলজি নামের একটি আমিষ মূলত এ এলার্জি সৃষ্টি করে।
এবার নিউজিল্যান্ডের একদল বিজ্ঞানী গরুর জিনে রদবদল ঘটিয়ে বিএলজিমুক্ত দুধ উতপাদন করতে পেরেছেন। ফলে তারা মনে করছেন, এলার্জির কারণে দুধ পান না করার বিষয়টি হয়ত শিগগিরই কল্পকাহিনীতে পরিণত হবে।
নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনের এজি রিসার্চ সংস্থার গবেষক স্টিফেন ওয়াগনার এবং তার সহযোগীরা এ গবেষণাটি চালান। প্রথমে তারা বিএলজি'র উতপাদন বন্ধ করে দিতে সক্ষম একটি জিন কাঠামো তৈরি করেন। এই জিন কাঠামো কোষের নিউক্লিয়াসে পুরে দেন গবেষক দলটি।
এরপর তারা এ কোষকে সরিয়ে নেন গরুর ডিম্বানুতে। একে নিষিক্ত করা হয় এবং তা গাভীর গর্ভে স্থাপন করেন গবেষক দলটি। গাভীটি নির্দিষ্ট সময় পরে একটি স্বাস্থ্যবান মাদী বাছুর প্রসব করে। তবে বাছুরটির কোনো লেজ ছিল না; যা বিজ্ঞানীদের বেশ কৌতূহলী করে তোলে।
এ বাছুরকে হরমোন দিয়ে দ্রুত দুগ্ধবতী করে তোলা হয়। এ দুধ বিশ্লেষণ করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন গবেষক দল। কারণ দুধে বিএলজি নামের সেই এলার্জি সৃষ্টিকারী উপাদান সত্যিই নেই। এ ছাড়া, গরুর দুধে আর যে সব আমিষ থাকে তার পরিমাণও স্বাভাবিক দুধের তুলনায় বেশি দেখতে পান গবেষকরা।
অবশ্য অতিরিক্ত আমিষের উপস্থিতির কারণে এ দুধ বেশি স্বাস্থ্যকর হবে কিনা সে কথা নিশ্চিত করতে পারেননি গবেষক দলটির প্রধান স্টিফেন ওয়াগনার। তিনি বলেন, বাড়তি আমিষযুক্ত এ দুধ হয়তো ছানা বা পনির বানানোর কাজে লাগবে। সাধারণ দুধের তুলনায় বিএলজিমুক্ত দুধ খেতে আরো মজা কিনা তাও এখনো বলা সম্ভব হয়নি। কারণ আইনে জেনেটিক রদবদল করা দুধ খাওয়া এখনো নিষিদ্ধ।
গবেষক দলটি বলেছেন, বিএলজিমুক্ত গরুর দুধ যে প্রক্রিয়ায় উতপাদন করা গেছে একই পদ্ধতিতে উতপাদন করা যাবে হরমোন বা অ্যান্টিবডিসমৃদ্ধ দুধ। এ জাতীয় দুধ চিকিৎসা য় ব্যবহার করা যাবে। তবে এ ধরণের কোনো পরীক্ষায় নামার আগে আগের বাছুরটিকে আরো ভালভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। বাছুরটি কেনো লেজ ছাড়া জন্মেছে তখন হয়ত সে রহস্যেরও সুরাহা হবে। অবশ্য এতসব পরীক্ষা চালানোর জন্য বাছুরটিকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার সময় দিতে হবে। সে সময়টুকু পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্রঃ ইন্টারনেট
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন