কোরআরনী শিক্ষা-11
কোরআরনী শিক্ষা-11
সুরা বাকারা, আয়াত নং 70-76
قَالُواْ ٱدْعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّن لَّنَا مَا هِىَ إِنَّ ٱلبَقَرَ تَشَابَهَ عَلَيْنَا وَإِنَّآ إِن شَآءَ ٱللَّهُ لَمُهْتَدُونَ ﴿٧٠﴾
(৭০) তারা বলল, 'গাভীটি সাদৃশ্যের কারণে আমাদের নিকট অস্পষ্ট (যেহেতু এরূপ বহু গাভী আছে), তাই তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট (আরও) প্রার্থনা কর, যেন তিনি বলে দেন তা কেমন হবে। আল্লাহ যদি চান তবে আমরা অবশ্যই সত্যপথ পাব।
- রাজআতঃ বনি ইসরাইলের ঐ ব্যক্তি পুনরায় জীবিত হয়েছিল।
- তাওয়াসসুলঃ ইউসুল (আ.)-এর জামা ইয়াকুব (আ.)-এর চোখের সাথে স্পর্শ করানোর সাথে সাথে চোখ ভাল হয়ে গিয়েছিল اذْهَبُوا بِقَميصي هذا فَأَلْقُوهُ عَلى وَجْهِ أَبي يَأْتِ بَصيراً
- فَلَمَّا أَنْ جاءَ الْبَشيرُ أَلْقاهُ عَلى وَجْهِهِ فَارْتَدَّ بَصيرا
قَالَ إِنَّهُ يَقُولُ إِنَّهَا بَقَرَةٌ لاَّ ذَلُولٌ تُثِيرُ ٱلأَرْضَ وَلاَ تَسْقِى ٱلْحَرْثَ مُسَلَّمَةٌ لاَّ شِيَةَ فِيهَا قَالُواْ ٱلآنَ جِئْتَ بِٱلْحَقِّ فَذَبَحُوهَا وَمَا كَادُواْ يَفْعَلُونَ ﴿٧١﴾
(৭১) সে (মূসা) বলল, 'তিনি বলছেন, গাভীটি এমনই হবে- না তা এতটা বশীভূত যে, ভূমিকর্ষণ করে, আর না এতে পানি সিঞ্চন করে, সুস্থ, চমকদার রং বিশিষ্ট যাতে কোন ছোপও থাকবে না।' তারা বলল, 'এক্ষণে তুমি যথাযথ বর্ণনা করেছ।' বস্তুত তারা তা (গাভীটি) জবাই করল, যদিও তারা তা করতে প্রস্তুত ছিল না।
- আল্লাহর রাস্তায় ভাল বস্তু ব্যায় করতে হবেঃ مُسَلَّمَةٌ
وَإِذْ قَتَلْتُمْ نَفْساً فَٱدَّارَأْتُمْ فِيهَا وَٱللَّهُ مُخْرِجٌ مَّا كُنْتُمْ تَكْتُمُونَ ﴿٧٢﴾
(৭২) এবং যখন তোমরা একজনকে হত্যা করেছিলে এবং তার (ঘাতকের) ব্যাপারে তোমরা মতভেদ করছিলে, অথচ তোমরা যা গোপন করছিলে আল্লাহ তার প্রকাশকারী ছিলেন।
فَقُلْنَا ٱضْرِبُوهُ بِبَعْضِهَا كَذٰلِكَ يُحْيِى ٱللَّهُ ٱلْمَوْتَىٰ وَيُرِيكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ ﴿٧٣﴾
(৭৩) সুতরাং আমরা বললাম, 'এর এক খণ্ড (মাংস) দ্বারা তাকে (নিহতের শরীরে) স্পর্শ কর।' এরূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদের তাঁর (ক্ষমতার) নিদর্শন দেখিয়ে থাকেন, যাতে তোমরা বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ কর।
- এই আয়াত হতে প্রমাণিত হয় যে আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করলে এই জগতেও মৃত্যু ব্যক্তিকে জীবিত করতে পারেন, যাকে রাজআত বলা হয়ে থাকে। كَذٰلِكَ يُحْيِى ٱللَّهُ ٱلْمَوْتَىٰ
- আল্লাহর নিদর্শন দেখার পর বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে। وَيُرِيكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُون
ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُمْ مِّن بَعْدِ ذٰلِكَ فَهِىَ كَٱلْحِجَارَةِ أَوْ أَشَدُّ قَسْوَةً وَإِنَّ مِنَ ٱلْحِجَارَةِ لَمَا يَتَفَجَّرُ مِنْهُ ٱلأَنْهَارُ وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَشَّقَّقُ فَيَخْرُجُ مِنْهُ ٱلْمَآءُ وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَهْبِطُ مِنْ خَشْيَةِ ٱللَّهِ وَمَا ٱللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ ﴿٧٤﴾
(৭৪) তোমাদের হৃদয় এরপর কঠিন হয়ে গেল, যেমন পাষাণ অথবা এর চেয়েও কঠিন, অথচ নিশ্চয় পাথরের মধ্যে কোনটা হতে নদীসমূহ প্রবাহিত হয় এবং নিশ্চয় কোনটায় ফাটল সৃষ্টি হয়ে পানি নির্গত হয়; আবার নিশ্চয় কোনটা আল্লাহর ভয়ে পতিত হয়। বস্তুত তোমরা যা কর, আল্লাহর তা হতে উদাসীন নন।
- কাউরো হৃদয় যদি কঠিন হয় তাহলে এর চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা আর কিছু হতে পারে না। ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُمْ مِّن بَعْدِ ذٰلِكَ فَهِىَ كَٱلْحِجَارَةِ
- যাদের হৃদয় কিঠিন তারা আল্লাহর নির্দশন দেখেও হেদায়াত হয় না।
ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُمْ مِّن بَعْدِ ذٰلِكَ
- মানুষের বিভিন্ন স্তর রয়েছে
كَٱلْحِجَارَةِ أَوْ أَشَدُّ قَسْوَةً
- বস্তু ও প্রাণীরও কিছু অনুধাবণ শক্তি রয়েছে
وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَهْبِطُ مِنْ خَشْيَةِ ٱللَّهِ
أَفَتَطْمَعُونَ أَن يُؤْمِنُواْ لَكُمْ وَقَدْ كَانَ فَرِيقٌ مِّنْهُمْ يَسْمَعُونَ كَلاَمَ ٱللَّهِ ثُمَّ يُحَرِّفُونَهُ مِن بَعْدِ مَا عَقَلُوهُ وَهُمْ يَعْلَمُونَ ﴿٧٥﴾
(৭৫) (হে মুসলমানগণ!) তোমরা কি আশা কর যে, তারা (ইহুদীরা) তোমাদের প্রতি (ধর্মে) বিশ্বাস করবে, যে এক্ষেত্রে তাদের পূর্ববর্তীদের একটি দল আল্লাহর বাণী শ্রবণ করত এবং উত্তমরূপে হৃদয়ঙ্গম করার পর তা রদবদল করে দিত, অথচ তারা অবহিত ছিল।
- সকলে যে ইমান আনবে এমনটি নয় বরং অনেকেই হৃদয়ঙ্গম করার পরও ইমান আনবে না। أَفَتَطْمَعُونَ أَن يُؤْمِنُواْ لَكُمْ
- শিক্ষিত লোকেরা যদি বিপথগামী হয় তাহলে তা অত্যন্ত ভয়ানক। وَقَدْ كَانَ فَرِيقٌ مِّنْهُمْ يَسْمَعُونَ كَلاَمَ ٱللَّهِ ثُمَّ يُحَرِّفُونَهُ
- জেনে শুনে সত্য গ্রহণ না করলে তার অপরাধের বোঝা আরো বেশি ভারি। «يُحَرِّفُونَهُ مِنْ بَعْدِ ما عَقَلُوهُ وَ هُمْ يَعْلَمُونَ»
وَإِذَا لَقُواْ ٱلَّذِينَ آمَنُواْ قَالُوۤاْ آمَنَّا وَإِذَا خَلاَ بَعْضُهُمْ إِلَىٰ بَعْضٍ قَالُوۤاْ أَتُحَدِّثُونَهُم بِمَا فَتَحَ ٱللَّهُ عَلَيْكُمْ لِيُحَآجُّوكُم بِهِ عِنْدَ رَبِّكُمْ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ ﴿٧٦﴾
(৭৬) যখন তারা যারা বিশ্বাস করেছে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন বলে, 'আমরা বিশ্বাস করেছি' এবং যখন তারা নিভৃতে একে অপরের সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন বলে, 'আল্লাহ তোমাদের কাছে যা (তাওরাতে) প্রকাশ করেছেন তা কি তোমরা (মুসলমানদের) বলে দেবে? যার ফলে তারা (কাল) তোমাদের প্রতিপালকের কাছে তোমাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ নিয়ে আসবে। তোমরা কি (এতটুকু) বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ কর না?'
- সত্যকে অনুধান করার পর তা গ্রহণ করা উচিত। «قالُوا أَ تُحَدِّثُونَهُمْ بِما»
- বিপথগামী লোকরা নিজের স্বার্থ বজায় রাখার কারণে সত্যকে গ্রহণ করে না।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন