ইমাম হুসাইনের (আঃ) প্রতি ক্রন্দন

ইমাম হুসাইনের (আঃ) প্রতি ক্রন্দন

ইমাম হুসাইনের (আঃ) প্রতি ক্রন্দন
শেখ সাদুক থেকে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েত যাতে তিনি ৪০০টি বিষয় সম্পর্কে বলেছেন যা দুনিয়া এবং আখেরাতে মুসলমানদের প্রয়োজন হয়।

ِ كُلُّ عَيْنٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بَاكِيَةٌ وَ كُلُّ عَيْنٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ سَاهِرَةٌ إِلَّا عَيْنَ مَنِ اخْتَصَّهُ اللَّهُ‏ بِكَرَامَتِهِ‏ وَ بَكَى عَلَى مَا يُنْتَهَكُ مِنَ الْحُسَيْنِ وَ آلِ مُحَمَّدٍ ع‏

কেয়ামতের দিন হচ্ছে এমন এক দিন যেদিন সব কিছু প্রকাশিত থাকবে অথাৎ সব সত্য প্রকাশিত হবে।
সেদিন সবাই নিজ নিজ আমলকে দেখতে পাবে।
কেয়ামতের দিন হচ্ছে অনুশোচনার দিন কেননা সেদিন সবাই অনুশোচনা করবে যারা খারাপ তারা অনুশোচনা করবে কেন তারা ভালা কাজ করেনি আর য়ারা ভাল তারা অনুশোচনা করবে কেন তারা আরো বেশী ভাল কাজ করেনি।
কোন এক নবী বলেন: চেশমে হায়াতের জন্য যা উঠাবে অনুশোচনা করবে আর যারা উঠবে না তারাও অনুশোচনা করবে। যখন তারা তা উঠায় এবং পরে লক্ষ্যে করে দেখে যে,তা ছিল দামী মণি মুক্তা আর যারা উঠায়নি তারা অনুশোচনা করে যে কেন তারা তা উঠায়নি।

ٍ كُلُّ امْرِئٍ بِما كَسَبَ رَهين
প্রত্যেক ব্যাক্তি তার কৃত কর্মের জন্য দায়ী (সূরা তুর আয়াত নং ২১)
ইমাম হুসাইনের জন্য ক্রন্দন করলে আমরা কি পাব?
যদি আমরা ক্রন্দন করি তাহলে আমাদের গুনাহ মাফ হয়। আর যদি গুনাহ করি তাহলে আমাদের বুদ্ধি কমে যায়। কিন্তু এই ক্রন্দনের কারণে আমাদের ঐ বুদ্ধি যা লুপ্ত হচ্ছিল তা পুণরায় আমরা ফিরে পাই।
ক্রন্দন মাসুমদের সীরাতে:
১-আম্বিয়াদের  ক্রন্দন ইমাম হুসাইনের জন্য ।
২-আহলে বাইতের  ক্রন্দন ইমাম হুসাইনের জন্য।
৩- আযাদারদের ক্রন্দন ইমাম হুসাইনের জন্য।
ক্রন্দন হচ্ছে প্রবাহিত পানির ন্যায় যা সব কিছুকে ধৌত করে। ক্রন্দন হচ্ছে পবিত্র অন্তরের চিহ্ন।
প্রশ্ন হতে পারে কেন ক্রন্দন করছ? পালটা প্রশ্ন হতে পারে কেন ক্রন্দন করবো না?
কারবালায় যা ঘটেছিল তা যদি কেউ শ্রবণ করে তাহলে সে অবশ্যই ক্রন্দন করবে।
কারবালা হচ্ছে নাজাতের তরী এবং এমন এক পবিত্র স্থান,এমন এক ঘটনা যা শ্রবণে মানুষের অন্তরকে নরম ও পবিত্র করে দেয়।
একদা ইবনে শাবিব ইমাম রেযা (আ.) এর কাছে আসলে তিনি তাকে বলেন: হে ইবনে শাবিব তুমি কি রোযা আছ? তিনি বলেন না। ইমাম (আ.) তাকে বলেন আজ হচ্ছে সেই দিন যেদিন হযরত যাকারিয়া (আ.) এর দোয়া কবুল হয়।তিনি আরো বলেন: হে ইবনে শাবিব মহরম এমন এক মাস যে মাসে আরবের অজ্ঞ লোকেরাও যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতো না । কিন্তু রাসুলের (সা.) উম্মতেরা তার নাতী ও তার আহলে বাইতকে (আ.) হত্যা করে এবং তাদের নারীরেকে বন্দি করে এবং তাদের মাল লুন্ঠন করে। তাদের এই কাজকে কখনই ক্ষমা করা হবে না। তুমি যদি ক্রন্দন করতে চাও তাহলে হুসাইন ইবিনে আলী ইবনে আবি তালিবের জন্য ক্রন্দন কর কেননা তাকে পশুদেরকে জবাই করার ন্যায় জবাই করা হয়েছিল এবং তার পরিবারের মধ্যে থেকে ১৮জনকে শহীদ করা হয় যা দুনিয়ার বুকে এক নজীর বিহিন ঘটনা ছিল ------------
হে শাবিব যদি তুমি খোদার সাথে পবিত্র ও গুনাহ বিহিন অবস্থায় সাক্ষাত করতে চাও তাহলে ইমাম হুসাইনের (আ.) এর যিয়ারতের জন্য যাও। আর যদি তুমি পছন্দ কর যে,রাসুল (সা.) এর সাথে বেহেস্তের একই স্থানে থাকতে তাহলে ইমাম হুসাইনের (আ.) হত্যাকারীদের প্রতি লানত প্রেরণ কর----------
আর যদি তুমি চাও আমাদের সাথে বেহেস্তে থাকতে তাহলে আমাদের দুঃখে দুঃখিত হও এবং আমাদের আনন্দে আনন্দিত হও এবং আমাদের বেলায়াতকে মেনে চল কেননা যদি কেউ পাথরকে ভালবাসে তাহলে আল্লাহ তাকে পাথরের সাথে উত্তোলিত করবে। (উয়ুনে আখবারে রেযা, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৬০৬)।
ইমাম জাফর সাদিক (আ.) কে সাফওয়ান নামক এক সাহাবী জিজ্ঞাসা করে যে, হে ইমাম কেন আপনার চেহারা এমন মলিন হয়ে আছে। তখন ইমাম (আ.)তার জবাবে বলেন:হে সাফওয়ান যা আমি শুনতে পাচ্ছি তা যদি তুমিও শুনতে পেতে তাহলে তোমার অবস্থাও আমার মতো হতো অর্থাৎ দুঃখভারাক্রান্ত অবস্থায় থাকতে। তখন সে ইমামকে বলে, আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন? ইমাম বলেন হযরত আলী (আ.)কে শহীদ করার জন্য আমি খোদার কাছে ফেরেস্তাদের জোরালো অভিযোগ এবং হযরত ইমাম হুসাইনের (আ.) জন্য জ্বিনদের নওহা এবং মালায়েকাদের ক্রন্দনের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। (কামেল আযযিয়ারাত, পৃষ্ঠা ৯২)।
তাই আমরা এই মাসটির প্রতি সম্মান প্রদশন করবো এবং ইমাম হুসাইন (আ.) এর প্রতি ক্রন্দন করবো।  সূত্রঃ ইন্টারনেট
 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন