আয়াতুল্লাহ বাহজাত (রহ.) এর ব্যক্তিগত জীবনের না বলা কিছু কথা


আয়াতুল্লাহ বাহজাত (রহ.) এর ব্যক্তিগত জীবনের না বলা কিছু কথা
 হযরত আয়াতুল্লাহ আল উজমা বাহজাত (রহ.) এর আধ্যাত্মিক ও ইলমি ব্যক্তিত্বের উপর আয়োজিত এ স্মরণসভায় তার ঘনিষ্ট ছাত্র হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন রুহী বক্তব্য রাখেন।
মরহুম আয়াতুল্লাহ বাহজাত (রহ.) এর অন্যতম বৈশিষ্ট ছিল আমিত্বকে এড়িয়ে চলা –এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন: ‘নিঃসন্দেহে তিনি ঐ সকল ব্যক্তিদের অন্যতম ছিলেন যারা প্রকৃত অর্থে ‘আবদ’ তথা বান্দা ছিলেন’।
তিনি এ সময় নিম্নের কয়েকটি বিষয়ের প্রতি ইশারা করে বলেন: তার বন্দেগীর কয়েকটি নমুনা যেভাবে তিনি ছিলেন হুবহু উল্লেখ করব:
* আয়াতুল্লাহ বাহজাত (রহ.) বিভিন্ন মৌসুমে ক্লাস নেয়ার সময় দরজার কাছে বসতেন এবং ঠাণ্ডা বা গরম হাওয়া তাকে কষ্ট দিত। তিনি এ কাজের মাধ্যমে ইমাম সাদিক (আ.) এর অনুসরণ করতেন।
* সাধারণত হাওযা ইলমিয়ার (উচ্চতর ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) ক্লাস নেয়ার পদ্ধতি হচ্ছে যে, একটি বিষয় সম্পর্কে প্রথমে অন্যান্য ব্যক্তিত্বদের মতামত বর্ণনা করা হয় অতঃপর ওস্তাদ নিজের মতামত বর্ণনা করেন, পরবর্তীতে হয়তবা প্রমাণিত হয় যে, সেটা তার মতামত ছিল না বরং অন্য কারো মতামত ছিল। কিন্তু আয়াতুল্লাহ বাহজাত (রহ.) কোন আলেম-ওলামা’র নাম না নিয়ে তাদের মতামত উল্লেখ করতেন যাতে ঐ মতামত ব্যক্তকারীর দৃষ্টিভঙ্গীর সমালোচনা করলে তার মর্যাদা ক্ষুন্ন না হয়। অতঃপর তিনি নিজের মতকে এমনভাবে বর্ণনা করতেন যে, মনে হত সেটা তার মত নয়।
* আমি একবারও আয়াতুল্লাহ বাহজাত (রহ.) কে বলতে শুনি নি যে, তিনি বলেছেন, আমি ওমুক কাজটি করেছি। আমার মনে পড়ে যে, একবার তিনি বলেছিলেন: ‘জনাব নাঈনী জ্ঞান ও তাকওয়া এবং আধ্যাত্মিকতার দিক থেকে ছিলেন একজন পূর্ণ ব্যক্তিত্ব। আমি নিজেই তার পেছনে নামায পড়েছি’। জনাব রুহী বলেন: এমন সময় তিনি সম্বিত ফিরে পেলেন এবং হঠাৎ নিজের মুখমণ্ডল ঢেকে ফেলে দ্রুততার সাথে ঐ বিষয়টি বাদ দিয়ে অন্য বিষয়ে আলোচনা শুরু করলেন!
* একদা এক কর্মকর্তা পদে বহাল থাকা অবস্থায়, যখন সে ছিল ক্ষমতার অধিকারী –যে পরবর্তীতে অর্থনৈতিক দূর্নীতির অপরাধে শাস্তির শিকার হয়- সে আয়াতুল্লাহ বাহজাতের সাথে সাক্ষাত করতে আসল। আয়াতুল্লাহ বাহজাত তাকে দেখে বললেন: নিজের ভাল ও মন্দ কাজের জন্য তওবা করুন।
* তাঁর মানাসেক গ্রন্থটি প্রকাশের সময় তাঁর পুত্র ইস্তেখারা দেখার পর এ সিদ্ধান্ত নিলেন যে, ঐ গ্রন্থে লিখবেন: ‘আয়াতুল্লাহ বাহজাত’। তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরে তিনি তার পুত্রের সাথে কঠোর ভাষায় কথা বললেন।
* তিনি ‘ফাতেমিয়াহ’ মসজিদকে নিজের ইবাদতগাহ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তাই একজন মারজা হওয়া সত্ত্বেও এবং বিভিন্ন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেও তিনি মসজিদে আ’যামে নামায পড়ানোর জন্য রাজি হননি।

* তিনি যখন নসিহত করতে চাইতেন বা কোন বিষয় হতে সতর্ক করে দিতে চাইতেন, তিনি কখনই বলতেন না, ‘এ কাজটি করুন বা এ কাজটি করেন না, বরং একটি ঘটনা বলার মাধ্যমে মূল বিষয়টি নসিহত গ্রহণকারী ঐ লোকটিকে বুঝিয়ে দিতেন।
* তিনি কখনই কারো নামকে মন্দভাবে স্মরণ করেননি। আর এটা হচ্ছে আমাদের জন্য শিক্ষা যে, গিবত (পরনিন্দা) ত্যাগ করার মাধ্যমে আমরা মহান আল্লার নিকটবর্তী হতে সক্ষম।
সূত্রঃ ইন্টারনেট

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন