পবিত্র কোরআনে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর সঙ্গীদের বৈশিষ্ট্যসমূহ- ২
পবিত্র কোরআনে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর সঙ্গীদের বৈশিষ্ট্যসমূহ- ২
কোরআন শরিফে ইমামের (আ.)সঙ্গীদের সম্পর্কে একটি আয়াত আছে, যা অত্যন্ত আশাবাদী ও প্রস্তুতকারক। এই আয়াতটিপ্রকৃতপক্ষে সত্যতা ও বাস্তবতাকে আমাদের জন্য বর্ণনা করে, এবং যদি সেগুলিকেদৃঢ়চিত্তে অনুসরণ করা হয় তাহলে পৃথিবী সমস্ত বাধা অতিক্রম করে ইমাম মাহদী (আ.)-কেঅভ্যর্থনা জানানোর জন্য এগিয়ে যাবে।
সুরা মায়েদার ৫৯ নং আয়াতেসরাসরি মুমিনদের উদ্দেশ্য করে বলে: হে মুমিনগণ যদি তোমাদের মধ্যে থেকে কেউ ইসলামধর্মকে ত্যাগ করে ধর্মদ্রোহী হয় তবে আল্লাহ্ তায়ালা ভবিষ্যতে এমন এক দলকে আনবেনযারা নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য সম্বলিত হবে:
১-আল্লাহতায়ালা তাদেরকে পছন্দ করে ও তারও আল্লাহকে পছন্দকরেন।
২-মু’মিনদের বরাবরে তারা নম্র ও অনুগ্রহকারী।
৩-মুশরিকও দুশমনদের বরাবরে শক্তিশালী ও দুর্দমনীয়।
৪-সর্বদাআল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করাতে অব্যাহত থাকে।
৫-কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে কোন কিছুর ভয় পায়না।
এটি আল্লাহর অনুগ্রহ এবংযাকে উপযুক্ত দেখে দিয়ে থাকে, আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত ব্যাপক ও তিনি সমস্ত কিছুরউপর অবহিত।
রেওয়াত সমুহে এই আয়াতসম্পরর্কে বিভিন্ন উপমা দিয়ে বলা হয়েছেযেমন: এই আয়াত ইমাম মাহ্দী (আ.)-এরসঙ্গীদের উপলক্ষে এবং তারা তাদের এই বৈশিষ্টগুলি থাকাতে সমস্ত শক্তি দিয়েধর্মদ্রোহীদের সাথে মুকাবিলা করবে, এবং ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর হুকুমত ও পৃথিবিতেআদালত প্রতিষ্ঠা করার জন্য চেষ্টা করবে।
ইমাম সাদীক (আ.) বলেছেন:ইমাম মাহ্দী (আ.) এই আয়াতের কিরণে এরুপ সতর্ক ও সাহসী সঙ্গীদের পৃষ্ঠপোষক হয়েথাকবে।
প্রথম বৈশিষ্ট্য: এই আয়াতেআল্লাহর প্রতি ইমামের (আ.) সঙ্গীদের ভালবাসার কথা বলা হয়েছে, যারা আল্লাহ ব্যাতীতঅন্য কিছু ভাবেনা, তাদের স্থান এ পর্যায়ে যে আল্লাহ তায়ালাও তাদেরকে ভালবাসে।
এটা পরিস্কার যে এরকমমানসিকতাদৃঢ় ঈমান ও আল্লাহর উপর ভরসা থাকাতে সৃষ্টি হয় এবংএ ঊধর্বগামিতারসবচেয়েবড় কারন হচ্ছে ধর্মানুরাগ ও খোদাভীরুতা যার ভুমিকা অলৌকিক বিজয়ে দেখা যাবে।
দ্বীতিয় বৈশিষ্ট্য: এইআয়াতে মু’মিনদের সাথে ঐক্যতা ও নৈতিক বন্ধনের কথা বলা হয়েছে যার ভুমিকা অগ্রগতিরজন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
তৃতীয় বৈশিষ্ট্য: যে কোনপরিস্থিতিতে হোক না কেন কাফেরদের সাথে মু’মিনরা সমঝোতা করবে না। আর তা উত্তরদক্ষিণের কোন স্থানেই এর পার্থক্য হবে না। আর এর মাধ্যমেই শত্রুদের কু-বাসনা ধবংশযোগ্যে পরিণত হবে।
চতুর্থ বৈশিষ্ট্য: কাফের ওইসলামের দুশমানদের সাথে জিহাদ ও আন্দোলন করা।
পঞ্চম বৈশিষ্ট্য: যা অতিগুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে মু’মিনদের তীক্ষ্ণতা ও মধ্যস্থতা যাতে সৌজন্য বাচাটুকারিতামূলক অমায়িকতা নেই। সর্বসাধারণ ও পরিপার্শ্বিকতার কথা যা বেশিরভাগই ভুলতা থেকে ভয় পায়না এবং দৃঢ় পদক্ষেপের সাথে সঠিক পথে অগ্রসর করে আরএই অগ্রসরের পথরোধ করার লক্ষ্যে বলাঅর্নথক কথাবার্তাগুলি তাদের উপর কোন প্রভাব বিস্তার করেনা।
এ ছাড়াও আয়াতের প্রথমঅংশের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে যেখানে বলা হয়েছে কিছু লোকেরধর্মত্যাগ ও বাইআতভঙ্গন, মুমিনদেরঈমানের প্রতি কোন প্রকার প্রভাব ফেলবে না এবং তাদেরকে চিন্তিতওকরবে না।
এই বৈশিষ্ট্যগুলি যদিও নিজনিজ ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ তবে পঞ্চম বৈশিষ্ট্যটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেমনে হয় কেননা হযরত আবুযার গাফ্ফারি বলেন: হযরত মোহাম্মাদ (সা.) আমাকে আদেশ করেছেনযেন আমি কোন প্রকার অত্যাচারীরহুকমি, অর্থহীন ও আজেবাজে কথা শুনে ভয় না পায়। যখনমহান ব্যাক্তি হির্জ বিন আদী ও তার সঙ্গীসহ মোয়াবিয়ার হুকুমে শহীদ হন,তখন ইমামহোসাইন (আ.) (ইনকিলাবের সর্বশ্রেষ্ট রুপ) প্রতিবাদ জানিয়ে মোয়াবিয়ার কাছে চিঠিলেখেন এবং সেই চিঠিতে বিশেষ করে হিজর বিন আদী ও তার সঙ্গীদের কথা উল্লেখ করে লেখেন:“তুমি যাদেরকে শহীদ করেছো তারা আমর বিল মা’রুফ ও নাহি আজ মুনকার করেছিল, তারা পাপকাজের ফলাফলকে অনেক বড় বলে মনে করত ও(ولايخافونفياللهلومةلائم) অর্থাৎআল্লাহর রাস্তায় ও তার দ্বীন রক্ষার্থে কোন প্রকার বাঁধা-বিপদ ও তিরস্কারীরতিরস্কারের ভয় পায় না”।
পশ্চিমা ও প্রাচ্যের সংবাদসংস্থাগুলির এই অনর্থক কথাসমুহ অনেকের উপর প্রভাব ফেলে, তবে যারা এই পঞ্চমবৈশিষ্ট্যের অধিকারী এ সমস্ত আজেবাজে কথা তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে না বরং তারাআরো অদম্য চেষ্টার সাথে আল্লাহর পথে অগ্রসরীত হয়।
সূত্রঃ ইন্টারনেট
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন