“আরিজা” ও ইমাম মাহদী (আ.)এর সাথে সম্পর্ক স্থাপন

বর্তমানে ইমাম মাহদী (আ.)এর অন্তর্ধানকালীন যুগে ইমাম মাহদী (আ.)এর সাথে বিভিন্ন পন্থা যেমন: দোয়া ও যিয়ারত পাঠের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব এবং নিজের মনোবাসনাকে তাঁর মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে পৌছানো সম্ভব। পন্থাসমূহ নিন্মরূপ: ১. ইমাম মাহদী (আ.)এর সুস্থতা

 “আরিজা” ও ইমাম মাহদী (আ.)এর সাথে সম্পর্ক স্থাপন

এস, এ, এ

বর্তমানে ইমাম মাহদী (আ.)এর অন্তর্ধানকালীন যুগে ইমাম মাহদী (আ.)এর সাথে বিভিন্ন পন্থা যেমন: দোয়া ও যিয়ারত পাঠের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব এবং নিজের মনোবাসনাকে তাঁর মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে পৌছানো সম্ভব। পন্থাসমূহ নিন্মরূপ:

১. ইমাম মাহদী (আ.)এর সুস্থতার জন্য দোয়া (…..اللهم کن لولیک)। (কাফি, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৬২)

২. দোয়া-এ আহাদ পাঠ করা। ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি ৪০ দিন ফজরের নামাজের পরে পাঠ করে তাহলে সে ইমাম মাহদী (আ.)এর সাহায্যকারী হবে। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৫৩, পৃষ্ঠা ৯৫)

৩. যিয়ারত-এ আলে ইয়াসীন পাঠ করা। মাফাতিহুল জিনান নামক গ্রন্থে ইমাম (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি আমাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় তাহলে সে যেন যিয়ারত-এ আলে ইয়াসীন পাঠ করে। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৯৯, পৃষ্ঠা ৮১, অধ্যায় ৭, হাদীস নং ১)

৪. যিয়ারত-এ জামে কবীরা পাঠ করা। (মান লা ইয়াহযারুহুল ফাক্বিহ, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৬০৯, হাদীস নং ৩২১৩)

অনুরূপভাবে আরিজা হচ্ছে ইমাম মাহদী (আ.)এর সাথে তাঁর অনুসারীদের আত্মিক এবং আধ্যাত্মিক সম্পর্ক স্থাপনের আরেকটি নাম। যা অন্তরের জমানো কথাগুলোকে মৌখিক বা লিখিতভাবে ইমাম (আ.)এর সমীপে উপস্থাপন করা। অন্যভাবে বলতে পারি যে, আরিজা লিখা হচ্ছে এক প্রকারের তাওয়াসসুল। সুতরাং তাওয়াসসুল সম্পর্কিত যে রেওয়ায়েতসমূহ বর্ণিত হয়েছে তা আরিজা লিখার ক্ষেত্রেও আমরা ব্যাবহার করতে পারি। আর বিবেক, রেওয়ায়েত এবং সামাজিক ভাবে কোন প্রকারের বাধার সম্মুখিন না হলে তা জায়েজ হওয়ার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই।

আরিজা লিখা সম্পর্কে বিভিন্ন রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে যেমন: মরহুম আল্লমা মাজলিসি (রহ.) তৌহফাতুয যায়ের নামক গ্রন্থে ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) হতে রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি আল্লাহর কাছে কিছু চায় বা কোন আতঙ্কের মধ্যে থাকে তাহলে  সে যেন কাগজে লিখবে:

بسم الله الرحمن الرحیم. انی اتوجه الیک باحب الاسماء الیک و اعظمها لدیک و اتقرب و اتوسل الیک بمن اوجبت حقه علیک بمحمد و علی و فاطمه و الحسن و الحسین و علی بن الحسین و محمد بن علی، و جعفر بن محمد، و موسی بن جعفر، و علی بن موسی و محمد بن علی و علی بن محمد و الحسن بن علی و الحجة المنتظر صلوات الله علیهم اجمعین اکفنی کذا و کذا ...

অতঃপর উক্ত কাগজটিকে প্রবাহিত পানি অথবা কূপের মধ্যে ফেলে দিতে হবে। তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার মনোবাসনাকে পূর্ণ করবেন ইনশাল্লাহ।

ইমাম মাহদী (আ.)এর সমীপে আরিজা লিখা সম্পর্কে মরহুম মোহাদ্দেস নূরী “নাজমুস সাক্বেব” নামক গ্রন্থে কিতাবুস সাআদাত নামক গ্রন্থ থেকে ইমাম মাহদী (আ.)এর সমীপে আরিজাটি বর্ণনা করেছেন।

তবে ইমাম মাহদী (আ.)এর সমীপে প্রসিদ্ধ এ আরিজাটি তাঁর নায়েব হুসাইন বিন রূহ (রহ.)কে উদ্দেশ্যে করে লিখা হয়ে থাকে।

بسْمِ اللَّهِ الرَّحْمنِ الرَّحيمِ

كَتَبْتُ يا مَوْلايَ صَلَواتُ اللَّهِ عَلَيْكَ مُسْتَغيثاً، وَشَكَوْتُ ما نَزَلَ بي مُسْتَجيراً بِاللَّهِ‏عَزَّوَجَلَّ، ثُمَّ بِكَ مِنْ أَمْرٍ قَدْ دَهَمَني، وَأَشْغَلَ قَلْبي، وَأَطالَ فِكْري، وَسَلَبَني بَعْضَ‏لُبّي، وَغَيَّرَ خَطيرَ نِعْمَةِ اللَّهِ عِنْدي، أَسْلَمَني عِنْدَ تَخَيُّلِ وُرُودِهِ الْخَليلُ، وَتَبَرَّأَ مِنّي‏عِنْدَ تَرائي إِقْبالِهِ إِلَيَّ الْحَميمُ، وَعَجَزَتْ عَنْ دِفاعِهِ حيلَتي، وَخانَني في تَحَمُّلِهِ‏صَبْري وَقُوَّتي. فَلَجَأْتُ فيهِ إِلَيْكَ، وَتَوَكَّلْتُ فِي الْمَسْأَلَةِ للَّهِ جَلَّ ثَناؤُهُ عَلَيْهِ وَعَلَيْكَ في دِفاعِهِ‏عَنّي، عِلْماً بِمَكانِكَ مِنَ اللَّهِ رَبِّ الْعالَمينَ، وَلِيِّ التَّدْبيرِ وَمالِكِ الْاُمُورِ، وَاثِقاً بِكَ فِي‏الْمُسارَعَةِ فِي الشَّفاعَةِ إِلَيْهِ جَلَّ ثَناؤُهُ في أَمْري، مُتَيَقِّناً لِإِجابَتِهِ تَبارَكَ وَتَعالى إِيَّاكَ‏ بِإِعْطائي سُؤْلي .وَأَنْتَ يا مَوْلايَ جَديرٌ بِتَحْقيقِ ظَنّي وَتَصْديقِ أَمَلي فيكَ في أَمْرِ كَذا وَكَذا

নিন্মে নিচের চাহিদাগুলোকে লিখতে হবে:

---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

فيما لا طاقَةَ لي بِحَمْلِهِ، وَلا صَبْرَ لي عَلَيْهِ، وَإِنْ كُنْتُ‏مُسْتَحِقّاً لَهُ وَلِأَضْعافِهِ بِقَبيحِ أَفْعالي وَتَفْريطي فِي الْواجِباتِ الَّتي للَّهِ عَزَّوَجَلَّ،فَأَغِثْني يا مَوْلايَ صَلَواتُ اللَّهِ عَلَيْكَ عِنْدَ اللَّهْفِ، وَقَدِّمِ الْمَسْأَلَةَ للَّهِ عَزَّوَجَلَّ في‏أَمْري، قَبْلَ حُلُولِ التَّلَفِ، وَشَماتَةِ الْأَعْداءِ، فَبِكَ بُسِطَتِ النِّعْمَةُ عَلَيَّ.وَاسْأَلِ اللَّهَ جَلَّ جَلالُهُ لي نَصْراً عَزيزاً، وَفَتْحاً قَريباً، فيهِ بُلُوغُ الْآمالِ، وَخَيْرُالْمَبادي، وَخَواتيمُ الْأَعْمالِ، وَالْأَمْنُ مِنَ الْمَخاوِفِ كُلِّها في كُلِّ حالٍ، إِنَّهُ جَلَّ ثَناؤُهُ‏لِما يَشاءُ فَعَّالٌ، وَهُوَ حَسْبي وَنِعْمَ الْوَكيلُ فِي الْمَبْدَءِ وَالْمَآلِ.

উক্ত আরিজাটিকে কোন প্রবাহিত পানি, কুয়া অথবা কোন স্থায়ি পানিতে ডুবিয়ে দিতে হবে। আরিজাটি ডুবানোর পূর্বে বলতে হবে:

يَا حُسَينِ بنِ رُوحِ، سَلامٌ عَلَيْكَ، أَشْهَدُ أَنَّ وَفاتَكَ في سَبيلِ اللَّهِ، وَأَنَّكَ حَيٌّ عِنْدَ اللَّهِ‏مَرْزُوقٌ، وَقَدْ خاطَبْتُكَ في حَياتِكَ الَّتي لَكَ عِنْدَاللَّهِ جَلَّ وَعَزَّ وَهذِهِ رُقْعَتي وَحاجَتي‏إِلى مَوْلانا عَلَيْهِ السَّلامُ، فَسَلِّمْها إِلَيْهِ، فَأَنْتَ الثِّقَةُ الْأَمينُ.

 

তথ্যসূত্র:

১. নাজমুস সাক্বেব, মীর্যা হুসাইন তাবাররাসী নূরী, পৃষ্ঠা ৭৮৯।

২. বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৯১, পৃষ্ঠা ২৯, ৩০।

৩. মুনতাহিউল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৬৯।

 

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন