সন্ত্রাসবাদের কোনো সীমানা নেই
সন্ত্রাসবাদের কোনো সীমানা নেই
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি সৌদি আরবের মসজিদে নববীর কাছে এবং কাতিব শহরে একটি শিয়া মসজিদে বোমা হামলার নিন্দা জানান। তিনি নিহত ব্যক্তিদের পরিবারবর্গের প্রতি সহমর্মীতা প্রকাশ করে বলেছেন, ইরান অনেক আগেই বলেছে, সন্ত্রাসীদের নির্দিষ্ট কোনো সীমানা নেই এবং পৃথিবীর যেখানেই ঘটুক না কেন তা নিন্দনীয়। তিনি বলেন, ইরান প্রথম থেকেই সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়ে আসছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এর আগে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছিলেন, এ ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় সন্ত্রাসীদের কোনো নির্দিষ্ট সীমানা নেই এবং তারা কোনো ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা, ধর্ম ও জাতিকে চেনে না। এদের মোকাবেলায় তিনি সব দেশের সহযোগিতার ওপর জোর দেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে যে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তা বহু আগেই ইরানকে টার্গেট করেছিল। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যে অরাজক ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী আচরণেরই ফল। আল কায়েদা, দায়েশ নামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে উঠেছে। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে আমেরিকা প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সত্যিকারের ব্যবস্থা না নিয়ে বরং নানা কৌশলে তাদেরকে সহযোগিতা করছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইনটাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলাসহ নানাভাবে আমেরিকা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দেশটির কর্মকর্তারা নিজের হাতে তৈরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ভালো ও মন্দ এ দু’টি ভাগে ভাগ করেছে। এর ভিত্তিতে আমেরিকা কোনো কোনো গ্রুপকে সন্ত্রাসীদের তালিকা থেকে বাদ দেয়ার পরও গোপনে গোপনে তাদেরকে ঠিকই সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলো এবং সৌদি আরব ও তুরস্কসহ রাজতন্ত্র শাসিত আরব দেশগুলো অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহযোগিতা করছে। এমনকি বিভিন্ন দেশ থেকে ভাড়া করে যেসব সন্ত্রাসীকে আনা হচ্ছে তাদেরকেও বিপুল অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছে এসব দেশ। এ কাজের অর্থ হচ্ছে সরাসরি সন্ত্রাসীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করা। সন্ত্রাসীদের সমর্থক দেশগুলো বর্তমানে সন্ত্রাস এবং উগ্রবাদকে ইসলাম ও পাশ্চাত্যের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মারাত্মক রাজনৈতিক সংকট, যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদের কবলে জর্জরিত। এ অবস্থায় পাশ্চাত্যের বৃহৎ শক্তিগুলো সন্ত্রাসবাদ দমনের অজুহাতে এ অঞ্চলে হস্তক্ষেপ করছে ও পরিস্থিতিকে আরো ঘোলাটে করে তুলছে। অথচ বিরাজমান পরিস্থিতির জন্য তারাই আবার মুসলিম দেশগুলোকে অভিযুক্ত করছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা পাশ্চাত্যের যুবকদের উদ্দেশ্য করে দেয়া ঐতিহাসিক চিঠিতে বলেছিলেন, সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় যদি ইউরোপের জনগণ কয়েক দিনের জন্য ঘরের মধ্যে থাকার সিদ্ধান্ত নেয় এবং জনবহুল এলাকায় যাওয়া থেকে বিরত থাকে তাহলে তাদের এটা জেনে রাখা উচিৎ ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো দশকের পর দশক ধরে নিজ ঘরেও নিরাপদ নয় এবং তারা ইসরাইলি বর্বরতা ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন