ইরানকে ঠেকানোর জন্যই পাশ্চাত্য দায়েশকে নামিয়েছে: সর্বোচ্চ নেতা
ইরানকে ঠেকানোর জন্যই পাশ্চাত্য দায়েশকে নামিয়েছে: সর্বোচ্চ নেতা
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী শহীদ ব্যক্তিবর্গকে ইসলামী শাসন ব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, জিহাদি ও ইসলামী বিপ্লবী চেতনা ধরে রাখার উপরই ইরানের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নির্ভর করছে। তিনি সিরিয়ায় শহীদ সেনাদের পরিবার ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেছেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ৩৫ বছর আগে প্রেসিডেন্টের দফতরে বোমা বিস্ফোরণের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এর সঙ্গে সেইসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত ছিল যারা বর্তমানে বহু বছর ধরে ইউরোপ ও আমেরিকায় আশ্রয় নিয়ে আছে। অথচ ইউরোপ ও মার্কিন কর্মকর্তারা মানবাধিকার রক্ষা ও সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করার কথা বলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে সন্ত্রাসবাদ পশ্চিম এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ইউরোপ ও আমেরিকা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে। পাশ্চাত্য প্রথমে তাদের নিজ অশুভ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সন্ত্রাসীদেরকে গড়ে তুলেছে ও সংগঠিত করেছে। কিন্তু এখন তারা নিজেরাই সন্ত্রাসীদের হামলার টার্গেটে পরিণত হয়েছে। ফেতনা ও নৈরাজ্য দূর করতে এবং সমগ্র মুসলিম বিশ্বের ওপর চাপিয়ে দেয়া জুলুমের অবসান ঘটানোর জন্য ইরান সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। উদাহরণ স্বরূপ ধর্মের নামে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচন করার জন্য ইরান ইসলামের সত্যিকারের পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, মধ্যপ্রাচ্যে হস্তক্ষেপের জন্য ওয়াশিংটন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করছে। এ লক্ষ্যে তারা দায়েশকে সমর্থন দিচ্ছে। পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী নীতির কারণে সন্ত্রাসীরা আরো বিস্তার লাভ করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লবী সরকারকে উৎখাত করার পরিকল্পনা নিয়েই দায়েশের মতো ভয়ঙ্কর উগ্র সন্ত্রাসীদেরকে মাঠে নামানো হয়েছে। তিনি বলেন, “শত্রুরা দায়েশকে ইরানের দিকে লেলিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ইরান তাদেরকে পদানত করেছে।”
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইসলামের পবিত্র স্থাপনা রক্ষায় নিয়োজিত শহীদগণ ও পবিত্র আহলে বাইতের মান মর্যাদা রক্ষা করার ওপর বিশেষ জোর দিয়ে বলেছেন, এটা খুবই বিস্ময়ের ব্যাপার যে, ইরানসহ অন্য দেশের মুমিন বান্দারা নিজ স্ত্রী সন্তানসহ সব কিছু ত্যাগ করে ভিন্ন দেশে গিয়ে জিহাদ করছে এবং আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হচ্ছে। তিনি বলেন, ইরানে হামলা করার জন্যই ইরাক ও সিরিয়ায় দায়েশ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে গড়ে তোলা হলেও ইরান সরকার তাদের পরাজিত করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বক্তব্য থেকে ইসলামী বিপ্লবী সরকারের শক্তিমত্তা ও দৃঢ় অবস্থানের বিষয়টি ফুটে উঠেছে যা উপলব্ধি করা শত্রুদের পক্ষে সহজ নয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, ঈমান ও মানবিয় মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে টিকে থাকা সম্ভব। তিনি বলেন শত্রুরা এ বাস্তবতা উপলব্ধি করলেও তা স্বীকার করতে রাজি নয়।
হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ইসলামের শত্রুদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য এবং তাদেরই সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ডের নানা দিক তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, ইসলামের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা এবং ইরানের ইসলামী সরকারকে দুর্বল করাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন