কুফা মসজিদের ফযিলত

কুফা মসজিদের ফযিলত

কুফা, কুফা মসজিদ, ইমাম আলি,  আসবাগ বিন নোবাতা, ইমাম, ইমাম বাকের, ইমাম জাফর সাদিক, আউলিয়া, আউসিয়া, আম্বিয়া,

এস, এ, এ

আসবাগ বিন নোবাতা বলেন:একদা ইমাম আলি (আ.) কুফাবাসিদেরকে উদ্দেশ্যে করে বলেন:আল্লাহ তোমাদেরকে এমন জিনিষ দান করেছেন যা অন্যদেরকে দান করেননি। আল্লাহ তায়ালা কুফা মসজিদের নামাজিদেরকে বিশেষ ফযিলত দান করেছেন। কেননা কুফা মসজিদটি পূর্বে হজরত আদম (আ.), হজরত নূহ, ইদ্রিস, ইব্রাহিম ও হজরত খিযির(আ.)এর নামাজের স্থান ছিল। তোমাদের উক্ত মসজিদটি ঐ চার মসজিদের মধ্যে একটি যাকে আল্লাহ তায়ালা নির্বাচন করেছেন। যারা উক্ত মসজিদে নামাজ আদায় করবে তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা শেফায়াত করবেন এবং তাদের শেফায়াতকে বাতিল করা হবে না এবং অচিরেই হাজরে আসওয়াদকে সেখানে প্রতিস্থাপন করা হবে। উক্ত মসজিদে ইমাম মাহদি (আ.) নামাজ আদায় করবে। তোমরা সেখানে নামাজ আদায় করবে এবং এভাবে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন এবং তোমাদের মনোবাসনা পূর্ণ হবে। যদি বিশ্বের মানুষেরা কুফা মসজিদের ফযিলত সম্পর্কে অবগত হতো তাহলে তারা মসজিদটির প্রতি অতি ভক্তি প্রদর্শন করতে। (মাআরেফ ওয়া মাআরিফ, খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ৬১০)

ইমাম আলি (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে বেহেশতের চারটি প্রাসাদ যা পৃথিবিতে বিদ্যমান রয়েছে মসজিদুল হারাম, মসজিদুন নবি, মসজিদে বাইতুল মোকাদ্দাস এবং কুফা মসজিদ। (ওয়াসায়েলুশ শিয়া, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৮২)

হজরত আদম (আ.)এর সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহর ফেরেস্তারা কুফা মসজিদের স্থানে ইবাদত করতো। পৃথিবির বুকে কুফা মসজিদে সর্বপ্রথম আল্লাহর ইবাদত করা হয়। যখন আল্লাহ হজরত আদম (আ.)কে সৃষ্টি করার পরে তাঁর ফেরেস্তাদেরকে সিজদা করার নির্দেশ দেন তখন ফেরেস্তারা কুফা মসজিদে সিজদা করেছিল এবং এখনও প্রত্যেক রাতে আল্লাহর ফেরেস্তারা উক্ত মসজিদে যাতায়াত করে। (তারিখূল কুফা, পৃষ্ঠা ৫৭)

আল্লাহর কাছে কুফা মসজিদের এমন একটি বিশেষ মর্যাদা রযেছে যে, যদি কেউ উক্ত মসজিদে ইবাদতের জন্য আসে তাহলে আল্লাহ তার গুনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দেন। একদা ইমাম রেযা (আ.) এক ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসা করেন তোমার বাড়ি কোথায়? উক্ত ব্যাক্তিটি বলে আমি কুফাতে থাকি। ইমাম (আ.) তাকে কুফা মসজিদের ফযিলত সম্পর্কে বলেন: পূর্বে কুফা মসজিদটি হজরত নুহ (আ.) এর বাড়ি ছিল। যদি কেউ ১০০ বার উক্ত মসজিদের প্রবেশ করে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার ১০০টি গুনাহকে ক্ষমা করে দিবেন। হজরত নুহ (আ.) উক্ত স্থানে বলেছিলেন:

«رَبِّ اغْفِرْ لِی وَ لِوَالِدَی وَ لِمَنْ دَخَلَ بَیتِی مُؤْمِناً

(ওয়াসায়েলুশ শিয়া, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৮২)

আবু বাসির ইমাম জাফর সাদিক (আ.) থেকে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেছেন: উত্তম মসজিদ সমূহের মধ্যে একটি হচ্ছে কুফা মসজিদ। সেখানে হাজার নবিগণ এবং আউসিয়াগণ নামাজ আদায় করেছেন। (মান লা ইয়াহ যারুহুল ফাকিহ, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ২৩১)

ইমাম জাফর সাদিক (আ.)থেকে বর্ণিত হয়েছে মসজিদুল হারাম, মসজিদুন নবাবি, কুফা মসজিদ এবং ইমাম হুসাইন (আ.)এর মাজার উক্ত চারটি মসজিদে সর্বাবস্থায় নামাজ পূর্ণ পড়া যায় । (কাফি, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৮৬)

ইমাম বাকের (আ.) কুফা মসজিদের ফযিলত সম্পর্কে বলেছেন: যদি মানুষেরা কুফা মসজিদের ফযিলত সম্পর্কে অবগত হতো তাহলে তারা দূর থেকে হলেও সেখানে নামাজ আদায়ের জন্য একত্রিত হতো। সেখানে ওয়াজিব নামাজ আদায় করলে হজের সমপরিমাণ এবং নফল নামাজ পড়লে উমরা হজের সমপরিমাণ সওয়াব অর্জন করা যায়। (কাফি, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৮)

ইমাম জাফর সাদিক (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে কুফা মসজিদে এক ওয়াক্তের নামাজ অন্যান্য মসজিদে হাজার নামাজের সমান।অনুরূপভাবে ইমাম রেযা (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে কুফা মসজিদে একা নামাজ পড়লেও ৭০টি জামাতের নামাজের সমপরিমাণ সওয়াব অর্জন করা যায়। (ওসায়েলুশ শিয়া, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৩৯)

ইমাম জাফর সাদিক (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে কাবা হচ্ছে আল্লাহর হেরেম শরিফ, মদিনা রাসুল (সা.)এর হেরেম শরিফ এবং কুফা হচ্ছে হজরত আলি (আ.)এর হেরেম শরিফ। (তারিখে কুফা, পৃষ্ঠা ৩৯)

কুফা মসজিদে অনেক নবি ও আওসিয়াগণ নামাজ আদায় করেছেন। এছাড়া উক্ত মসজিদে ৩৭০ জন নবি এবং ৬০০জন আওসিয়াদেরকে দাফন করা হয়েছে।

ইমাম বাকের (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন আমাদের কায়েম (আ.) বিপ্লব ঘোষণা করবে তখন তিনি কুফায় আসবেন এবং সকল মুমিনবৃন্দ তাঁর চারিপাশে অবস্থান করবে। (আল গিবা, শেইখ তুসি, পৃষ্ঠা ২৭৫)

কেয়ামতের দিন উক্ত মসজিদ থেকে ৭০ হাজার ব্যাক্তি উত্তোলিত হবে যারা বিনা হিসাবে বেহেশতে প্রবেশ করবে। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ১০০, পৃষ্ঠা ৩৯৫)

কুফা মসজিদে অবস্থান করলেও সওয়াব অর্জন করা যায়। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ১০০, পৃষ্ঠা ৪০৫)

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন