জুমাতুল বিদা ও কুদস দিবস
জুমাতুল বিদা ও কুদস দিবস
রমজান মাসের শেষ জুমার দিনই মুসলিম বিশ্বে ‘জুমাতুল বিদা’ নামে পরিচিত। জুমাতুল বিদার গুরুত্ব অনুধাবন করার জন্য দুটো বিষয় আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন।
১- মাহে রমজানের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য।
২- সপ্তাহের ভেতরে জুমার দিনের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য।
রমজান হচ্ছে পবিত্র কোরআন মজিদ অবতীর্ণ হওয়ার মাস। এ মাসেই একটি বরকতময় রজনী রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। আর শুক্রবার মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদ। এ দিবসে এমন একটি সময় আল্লাহ রেখে দিয়েছেন, যা দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ মুহূর্ত। জুমার নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
অর্থ: হে মুমিনগণ! জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। (সুরা জুমা, আয়াত নং ৯)।
রাসুল পাক (সা.) বলেছেন, শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিবস এবং জুমার নামাজ আদায়ে অশেষ সওয়াব ও নেয়ামত। মহানবী (সা.) এক জুমার দিনে ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুসলিমগণ! এ দিনকে আল্লাহপাক ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। সুতরাং এ দিনে গোসল করো এবং যার কাছে সুগন্ধি রয়েছে সে সুগন্ধি ব্যবহার করো আর অবশ্যই এ দিনে মেসওয়াক ব্যবহার করো।
জুমাতুল বিদার আরেকটি বিশেষ তাত্পর্য এই যে, এ রমজান মাসের শেষ শুক্রবার হজরত দাউদ আ. জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানে গড়ে তোলেন মসজিদে আল-আকসা বা বায়তুল মুকাদ্দাস, যা বায়তুল্লাহ ও মসজিদে নববীর পর তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। মুসলমানদের প্রথম কিবলা উদ্ধারের জন্য মুসলিম উম্মাহকে জাগিয়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালে রমজানের শেষ শুক্রবারকে ইরানের ধর্মিয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনী (রহ.) তিনি রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে 'বিশ্ব কুদস দিবস' বলে ঘোষণা দেন। সেই থেকে প্রতি বছর পালিত হচ্ছে এই 'আল কুদস দিবস'। আর তাই প্রতিবছর রমজান মাসের শেষ শুক্রবার বিশ্বের সব মুসলমান বায়তুল মুকাদ্দাসে ইহুদিদের অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করে থাকে এবং ইসরাইলের দখল থেকে পবিত্র ভূমি মুক্ত করার শপথ গ্রহণ করে। এ জন্য রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে আল কুদস দিবসও বলা হয়। একে একে আমরা রহমত, মাগফিরাত ও ক্ষমার তিন ধাপই অতিক্রম করতে চলেছি। আর তাই আমাদের এখন হিসাব-নিকাশ মেলানো দরকার, পবিত্র এ মাসে আমরা কতটুকু আল্লাহর মারেফত অর্জন করতে পেরেছি। নাকি যে তিমিরে ছিলাম সে তিমিরেই রয়ে গেছি!
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন