জাহেলিয়াতের যুগ ও ওহাবিদের মধ্যে সাদৃস্যতা- ১
জাহেলিয়াতের যুগ ও ওহাবিদের মধ্যে সাদৃস্যতা- ১
আমরা জানি যে, বর্তমান বিশ্বে ওহাবিরা কিভাবে মানুষকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে হত্যা করে বেড়াচ্ছে। উক্ত দলটিকে শত্রুরা ইসলাম ধর্মকে ধ্বংস করার জন্য তৈরী করেছে।
আপনারা যদি কেউ ওহাবিদের সম্পর্কে গবেষণা করে থাকেন অথবা তাদের সম্পর্কে অধ্যায়ন করে থাকেন তাহলে আপনারা সহজেই বুঝতে পারবেন যে, তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে কি?
আর তাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যেকে জানতে এবং দেখতে চাইলে আমরা যদি একবার সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে সহজেই বিষয়টি বুঝতে পারবো।
আর তারা তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যেমে আরবের জাহেলি যুগের লোকদেরকেও হার মানিয়েছে।
আররবের জাহেলিয়াতের লোকজন হারাম মাসগুলোতে যুদ্ধ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতো কিন্তু ওহাবিরা হারাম মাসগুলোতেও যুদ্ধকে অব্যাহত রেখেছে। তারা রজব মাসেও বিভিন্ন মুসলমান দেশসমূহরে উপরে হামলা চালিয়েছে। তারা কেমন মুসলমান? আর এভাবেই নাকি তারা সারা বিশ্বে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবে।
ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই যে তারা কাবার যিয়ারতকারীকে হারাম মাসে হত্যা করেছে। ওহাবীরা এমন সব কাজ করেছে যা জাহেলিয়াতের যুগের লোকদের চিন্তাধারাকেও ধার মানতে বাধ্যে করে। আরবের জাহেলিয়াতের লোকজনদের সাথে ওহাবীদের বিভিন্ন বিষয়ে সাদৃস্যতা রয়েছে।
১- যুদ্ধ, রক্তপাত এবং কঠোরতা: আরবেরে জাহেলি যুগের লোকেরা ৯ বছরের বাচ্চাদেরকেও হত্যা করতো এবং নারীদেরসম্পর্কে তাদের একটি অন্যরকম চিন্তাভাবনা ছিল। অউস ও খাযরাজ গোত্রের মধ্যে ১২০ বছর ধরে যুদ্ধ চলেছিল। ওহাবীরা প্রথম থেকেই যুদ্ধ দ্বারা তাদের কর্মকান্ড শুরু করেছে এবং এখনও তারা যুদ্ধ করে যাচ্ছে তাও আবার মুসলমানদের সাথে। যারা তাদের কথাকে মেনে নিবে না তাদেরকে তারা তাকফিরি বলে আখ্যায়িত করে এবং তাদেরকে হত্যা করাকে জায়েজ বলে মনে করে। তারা এক ইসলামী সৈন্যর বুককে চিরে তার কলিজা বাহির করে তার কলিজাকে চিবায় এবং কলেমা তৈয়বাকে উচ্চারণ করে। কি তারা এভাবে ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়? অথবা ৯ বছরের বাচ্চাকে বেধে রেখে তার চোখের সামনে তার বাবাকে হত্যা করে।
২- বদ্ধ চিন্তাধারী: একদা রাসুল (সা.) এক আরবের সাথে কথা বলছিলেন: সে এক পর্যায়ে রাসুল (সা.) কে বলে যে আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদের পথে চলবো। ওহাবিরাও হচ্ছে অনুরুপ। তারা মোহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহাবের মতাদর্শ অনুযায়ি চলে এবং তারা কারো এবং কোন প্রকার কথা শুনতে রাজি না। এমনকি তারা বলে যে, যদি কেউ আমাদের মতাদর্শকে না মেনে নেয় তাহলে সে হচ্ছে কাফের এবং তার সকল কিছু আমাদের জন্য হালাল হয়ে যাবে।
৩- রাসুল (সা.)’এর যে সকল কথা ওহাবীদের ইচ্ছা তা তারা গ্রহণ করে আর যা তাদের ইচ্ছানুযায়ি না তা তারা গ্রহণ করে না: মহান আল্লাহ তায়ালা শেফায়াত সম্পর্কে কোরআনে উল্লেখ করেছেন কিন্তু ওহাবীরা মেনে নিতে অনিচ্ছুক। তারা আয়াতে মোতাশাবেহ কে মেনে নেয় যেমন আল্লাহর হাত রয়েছে, পা রয়েছে নাউযুবিল্লাহ।
৪- মুসলমানদেরকে অত্যাচার করা: যেভাবে ইয়াসির এবং সুমাইয়াকে শহীদ করা হয় অনুরুপভাবে ওহাবিরাও মুসলমানদেরকে হত্যা করে। মোহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহাব যখন মোহাম্মাদ বিন সউদের কাছে আসে এবং মোহাম্মাদ বিন সউদের গোত্ররা ছিল বেদুঈন, দরিদ্র এবং উগ্র। তখন মোহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহাব মোহাম্মাদ বিন সউদকে বলে যে যদি তোমরা আমার মতাদর্শকে মেনে নাও তাহলে আমি তোমাদেরকে ধনি করে দিব। এভাবে তারা একত্রিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে হামলা করে এবং সেখানে জনগণের সম্পদকে লুট করে তারা ধনবান হয়ে যায়।
৫- আরবের লোকেরা হারাম মাসকে কম বেশী করতো: হারাম মাস রয়েছে চারটি রজব, জিলক্বদ, জিলহজ্ব, মহরম। জাহেলিয়াতের লোকেরা যুদ্ধ করার জন্য উক্ত মাস সমূহকে কম বেশী করতো। যে কাজটি ওহাবিরা এখন করছে তারা রজব মাসেও মুসলমানদের উপরে হামলা করছে।
৬- মসজিদ সমূহকে ভেঙ্গে ফেলা: ওহাবিরা মসজিদে হামলা করে এবং মুসলমানদেরকে নামাজরত অবস্থায় হত্যা করে। ওহাবিরা এখনও মসজিদে যেরার তৈরী করে এবং খোদার ঘরকে বোমা দিয়ে উড়িয়ে দিতে দ্বিধা বোধ করে না।
৭- তারা অন্যান্য মুসলমানদেরকে অজ্ঞ বলে মনে করে।
৮- নারীদের অধিকারকে খর্ব করা: আরবের লোকেরা যেমনভাবে নারীদেরকে তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করতো অনুরুপভাবে ওহাবিরাও নারীদেরকে তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। বিশ্বে একমাত্র দেশ হচ্ছে সৌদি যেখানে নারীরা বোরকা পরেও গাড়ি চালাতে পারে না। অথচ তারা বিভিন্ন নারী নাচের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে কিন্তু অন্যদের বেলায় তাদের
৯- ওহাবীরা হচ্ছে রাসুল (সা.)’এর শত্রু: কেননা তারা মনে করে যে সবচেয়ে বড় ফেতনার স্থান হচ্ছে রাসুল (সা.)’এর রওজা মোবারক কেননা মুসলমানেরা আল্লাহর দিকে না যেয়ে তারা রাসুল (সা.)’এর কবরের দিকে বেশী আকৃষ্ট হয়। আর এ কারণেই তারা কয়েকবার রাসুল (সা.)’এর কবর মোবারককে খারাপ করার চেষ্টা চালায় কিন্তু মুসলমানদের ভয়ে তারা তাদের উক্ত অসৎ চিন্তা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে বাধ্যে হয়।
১০- মুসলমানদের শত্রু: ওহাবিরা লক্ষ লক্ষ মুসলমানদেরকে হত্য করেছে।
১১- ওহাবিরা ইসলামি স্থাপত্য সমূহের ধ্বংসকারী: তারা বিভিন্ন রাসুল (সা.)’এর জলিলুল কদর সাহাবির কবরকে বোমা হামলার মাধ্যেমে গুড়িয়ে দিয়েছে অথবা তাদের পবিত্র দেহ মোবারককে কবর খুড়ে উত্তোলন করেছে।
১২- ওহাবিরা ইয়াহুদি খৃষ্টানদের বন্ধু ও মুসলমানদের শত্রু: কোন জঙ্গি আহত হলে তাদের চিকিৎসা করা হয় ইসরাইলের হাসপাতালে। তারাকোন কোন মাযহাবের মুসলমানদেরকে ইয়াহুদি খৃষ্টানদের চেয়েও নিকৃষ্ট বলে মনে করে।
আর তাই সকল মুসলমানদের উচিত ওহাবিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা কেননা তারাই হচ্ছে বর্তমানে ইসলামের অন্যতম এবং প্রধান শত্রু। ওহাবিরাই হচ্ছে ইয়াহুদি খৃষ্টানদের এজেন্ট যারা তাদের ইশারাই বিভিন্ন মুসলমানদেশ সমূহে হামলা করছে। আর ইয়াহুদি খৃষ্টানরা তাদেরকে সাহায্যে করার জন্য উন্নত মানের অস্ত্র তাদেরকে দান করছে। কারণ ওহাবিরা হচ্ছে তাদেরই সন্তান।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন