ইমাম মাহদী (আ.)কে সহযোগিতা করার মাধ্যেম সমূহ

ইমাম মাহদী (আ.)কে সহযোগিতা করার মাধ্যেম সমূহ

ইমাম মাহদী, মাহদী, ইমাম, গায়বাত, অর্ন্তধান, ইমাম সাদিক, ইমাম সাজ্জাদ , ইমাম বাকের, ইমাম আলি,

অন্তর, কথা এবং কৃতকর্ম দ্বারা সহায়তা করা:

১- হজরত আলি (আ.) এ সম্পর্কে বলেছেন: যারা আমাদেরেকে অন্তর দিয়ে ভালবাসে, নিজের কথা দ্বারা আমাদেরকে সহায়তা করে এবং আমাদের শত্রুদের সাথে লড়ায় করে, সে কেয়ামতের দিন আমাদের সাথে থাকবে। আর যারা শুধুমাত্র আমদেরকে ভালবাসবে, নিজ কথা দ্বারা আমাদেরকে সহায়তা করবে কিন্তু আমদের শত্রুদের সাথে লড়ায় করবে না তাদের পদমর্যাদা কম হবে। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ২৭, পৃষ্ঠা ৮৯, হাদীস নং ৩৯)

২- ইমাম বাকের (আ.) বলেছেন: আমাদেরকে তোমরা উচ্চ পর্যায়ের তাকওয়া দ্বারা সহায্যে কর। কেননা যারাই উচ্চ পর্যায়ের তাকওয়া দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালার সাথে সাক্ষাত করবে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে তার একটি বিশেষ মর্যাদা দান করবেন। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৭, পৃষ্ঠা ৩০১)

৩- ইমাম সাদিক্ব (আ.) বলেছেন: হে আমাদের শিয়ারা! তোমরা হচ্ছো আমাদের সাথে সম্পৃক্ত। তোমরা এমন কাজ কর যেন তা  আমাদের জন্য সুনামের কারণ হয় এবং এমন কোন কাজ করো না যেন তা আমাদের জন্য অপমানের কারণ  না হয়। তোমরা হজরত আলি (আ.)’এর একনিষ্ঠ সাহাবিন ন্যায় নিজেকে তৈরী কর যেন তোমাদের মধ্যে কোন একজন যে সমাজে থাকে তাহলে সে যেন সেখানের ইমাম জামাআত, মোয়াজ্জিন এবং আমানতদার হিসেবে পরিচিত হয়।  (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৮৮, পৃষ্ঠা ১১৯)

৪- ইমাম সাদিক্ব (আ.) বলেছেন: তোমরা এমন কোন কাজ করো না যার কারণে আমাদের অপমানিত হতে হয়। কেননা সন্তানের অপকর্মের কারণে পিতা লজ্জিত হয়। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৭৫, পৃষ্ঠা ৪৩১)

দ্বিনি শিক্ষা দ্বারা ইমাম মাহদি (আ.) কে সহায়তা করা:

৫- ইমাম হুসাইন (আ.) বলেছেন: যে আমাদের কোন ইয়াতিমের দ্বায়িত্ব নিবে এবং তাকে দ্বিনি শিক্ষা দানের মাধ্যেমে তাকে হেদায়াত করবে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে বলবে হে আমার দয়ালু বান্দা উক্ত কাজটি হচ্ছে আমার কিন্তু যেহেতু তুমি তা সম্পাদন করেছো সেহেতু হে ফেরেস্তাগণ! যতগুলো অক্ষর সে আমার বান্দাকে শিক্ষা দিয়েছে প্রত্যেকটি অক্ষরের জন্য তোমরা বেহেস্ত তার জন্য ১০ লক্ষ প্রাসাদ তৈরী করে দাও এবং উক্ত প্রাসাদগুলোর জন্য যা প্রয়োজন তোমরা তার জন্য তা বৃদ্ধি করে দাও। (মাকইয়ালুল মাকারেম, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৯২)

৬- ইমাম সাজ্জাদ (আ.) বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা হজরত মূসা (আ.)’এর প্রতি ওহি নাযিল করে বলেন: আমার ‍সৃষ্টির কাছে আমাকে প্রিয়তা বৃদ্ধির চেষ্টা কর এবং আমার সৃষ্টিকে আমার কাছে ভালবাসার যোগ্য করে তুলো। হজরত মূসা (আ.) বলেন: হে আল্লাহ! আমি উক্ত কাজটি কিভাবে করবো? মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁকে বলেন: তুমি আমার নেয়ামত এবং মহানভবতার কথঅ তাদেরকে স্মরণ করাও যেন তারা আমাকে ভালবাসে। আর যদি কোন বান্দা আমার কৃপা থেকে দূরে থাকে তাহলে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা কর এবং যদি কেউ পথভ্রষ্ট হয়ে আমার কাছ থেকে দূরে চলে গেছে তাকে পথনির্দেশনা দান কর আর যদি এমনটি করতে পার তাহলে তুমি ১ লক্ষ বছরের রোজা এবং সারা রাত ইবাদত করার চেয়েও বেশী সওয়াবের অধিকারী হবে।

হজরত মূসা (আ.) বলেন: আপনি কোন প্রকার বান্দাদের কথা বলছেন? আল্লাহ তায়ালা বলেন: যারা বারবার গুনাহে লিপ্ত হয়েছে।

হজরত মূসা (আ.) জিজ্ঞাসা করেন তারা কারা? আল্লাহ বলেন: যারা তাদের যুগের ইমামকে চিনে না এবং যারা শরিয়ত, দ্বিনের বিধি বিধান সম্পর্কে অবগত না তাদেরকে ঐশী বিধান সম্পর্কে অবগত কর এবং তাদেরকে ইবাদতের শিক্ষা দাও যেন এভাবে সে আমার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে।

৭- হজরত মূসা কাযিম (আ.) বলেছেন যে, যদি কোন ধর্মীয় জ্ঞানী ব্যাক্তি কোন ব্যাক্তিকে যে আমাদের থেকে দূরে সরে গেছে তাকে শিক্ষা দানের মাধ্যেমে পরিত্রাণের রাস্তাকে উন্মোচন করে দেয়। তাহলে উক্ত বিষয়টি শয়তানের জন্য হাজার ইবাদতকারীর ইবাদতের চেয়েও বেশী কষ্টকর।

৮- ইমাম সাদিক্ব (আ.) বলেছেন: উত্তম মানুষ হচ্ছে সে যে আমাদের বিষয়কে নিয়ে আলোচনা করে এবং অপরকেও দাওয়াত দেয়। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ২০০)

সম্পদের মাধ্যেমে ইমাম মাহদি (আ.) কে সাহায্যে করা:

৯- ইমাম সাদিক্ব (আ.) নিন্মোক্ত আয়াতটি সম্পর্কে বলেছেন:

وَالَّذِينَ يَصِلُونَ مَا أَمَرَ اللّهُ بِهِ أَن يُوصَلَ

অর্থ: এবং যারা বজায় রাখে ঐ সম্পর্ক, যা বজায় রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন। (সূরা রাদ, আয়াত নং ২১)

ইমাম (আ.) কে উক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন: উক্ত আয়াতে ‘সেলা’ বলতে ইমামকে বুঝানো হয়েছে অতঃপর ইমাম আরো বলেন: উক্ত মাধ্যেমটি হচ্ছে শুধুমাত্র তোমাদের সংশোধনের জন্য। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৯৬, পৃষ্ঠা ২১৬)

১০- মোফাযযাল বিন উমর বলেছেন: একদা আমি ইমাম সাদিক্ব (আ.) এর সমীপে উপস্থিত হই এবং আমার কাছে যা ছিল তা আমি ইমামের সামনে রেখে দিলাম। ইমাম (আ.) আমাকে এটা কি? আমি ইমামকে বললাম যে এগুলো হচ্ছে আপনার খাদেমদের সম্পদ সমূহ। তিনি বললেন হে মোফাযযাল আমি তা কবুল করলাম তার অর্থ এ নয় যে, আমার এগুলোর প্রয়োজন আছে। বরং আমি এগুলো গ্রহণ করছি যেন তা সংশোধন হয়ে যায়। অতঃপর ইমাম বলেন যে আমি আমার বাবার কাছে শুনেছি যে, তিনি বলেছিলেন যে, যদি কেউ বছরের শেষে নিজেদের সম্পদের কিছু অংশ চাই তা বেশী হোক বা কম আমাদের না দিবে। কেয়ামতের দিনে আল্লাহ তায়ালা তার দিকে লক্ষ্য করবেন না। কিন্তু যদি আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে দেন সেটা অন্য বিষয়।

চলবে...

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন