সিফফিন’এর যুদ্ধ
সিফফিন’এর যুদ্ধ
মুয়াবিয়া যখন কিছুতেই ইসলামী খেলাফতের আনুগত্য স্বীকার করলেন না , তখন মওলা আলীর জন্য মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছাড়া আর কোন পথ খোলা রইল না। উভয় পক্ষ ফোরাত নদীর তীরে সিফফিন নামক স্থান এ মুখোমুখি হলেন। মুয়াবিয়া বাহিনী ফোরাত নদীর উপর অধিকার প্রতিষ্ঠিত করলেন। সৈন্য দের নির্দেশ দেয়া হল আলী আঃ এর বাহিনী কে যেন এক ফোঁটা পানিও দেয়া না হয়। ইয়াজিদ কারবালায় তার বাবার এই সুন্নত পালন করেছেন। হযরত আলী আঃ মুয়াবিয়ার নিকট দূত পাঠিয়ে বলল, আল্লাহর নেয়ামত পানি থেকে বঞ্চিত করার অধিকার মুয়াবিয়ার নেই। উত্তরে মুয়াবিয়া বললেন যুদ্ধে সব কিছু জায়েজ আছে। অতঃপর মওলা আলী আঃ ইমাম হুসাইন আঃ কে নির্দেশ দিলেন ফোরাত মুখে অভিযান পরিচালনা করার জন্য। ইমাম হুসাইন আঃ যুদ্ধ করে মুয়াবিয়ার সৈন্য দের হটিয়ে দিয়ে ফোরাত মুক্ত করলেন। অতঃপর মুয়াবিয়া শিবির এ পানির সমস্যা দেখা গেল। মুয়াবিয়া পানি চেয়ে আলীর কাছে লোক পাঠাল। আলীর পক্ষের অনেকে মওলা আলীকে অনুরোধ করলেন। উত্তরে হযরত আলী আঃ বললেন, সে অন্যায় কাজ করেছে বলে আমরা তো অন্যায় কাজ করতে পারি না। অতঃপর মুয়াবিয়ার সৈন্যদের যত প্রয়োজন পানি নেয়ার অনুমতি দান করলেন।
হযরত আম্মার বিন ইয়াসির রাঃ এর হত্যাঃ সিফফিন এর যুদ্ধে অন্যতম ঘটনা হচ্ছে মহানবীর প্রিয় সাহাবা আম্মার বিন ইয়াসির এর হত্তা কাণ্ড। সুন্নিদের বিখ্যাত আলেম হযরত আল্লামা আব্দুর রহমান জামি রাঃ তার বিশ্ব বিখ্যাত কিতাব "শাওয়াহেদুন নবুয়ত " কিতাব এ আম্মার হত্তা কাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া আছে। মহানবী রাসুল সাঃ হযরত আম্মার এর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছেন "আম্মার তোমাকে বিদ্রোহীরা শহীদ করবে।" ( বুখারী, ৮খন্ড, ২. তিরমিজি, ৫ খন্ড, . মুসনাদে হাম্বল, ২খন্ড, ৩খন্ড,৪খন্ড ৫খন্ড, পৃ. ; ৬খন্ড, নাসায়ী, তাবারানি, বায়হাকি, আবু দাউদ, ইত্যাদি হাদিস গ্রন্থে হযরত আবু সাইদ খুদরি, আবু কাতাদা আনসারি, উম্মে সালমা, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আবু হুরাইরা, আমর ইবনুল আস, ওসমান ইবনে আফফান, হুজায়ফা, আবু আইয়ুব আনসারী , খোজাইফা ইবনে সাবেত, আমর ইবনুল আস, আবুল ইউসর, আম্মার ইবনে ইয়াসির সহ আরও অনেক সাহাবা এই হাদিস বর্ণনা করেন। হাদিস গ্রন্থ ছাড়া ও বিখ্যাত কিতাব শাওয়াহেদুন নবুয়ত, আহকামুল কুরআন, শ্রেষ্ঠ ইতিহাস গ্রন্থ আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া) সিফফিন এর যুদ্ধে মুয়াবিয়া কতৃক জলিল উল কদর বদরী সাহাবা হযরত আম্মার রাঃ কে হত্তা করা হয়। আম্মার যুদ্ধ করতে করতে পিপাসিত অবস্থায় শহীদ হন। মুয়াবিয়ার সৈন্য দের কাছে এক ফোঁটা পানি চেয়েও পান নি। আম্মার রাঃ এর কাঁটা মস্তক ২ জন সৈন্য মুয়াবিয়ার সামনে পেশ করা হয় পুরস্কার এর আশায়। রাসুল সাঃ এর কথায় প্রমানিত হয় যে আলী আঃ হকের উপর ছিল এবং মুয়াবিয়া বিদ্রোহী ছিল। আম্মার এর মাথা মুয়াবিয়ার সামনে রাখার পর আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস মুয়াবিয়াকে উক্ত হাদিস এর কথা বললে মুয়াবিয়াও এই হাদিস অস্বীকার করতে পারেন নি। তাই অপব্যখা করে বলেছেন- আম্মার কে তারাই হত্তা করেছে যারা বর্শার মুখে থেলে দিয়েছে। বিস্তারিত জানতে দেখুন "শাওয়াহেদুন নবুয়ত , আহকামুল কুরআন ৩য় খণ্ড, আল এসাবা ২য় খণ্ড, আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া। মুয়াবিয়ার ব্যাখ্যা আল্লামা ইবনে আসির ও মোল্লা আলী কারী, হাফেয ইবনে হাজার বাতিল করে দিয়েছেন। মোল্লা আলী কারী তার ফিকহে আকবর এ লিখেন মুয়াবিয়ার ব্যখ্যা শুনে মওলা আলী বলেন- এই ধরনের ব্যখ্যা থেকে এই কথা বলা চলে নবী নিজেই এই হযরত হামজা রাঃ এর হত্তা কারী ছিলেন।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন