ইয়েমেন ও সৌদি সেনাদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ: বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া

ইয়েমেন ও সৌদি সেনাদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ: বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া

সৌদি আরব ইয়েমেনে আগ্রাসন শুরু করার পর সংকট আরো জটিল রূপ নিয়েছে। সৌদি আরবের জঙ্গি বিমান ইয়েমেনের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আনসারুল্লাহ বাহিনীও বসে নেই। বিভিন্ন খবরে জানা গেছে, দু’দেশের সীমান্তে সৌদি আরব ও ইয়েমেনের সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে।
 
বার্তা সংস্থা নাবা প্রেস জানিয়েছে, ইয়েমেনের সেনাবাহিনী সীমান্তে সৌদি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং পাল্টা হামলায় সৌদি সেনাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবার কোনো কোনো খবরে জানা গেছে, ইয়েমেনের বিপ্লবী স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এডেন শহরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আনসারুল্লাহর অনুগত বিপ্লবী গণ-কমিটি বা স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর সদস্য এবং সশস্ত্র সেনাদল দক্ষিণাঞ্চলীয় বেশ কিছু শহর সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
 
এদিকে যখন ইয়েমেনের যোদ্ধাদের বিজয়ের খবর আসছে তখন সৌদি আরব ইয়েমেনের বিরুদ্ধে স্থলপথে বড় ধরণের হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে আনসারুল্লাও জানিয়েছে, তারা সৌদি আরবের স্থল হামলা প্রতিহত করবে। ইয়েমেনের প্রেসিডেন্টের দফতরে নিয়োজিত প্রধান কর্মকর্তা ও  আনসারুল্লাহর অন্যতম শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ আলী আল হুথি বলেছেন, যে কোনো দেশ ইয়েমেনে হামলার দুঃসাহস দেখাবে তাদেরকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে। কারণ আমাদের দেশের মাটিতে আগ্রাসন চালানোর সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না। তিনি বলেছেন, আনসারুল্লাহ ও হুথি  আন্দোলনের সব নেতা নিরাপদেই আছেন। সৌদি জঙ্গি বিমান রাজধানী সানার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বোমা বর্ষণ করেছে বলে আল জারিরা টিভি চ্যানেল খবর দেয়ার পর আনসারুল্লাহর পক্ষ থেকে এ বক্তব্য এলো।
 
এদিকে, আরব লীগের মহাসচিব নাবিল আল আরাবি গতকাল মিশরের শারমুশ শেইখে এই জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক শেষে বলেছেন, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে, বিভিন্ন খবরে জানা গেছে, কয়েকটি আরব দেশ ইয়েমেন সংকটের অবসান ঘটানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে যুদ্ধ বিরতি প্রতিষ্ঠার কথাও শোনা গেছে। সংকট সমাধানের জন্য গৃহীত পরিকল্পনা মিশর, সৌদি আরব ও ইরানের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
 
ইরাকের প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ মাসুম ইয়েমেন সংকটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বল প্রয়োগ ও সহিংসতা সেদেশের পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করে তুলবে। ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত সানডে টাইমস লিখেছে, আল কায়দাকে সহযোগিতা করার জন্যই সৌদি আরব ইয়েমেনে স্থল হামলা চালানোর কথা বলছে। এদিকে, লেবাননের প্রধানমন্ত্রী তামাম সালাম বলেছেন, ইয়েমেনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সৌদি আরবের হস্তক্ষেপ এবং সামরিক হামলা এ অঞ্চলের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
 
বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি আরব ইয়েমেনে আগ্রাসন চালিয়ে এমন এক বিপদজনক খেলায় নেমেছে যা কিনা এক সময় সৌদি আরবকেই বিপর্যয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাবে। ইয়েমেনে সৌদি হামলার ব্যাপারে সৌদি আরবের যুবরাজদের মধ্যেও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় যদি ইয়েমেনে হামলা অব্যাহত  থাকে তাহলে খোদ সৌদি রাজ পরিবারের মধ্যেই গভীর সংকট তৈরি হবে।

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন