নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে চুক্তির প্রধান শর্ত: ইরানের প্রেসিডেন্ট

নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে চুক্তির প্রধান শর্ত: ইরানের প্রেসিডেন্ট


সুইজারল্যান্ডের লুজানে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের কঠিন ও শ্বাসরুদ্ধকর পরমাণু আলোচনা চলছে। গত বুধবার রাত থেকে ফের এ আলোচনা শুরু হয়।
 
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি আবারো ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এ ছাড়া, রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও আজ লুজান শহরে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য সুইজারল্যান্ডে উপস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনিও বলেছেন, পরমাণু বিষয়ে এত কাছাকাছি অবস্থানে এর আগে আর কখনো আমরা পৌঁছায়নি।
 
জামানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রান্ক ওয়াল্টারও বলেছেন, খুব শিগগিরি মতবিরোধের অবসান ঘটতে চলেছে। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন ফাবিয়াসও অতীতের আক্রমণাত্মক ভাষা ও কঠোর অবস্থান  থেকে সরে এসে বলেছেন, শান্তিপূর্ণ পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকার ইরানের রয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, আমাদের মধ্যে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে এবং বহু বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।
 
এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানিও জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে টেলিফোন সংলাপে বলেছেন, পরমাণু আলোচনায় ইরান সর্বোচ্চ সদিচ্ছার প্রমাণ দিয়েছে। এখন প্রতিপক্ষরা কি পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার বিষয়। ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তার দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে চুক্তির প্রধান শর্ত। কারণ চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে পারস্পরিক আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করা।
 
চলতি মাসের শেষ নাগাদ ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বোঝা যায়, চুক্তির ব্যাপারে সামগ্রিক একটা সমঝোতা হয়েছে এবং অনেক বিশ্লেষকের মতে, পরমাণু আলোচনা চূড়ান্ত সমাধানের দিকেই এগোচ্ছে। ২০১৩ সালের ২৪শে নভেম্বর যে সমঝোতা হয়েছিল তাতেই দু’পক্ষ অনেক কাছাকাছি অবস্থানে এসেছিল। এসব দিক বিবেচনা করে বলা যায়, মতপার্থক্যের জায়গাগুলো বা ব্যবধান অনেক কমে এসেছে এবং চুক্তি সইয়ের ক্ষেত্র তৈরি হয়ে আছে যদিও কিছু বিষয়ে বিরোধ মীমাংশার চেষ্টা এখনো চলছে। ইরানের ফোরদু ও আরাক পরমাণু কেন্দ্র এবং দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে এখনো কথাবার্তা চলছে।
 
এখন পর্যন্ত দুটি বিষয় পরমাণু আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। প্রথমত, সব পক্ষের সদিচ্ছা যা কিনা গত কয়েক দিনের আলোচনার ধরণ থেকে প্রমাণিত হয়েছে। আর দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, প্রতিপক্ষরা অন্তত এটা বুঝতে পেরেছে যে, নিষেধাজ্ঞা ও চাপ প্রয়োগের নীতি পরমাণু সমঝোতায় কোনো ভূমিকা রাখবে না।
 
যাইহোক, ইরানের পরমাণু আলোচক দল চূড়ান্ত সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রমাণ দিয়েছে। তাদের মতে, চুক্তিতে সব পক্ষের বিজয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন