ইয়েমেনের মাটিতে আগ্রাসীদের কবর রচনা করা হবে: আনসারুল্লাহ

ইয়েমেনের মাটিতে আগ্রাসীদের কবর রচনা করা হবে: আনসারুল্লাহ

 

 ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনের পেছনে আমেরিকার সবুজ সংকেত রয়েছে বলে জানা গেছে।

 

বিভিন্ন খবরে জানা গেছে, সৌদি আরবের জঙ্গি বিমান গতরাতে রাজধানী সানার আশেপাশে এবং দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে বোমা বর্ষণ করেছে। বলা হচ্ছে, সানার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর এবং পূর্বাঞ্চলীয় ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সামরিক কেন্দ্রগুলোর ওপর নতুন করে বোমা বর্ষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, জালেহ প্রদেশসহ দক্ষিণের অন্যান্য এলাকাও হামলা হয়েছে। আজ আরব লীগের বৈঠকের ঠিক আগ মুহূর্তে ইয়েমেনে এ হামলা চালানো হলো। দেশটির পদত্যাগকারী প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদিও আরব লীগের ওই বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য মিশরের শারমুশ শেইখ শহরে গেছেন।

 

মিশরসহ বেশিরভাগ আরব দেশ এখনো মানসুর হাদিকে ইয়েমেনের বৈধ প্রেসিডেন্ট বলে মনে করে। এমনকি সৌদি আরব ইয়েমেনে যে আগ্রাসন চালাচ্ছে তারও উদ্দেশ্য পদত্যাগকারী প্রেসিডেন্ট হাদিকে ফের ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা। অথচ মানসুর হাদি ইয়েমেনে তার বৈধতা হারিয়েছেন এবং বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। এ অবস্থায় সৌদি আরব সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে ইয়েমেনের জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে যাতে পরিস্থিতিকে রিয়াদের অনুকূলে আনা যায়। অর্থাৎ এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ইয়েমেনের জনগণের বিপ্লবকে ধ্বংস করা বা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা। এ লক্ষ্যে পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা পিজিসিসি ভুক্তি দেশগুলোর প্রতিনিধিরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন যাতে তাদের মাধ্যমে আনসারুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করা যায়। জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আল মোয়াল্লেমিও ইয়েমেনের ব্যাপারে খসড়া প্রস্তাব রাশিয়ার কাছে পাঠানোর কথা জানিয়ে বলেছেন, আমরা মস্কোর কাছ থেকে জবাবের অপেক্ষায় রয়েছি।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সৌদি আরব ইয়েমেনের ব্যাপারে মার্কিন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে যার প্রধান উদ্দেশ্য ইয়েমেনকে দুর্বল করে দেয়া। তাদের মতে, ইয়েমেনে সৌদি আরবের হামলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, সেদেশটিকে ভেঙ্গে খণ্ড বিখণ্ড করে দেয়া দেয়া।  গণমাধ্যমগুলো বলছে, সৌদি আরব ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ বাধানোর পায়তারা করছে। কারণ ইয়েমেনের মত প্রতিবেশী একটি দেশে স্থিতিশীলতা ও ঐক্য সবসময়ই সৌদি আরবের জন্য ভয়ের কারণ ছিল। গত প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে সৌদি আরব যখনই সুযোগ পেয়েছে তখনই ইয়েমেনে জাতিগত ও গোত্রীয় সংঘাত বাধানোর চেষ্টা করেছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, এতদিন পর্যন্ত ইয়েমেনে সৌদি আরবের অনুগত সরকার বসানো ছিল যাতে দেশটি সবসময় সৌদি আরব ও পাশ্চাত্যের কথামত চলে।

 

তবে ইয়েমেনের জনপ্রিয় বিপ্লবী আন্দোলন আনসারুল্লাহও চুপচাপ বসে নেই। তারা এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, অতীতের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি তারা ইয়েমেনে হতে দেবে না। আনসারুল্লাহ নেতা আব্দুল মালেক আল হুথি বলেছেন, ইয়েমেনের জনগণকে দমিয়ে রাখা এত সহজ নয় এবং আগ্রাসীদেরকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন,  সৌদি আরব যদি বিমান হামলা অব্যাহত রাখে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, ইয়েমেনের জনগণ সেদেশের মাটিতে আগ্রাসীদের কবর রচনা করবে।

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন