ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ঐতিহাসিক চিঠি

ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ঐতিহাসিক চিঠি

সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী, আমেরিকা, ভারত, মিয়ানমার, চীন, নরেন্দ্র মোদি, আসাম, ওবামা, বারাক ওবামা, মুখতার সাকাফি, মোখতার সাকাফি, mokhter sakafi, জাবের ইবনে হাইয়ান, ইমাম সাদিক, সুইডেন, Hazrat fizza, hazrat fijja, হজরত ফিজ্জা, হজরত ফিযযা, সিরিয়া, শাম, এজিদের দরবার, জয়নাব, সকিনা, রাফাহ ক্রসিং, অবমাননা, মহানবী, hussain, mohammad, imam mahdi, সিফফিন, জামালের যুদ্ধ, নারওয়ানের যুদ্ধ, খলিফা, খেলাফত, ইমামত, আলী, সিদ্দীক, ফারুক, মোর্তযা, বদর, ওহদ, খন্দক, খায়বার, বণী Shia, Sunni, Islam, Quran, Karbala, najaf, kufa, mashad, samera, madina, makka, jannatul baqi, kazmain, ali, Fatima, hasan, সাকিফা, বণী সায়াদা, সাহাবী, হিজবুল্লাহ, ইসরাইল, ড্রোন, বিমান, হাসান নাসরুল্লাহ , লেবানন, ইরান,  চীন, মালয়েশিয়া,  স্যাটেলাইট, কুয়ালালামপুর, বেইজিং, ভিয়েতনাম, মার্কিন, গোয়েন্দা, ইরাক, সিরিয়া, মিশর, আল কায়েদা, তাকফিরী, ইখওয়ানুল মুসলেমিন, বাংলাদেশ, ভারত, জিহাদ, ফিলিস্তিন, ইহুদি, গাজা, শহীদ, জিহাদ, ক্ষেপণাস্ত্র, দূতাবাস, সৌদি আরব , কুয়েত, রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন, আমেরিকা, ভিয়েনা, পরমাণু, বাহারাইন, আফগানিস্থান, থাইল্যান্ড, হজরত ফাতিমা, মার্জিয়া, সিদ্দিকা, মোহাদ্দেসা, বাতুল, উম্মে আবিহা, যাহরা, মুবারেকা, যাকিয়া, তাহেরা, রাযিয়া, জিহাদুন নিকাহ, পোপ, পাদ্রি, বাইতুল মোকাদ্দাস, ওহাবী, সালাফি, মুফতি, ড্রোন, পাকিস্থান, এজিদ, মাবিয়া, আবু সুফিয়ান, আলী আকবর, হুসাইন, শাবান, আমল, শবে বরাত, রমজান, দায়েশ, তাকফিরী, তালেবান, মোতা, মোতা বিবাহ, সেগা করা,দায়েশ, তাকফিরি, তালেবান, ওহাবী, আইএসআইএল,গাজা, ফিলিস্তিন, ইসরাইল, শিশু হত্যা, কুদস দিবস, জুমআতুল বিদা, কুদস,সাদক্বা, দান খয়রাত, ফেতরা, জাকাত, সাদকা, ভিক্ষা,  শবে বরাত, লাইলাতুল বরাত, দায়েশ, জঙ্গি,  দামেস্ক, ইসরাইল, সাইবার হামলা, ‍ৃ

টিভি শিয়া: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী পশ্চিমা যুব সমাজকে ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন  

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ফ্রান্সের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা ও পশ্চিমের আরো কয়েকটি দেশের অনুরূপ ঘটনার কারণে তোমাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তোমাদের (তরুণদেরকে) সম্বোধন করে আমার কথা বলার কারণ এটা নয় যে, আমি তোমাদের বাবা-মাকে আমি উপেক্ষা করছি, বরং এর কারণ এটা যে তোমাদের জাতি ও দেশের ভবিষ্যতকে তোমাদের হাতে দেখতে পাচ্ছি এবং  তোমাদের মধ্যে সত্যানুসন্ধানের অনুভূতিকে  তীব্রতর ও বেশি সচেতন দেখতে পেয়েছি। 
তোমাদের রাজনীতিবিদ ও সরকারের নেতাদের সম্বোধন করেও আমি লিখছি না, কারণ আমি বিশ্বাস করি তারা সচেতনভাবেই রাজনীতির পথকে ন্যায় ও সত্যের পথ থেকে আলাদা করে রেখেছেন। 
তোমাদের সঙ্গে আমি ইসলাম নিয়ে কথা বলতে চাই, বিশেষ করে, তোমাদের কাছে ইসলামের নামে যে ছবি তুলে ধরা হয়, সেটা নিয়ে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার পর থেকে  গত প্রায় দুই দশক ধরে এই মহান ধর্মকে ভয়ঙ্কর শত্রুর আসনে বসানোর বহু চেষ্টা করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মানুষের মনে ভয় ও ঘৃণার অনুভূতি উসকে দিয়ে ফায়দা হাসিল করার এক দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে পশ্চিমা রাজনীতির ইতিহাসে। পশ্চিমের জাতিগুলোর কাছে নানা ধরনের যেসব আতঙ্ক  প্রচার করা হয়েছে, তার ফিরিস্তিও আমি এখানে তুলে ধরতে চাই না। ইতিহাসের সাম্প্রতিক সমালোচনামূলক বিষয়গুলোর ওপর সংক্ষিপ্ত নজর বুলালেই তোমরা বুঝতে পারবে যে, নতুন করে যেসব ইতিহাস লেখা হচ্ছে তাতে অন্যান্য জাতি ও সংস্কৃতির সঙ্গে পশ্চিমা সরকারগুলোর কপট ও বলদর্পী আচরণের নিন্দা করা হয়েছে। 
ইউরোপ ও আমেরিকার ইতিহাস দাসপ্রথার জন্য লজ্জিত, তার মাথা হেট হয়ে আছে ঔপনিবেশিক যুগের জন্য।  যারা অশ্বেতাঙ্গ ও যারা খ্রিস্টান নয় তাদের ওপর অত্যাচারের জন্য লজ্জিত এই ইতিহাস। ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্টদের মাঝে ধর্মের নামে অথবা প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাতীয়তার নাম করে ঘটানো রক্তপাত নিয়ে তোমাদের গবেষক ও ইতিহাসবিদদের মাথা নত হয়ে আছে। 
(লজ্জিত হওয়ার) এই ধারা প্রশংসার যোগ্য বিষয়। এ সংক্রান্ত দীর্ঘ ফিরিস্তির অংশ-বিশেষ পর্যালোচনা করে ইতিহাসের নিন্দা করাও আমার লক্ষ্য নয়। বরং আমি চাই তোমরা তোমাদের বুদ্ধিজীবীদের কাছে এ প্রশ্ন করো যে, কেনো পশ্চিমের জনগণের বিবেক জেগে উঠতে ও সচেতন হতে কয়েক দশক বা কয়েক’শ বছর সময় লাগে? কেনো গণ-বিবেক বা সামষ্টিক বিবেকের পুনর্বিবেচনা কেবল সুদূর অতীতের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হয়, কেনো তা বর্তমান যুগের বিষয়গুলো নিয়ে করা হয় না? কেনো ইসলামী চিন্তাধারা ও সংস্কৃতির সঙ্গে আচরণের পদ্ধতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে গণ-সচেতনতা সৃষ্টিতে বাধা দেয়া হচ্ছে? 
তোমরা খুব ভালোভাবেই জানো যে ঐ সমস্ত অন্যায্য ফায়দা হাসিলের সাধারণ ভিত্তি ছিলো 'অন্যদের' অপমান করা এবং তাদের ব্যাপারে কাল্পনিক আতঙ্ক ও ঘৃণা ছড়ানো। এখন আমি চাই তোমরা নিজেদের প্রশ্ন করো, কেনো ঘৃণা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়ার পুরনো কূটকৌশলটিকে নজিরবিহীনভাবে তীব্রতর কোরে ইসলাম ও মুসলমানদের টার্গেট করা হয়েছে?" কেনো দুনিয়ার ক্ষমতাশালীরা চায় যে ইসলামী চিন্তাধারা কোণঠাসা হয়ে যাক ও অক্ষম হয়ে পড়ুক? ইসলামের কোন্ ব্যাখ্যা ও মূল্যবোধগুলো পরাশক্তিগুলোর পরিকল্পনাগুলোর পথে বাধা এবং ইসলামের ভুল চিত্র তুলে ধরার মাধ্যমে কোন স্বার্থকে রক্ষা করা হয়? তাই আমার প্রথম অনুরোধ হল, ইসলামের চিত্রকে মলিন করার পেছনের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যগুলো সম্পর্কে পড়াশুনা ও গবেষণা করো। 
আমার দ্বিতীয় অনুরোধ হলো, ইসলাম সম্পর্কে আগাম নানা রায় বা বাছ-বিচার (অনিরপেক্ষ মতামত) ও মিথ্যা প্রচারণার বন্যার-জবাবে তোমরা এই ধর্মটির সম্পর্কে সরাসরি জানার চেষ্টা করো। সুস্থ যুক্তিবাদী মনের দাবী এই যে, তোমাদেরকে তারা ভয় দেখিয়ে যা থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে তোমরা অন্তত সেটার প্রকৃতি ও ধরণ সম্পর্কে জানবে। 
আমার ব্যাখ্যা কিংবা ইসলামের অন্য কোনো ব্যাখ্যা গ্রহণ করতেও আমি জোর করছি না। আমি যা বলতে চাই তা হলো, বর্তমান দুনিয়ায় ইসলামের মতো একটি শক্তিশালী ও প্রভাবশালী বাস্তবতার সঙ্গে পরিচয় বিদ্বেষ ও অশুভ লক্ষ্যের মাধ্যমে হতে দেবে না। (তাদের তথা সাম্রাজ্যবাদীদের) ভাড়া করা সন্ত্রাসীদেরকে ইসলামের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরার সুযোগ দিও না। ইসলামের প্রাথমিক ও মৌলিক উৎস থেকে ইসলামের জ্ঞান অর্জন করো। কুরআন ও মহান নবীর (সা.) জীবন থেকে ইসলাম সম্পর্কে তথ্য নাও। 
আমি প্রশ্ন করতে চাই, তোমরা কি কখনো মুসলমানদের কুরআন সরাসরি পড়েছো?  ইসলামের নবীর (সা.) শিক্ষা ও তাঁর মানবিক এবং  নৈতিক শিক্ষাগুলো নিয়ে তোমরা কি কখনো গবেষণা করেছো? মিডিয়া ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে তোমরা কখনো ইসলামের বাণী গ্রহণ করেছো ? তোমরা কি কখনো নিজেকে প্রশ্ন করে দেখেছো, কিভাবে ও কোন্ মূল্যবোধগুলোর ভিত্তিতে এই ইসলাম বহু শতাব্দী ধরে  দুনিয়ার ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বুদ্ধিবৃত্তিক ও বৈজ্ঞানিক সভ্যতাকে লালন করেছে এবং  শ্রেষ্ঠ সব বিজ্ঞানী, পণ্ডিত ও চিন্তাবিদ গড়ে তুলেছে? আমি চাই, এইসব মানহানিকর ও পরিহাসমূলক প্রচারণা যেন বাস্তবতা ও তোমাদের মাঝে আবেগের বাঁধ তৈরি না করে ও নিরপেক্ষ বিচার-বিবেচনার সম্ভাবনাকে কেড়ে না নেয় তোমাদের কাছ থেকে। 
বর্তমান যুগে যোগাযোগ-মাধ্যমগুলো ভৌগলিক সীমারেখাকে তুলে দিয়েছে। তাই এসব যেনো তোমাদেরকে মনগড়া চিন্তার গণ্ডীতে বন্দী করে না ফেলে। এটা ঠিক যে যেসব ফাঁক বা ব্যবধানগুলো গড়ে তোলা হয়েছে সেগুলোকে কেউই একা একা পূরণ করতে পারবে না, তবুও তোমরা প্রত্যেকেই নিজেকে ও আশপাশকে আলোকিত করার উদ্দেশ্যে ওইসব ফাঁকগুলোর ওপর চিন্তা ও ন্যায়বিচারের এক সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারো। যদিও ইসলাম ও তোমাদের তরুণদের মাঝে সৃষ্ট এই পূর্বপরিকল্পিত চ্যালেঞ্জ একটি তিক্ত বিষয়, কিন্তু তা তোমাদের আগ্রহী ও অনুসন্ধিৎসু মনে নতুন কিছু প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে। আর এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা তোমাদের কাছে নতুন সত্য আবিষ্কারের সুবর্ণ সুযোগ এনে দেবে। 
তাই, ইসলামের সঠিক, সত্য ও (আগাম নানা রায় বা বাছ-বিচারের প্রভাবমুক্ত) নিরপেক্ষ ধারণা অর্জনের এই সুযোগ ছেড়ে দিও না যাতে সত্যের প্রতি তোমাদের দায়িত্ববোধের কারণে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইসলামের সঙ্গে  পশ্চিমা দুনিয়ার যোগাযোগের এই যুগটির ইতিহাসকে আরো ক্লেশমুক্ত বিবেক ও কম অস্বস্তি নিয়ে লিখতে পারে।
সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন