সূরা আল ইনসানের (দাহর) ও আহলে বাইতের আত্মত্যাগ
সূরা আল ইনসানের (দাহর) ও আহলে বাইতের আত্মত্যাগ
শিয়া ও সুন্নী উভয় মাযহাবের প্রায় সকল বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন যে,আমিরুল মুমিনীন আলী (আ.),হযরত ফাতেমা (আ.) এবং ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন আর তাদের দাসী‘ ফিদ্দা’ তাদের মানত মোতাবেক তিন দিন রোজা রেখেছিলেন।
প্রথম রাত্রে যখন তারা সকলে ইফতারী করতে মনস্থ করেন সে সময়ে একজন ভিক্ষুক দরজায় কড়া নাড়লো। হযরত আলী তার নিজের ইফতারীর অংশটুকু ভিক্ষুককে দিয়ে দিলেন। হযরত আলীকে অনুসরণ করে অন্যেরাও তাদের নিজ নিজ অংশ ভিক্ষুককে দান করলেন। অবশেষে তারা সকলে পানি পান করে রোজা ভঙ্গ করলেন। আবার দ্বিতীয় রাত্রে একজন ইয়াতিম এসে দরজায় হাঁক দিল। আবারো তারা সকলে তাদের ইফতারী সেই ইয়াতিমকে দান করে দিলেন। এরকম তৃতীয় রজনীতে একজন কয়েদী কিছু সাহায্য প্রার্থনা করলে এবারেও তারা তাদের ইফতারীর সবটুকুই তাকে দিয়ে দিলেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে“ সূরা আল ইনসান” অবতীর্ণ হয়।(আমালী,সাদুক,পৃ. ২১২-২১৬। কাশফুল গুম্মাহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ৪১৩-৪১৭)
নিম্নের এ আয়াতটিতে ঐ সকল মহান ব্যক্তিদের আত্মত্যাগ ও দানের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে।
وَ يُطْعِمُوْنَ اْلْطَّعَامَ عَلَى حُبِّهِ مِسْكِيْنًا وَ يَتِيْمًا وَ أَسِيْرًا
অর্থাৎ“ তারা আল্লাহর ভালবাসায় মিসকিন, ইয়াতিম ও কয়েদীকে খাদ্য দান করেন। ” (আল ইনসান : ৮)
অনেক বিজ্ঞ ধর্মীয় আলেমরা বলেছেন যে,এই পবিত্র সূরাতে সকল ধরনের জান্নাতী নেয়ামতের বর্ণনা ও প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে তবে জান্নাতি হুরের কোন বর্ণনা আসেনি। এর কারণ হচ্ছে হযরত ফাতেমা যখন এ আয়াতে উল্লিখিত হয়েছেন তখন জান্নাতী হুরের কোন বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না। শুধুমাত্র হযরত ফাতেমার সম্মানের দিকে দৃষ্টি রেখেই এমনটি করা হয়েছে।(মানাকিবে শাহরে আশুব,৩য় খণ্ড,পৃ. ১০৬,১৪৭,১৪৮। মুনতাহাল আমাল,পৃ. ৬৮ (যেখানে হিজরী দ্বিতীয় বৎসরের ঘটনা বর্ণনা দেয়া হয়েছে))
উপরোক্ত ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শিয়া ও সুন্নী বিভিন্ন তাফসীরের গ্রন্থাবলীতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে“ তাফসীরে কাশশাফ”গ্রন্থের লেখক আল্লামা জারুল্লাহ্ যামাখশারী একজন উচ্চ পর্যায়ের সুন্নী আলেম ও মুফাসসির । তিনি তার স্বীয় তাফসীরে উক্ত ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন