তেহরানে গাযার মজলুম জনতার সমর্থনে কূটনৈতিক উদ্যোগ
তেহরানে গাযার মজলুম জনতার সমর্থনে কূটনৈতিক উদ্যোগ
গতকাল তেহরানে মুসলিম দেশগুলোর আন্তসংসদীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গাযার মজলুম জনগণের সমর্থনে আয়োজিত এ বৈঠকে কয়েকটি মুসলিম দেশের স্পিকারসহ সরকারি প্রতিনিধি দলও অংশ গ্রহণ করেন। এক দিনের এই জরুরি বৈঠক একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। বৈঠকে মুসলিম দেশগুলোর আন্তসংসদীয় পরিষদের প্রধান হিসেবে ইরান অংশ নেয়। পূর্ববর্তী প্রধান হিসেবে সুদান আর পরবর্তী প্রধান হিসেবে আফ্রিকার দেশ মালিও এ বৈঠকে অংশ নেয়। এর পাশাপাশি তুরস্ক, ওমান এবং লেবাননের মতো মুসলিম দেশগুলোর সংসদীয় কর্মকর্তারাও অংশ নিয়েছেন এ বৈঠকে।
যৌথ বিবৃতিতে অবিলম্বে অবরুদ্ধ গাযায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইসরাইলি এই নারকীয় গণহত্যার ঘটনায় আরব দেশগুলো রহস্যজনকভাবে নীরব রয়েছে। সেইসাথে আন্তর্জাতিক সমাজও একেবারে নির্লিপ্ত। বিশ্বসমাজের প্রতিক্রিয়া না থাকার কারণে ইসরাইল তাদের অপরাধযজ্ঞ জোরদার করে গাযায় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টিতে উৎসাহিত হচ্ছে। অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপিয় বহু দেশ নিরীহ গাযাবাসীদের ওপর পাশবিক হামলায় বেসামরিক লোকজনের হতাহতের বিষয়টি চোখেই দেখছে না। উল্টো তারা ইসরাইলের প্রতি তাদের সহায়তা ও সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। পশ্চিমারা রক্তপিপাসু ইসরাইলের নিরাপত্তা রক্ষার চেষ্টাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিন্তা করছে। আর গাযায় যে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেখানে যে নিরীহ মানুষের ওপর মার্কিন অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে দেদারসে গণহত্যা চালানো হচ্ছে সে বিষয়টি তারা দেখেও দেখছে না।
এরকম পরিস্থিতিতে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রধান এবং মুসলিম দেশগুলোর আন্তসংসদীয় পরিষদের প্রধান হিসেবে জরুরি এ বৈঠকের আয়োজন করে। এ বৈঠকে গাযার মজলুম জনগণকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য নিজেদের সব রকমের সামর্থ্যকে কাজে লাগানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। গাযার বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বৈঠক যথেষ্ট গুরুত্বের দাবি রাখে।
কেননা এ বৈঠকে গাযা নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অবস্থান পর্যালোচনা করা হয়েছে। ইহুদিবাদী ইসরাইল গাযায় চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করাসহ আন্তর্জাতিক রীতিনীতিগুলোকে যেভাবে পায়ের নীচে মাড়াচ্ছে, সেসব বিষয়ের প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদসহ বিশ্ব সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করানোও বৈঠকের একটা উদ্দেশ্য ছিল। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি মজলুম জাতির প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতি পরিপূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করেছেন। যৌথ বিবৃতিতে এসেছে ফিলিস্তিনীদের ওপর বিশেষ করে গাযা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। অবিলম্বে এই অবরোধ তুলে নিয়ে রাফাসহ সকল ক্রসিং পয়েন্ট পুরোপুরি খুলে দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে ওই যৌথ বিবৃতিতে।
ইরানের স্পিকার ডঃ আলি লারিজানি জানিয়েছেন গাযায় জরুরি ত্রাণ পাঠানোর ব্যাপারে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মিশরের পক্ষ থেকেও এক বার্তায় ত্রাণ সরবরাহ করার জন্য রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সত্যিই যদি রাফা ক্রসিং খুলে দেওয়া হয় এবং ত্রাণ পাঠানোর কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে অবরুদ্ধ গাযার নিরীহ জনগণের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমানো যাবে বলে ডক্টর লারিজানি মন্তব্য করেন।
সূত্রঃ টিভি ইসলাম
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন