মীরপুরের কালশী বিহারী ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষে ১০জন নিহত
মীরপুরের কালশী বিহারী ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষে ১০জন নিহত
ইলিয়াস মোল্লা
বাংলাদেশের মিরপুরের কালশী এলাকায় বিহারী ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পল্লবী থানায় ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, বিহারী ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনায় আজ ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ২টি মামলা করেছে। তাছাড়া স্থানীয় ব্যক্তিরা বাদী হয়ে অপর ৪টি মামলা করেছে। স্থানীয়দের দায়েরকৃত মামলা চারটি হলো- মামলা নং ২৭ থেকে যথাক্রমে ৩০ এবং পুলিশের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত মামলা দুটি হলো ৩১ ও ৩২।
হত্যা, ভাঙচুর, বিশেষ ক্ষমতা আইন, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়। এসব মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত সাত/আটশ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে, বিহারি ক্যাম্পে সংঘর্ষের ঘটনায় আটক সাত জনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
পুলিশ তাদেরকে আদালতে হাজির করে ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানালে রোববার বিকেল ৪টায় মহানগর হাকিম হাসিবুল হক এ আদেশ দেন।
যাদেরকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তারা হলেন- আজাদ (৪৪), আরিফ হোসেন (৩৪), জুয়েল (১৮), সাব্বির (১৮), নাসিম (৪৫), সীমা (৩০) ও ফরিদ।
পল্লবী থানায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মনিরুল ইসলাম এই রিমান্ড আবেদন করেন।
এদিকে, বিহারী ক্যাম্পে পুলিশি সহযোগিতায় স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লার লোকজন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে অভিযোগ এনে মিছিল করেছেন বিহারীরা। মিছিল থেকে তারা স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লার ফাঁসির দাবি করেন। মিছিলকারীরা ১০টি লাশ হাসপাতাল থেকে ক্যাম্পে আনার পর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি কামনা করেন।
আজ (রোববার) সকাল থেকেই তারা মাথায় কালো ও সাদা কাপড় বেঁধে মিছিল শুরু করে। দুপুর পৌনে একটা থেকে মিছিলটি তীব্র আকার ধারণ করে। মিছিলকারীরা কালশী সড়ক প্রদক্ষিণ করতে চাইলে পুলিশ তাদেরকে জলকামান দিয়ে বাধা দেয়। বিকেলে উত্তেজিত বিহারিরা জাবালে নূর ও ইটিসি পরিবহনের দু‘টি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর চালায়। তবে এ ঘটনায় বাসের যাত্রীরা দ্রুত নেমে যাওয়াতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সেখানে বিপুল পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মিছিলে বিহারী নেতা স্টান্ডেড পাকিস্তানিজ জেনারেল রিপ্যাট্রিয়েশন কমিটির সভাপতি নিজামুদ্দিন বলেন, "লাশগুলো আনার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের মাঝে পেতে চাই এবং স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লা আমাদের ওপর কী অত্যাচার শুরু করেছে তা তাকে জানাতে চাই। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের কথা শুনতে ক্যাম্পে না আসেন তাহলে আমরা লাশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ করব।"
অন্যদিকে, আগুনে পুড়িয়ে ক্যাম্পের লোকদের হত্যার দায়ে এমপি ইলিয়াস মোল্লাকে যথাযথ বিচার করে ফাঁসির দড়িতে ঝুলানোর দাবি করেন কমিটির প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম।
উল্লেখ্য, মিরপুর পল্লবী থানাধীন কালশী রোডস্থ কুর্মিটোলা এলাকায় বিহারী ক্যাম্পে পবিত্র শবে বরাতের রাতে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে শনিবার ভোরে স্থানীয়, বিহারী ও পুলিশের সংঘর্ষে ৯ জন আগুনে দগ্ধ ও একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মোট ১০ জন নিহত হন।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন