শাবান মাসের ফযিলত ও আমলসমূহ
শাবান মাসের ফযিলত ও আমলসমূহ
এস, এ, এ
শাবান মাসের ফযিলতসমূহ:
শাবান আরবী বর্ষের অন্যান্য মাস সমূহের তুলনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফযিলতপূর্ণ মাস। রেওয়ায়েতের বর্ণনা অনুযায়ি উক্ত মাসটি হজরত মোহম্মাদ (সা.) এর সাথে সম্পৃক্ত। হজরত মোহাম্মাদ (সা.) রমজান মাসের রোযার সাথে উক্ত মাসটির রোজাকে মিলিয়ে দিতেন। তিনি বলেছেন: শাবান মাস আমার মাস। ইমাম সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: যখন শাবান মাস আসতো তখন ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) তার সাহাবীদেরকে একত্রিত করে বলতেন: হে আমার সাহাবীরা তোমরা কি জান এটা শাবান মাস। হজরত মোহাম্মাদ (সা.) বলতেন: শাবান মাস আমার মাস সুতরাং তোমরা এ মাসে রোজা রাখ। আল্লাহর শপথ আমি আমার বাবা হুসাইন ইবনে আলী (আ.) এর কাছ থেকে শুনেছি এবং তিনি আমার দাদা হজরত আলী (আ.) এর কাছ থেকে শুনেছেন যে, তিনি বলেছেন: যে ব্যাক্তি রাসুল (সা.) এর ভালবাসায় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য শাবান মাসে রোযা রাখবে কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তাকে বেহেশত দান করবেন।
সাফওয়ান জামাল বলেছেন: আমাকে ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) বলেছেন: তোমার আশে পাশে যারা আছে তাদেরকে শাবান মাসে রোযা রাখতে বল। আমি তাঁকে বলি হে ইমাম! আমি আপনার জন্য উৎসর্গিত হই এই মাসে কি রোজা রাখার ফযিলত আছে? তিনি জবাবে বলেন: হ্যাঁ, রাসুল (সা.) যখনই শাবান মাসের চাঁদ দেখতেন তখন তিনি তাঁর উম্মতের মাঝে প্রচার করতে বলতেন যে, হে আমার উম্মতেরা তোমরা জেনে রাখ যে, শাবান মাস আমার মাস। সুতরাং সেই ব্যাক্তির উপরে খোদার রহমত বর্ষিত হবে যে, এ মাসে রোজা রাখবে। অতঃপর ইমাম সাদিক্ব (আ.) বলেন: যে, হজরত আলী (আ.) বলেছেন: আমি যখন থেকে শাবান মাসের রোজার ফযিলত সম্পর্কে অবগত হয়েছি তখন আজ পর্যন্ত এ মাসে রোজা বাদ দেইনি এমনকি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এ মাসের রোজাকে বাদ দিব না ইনশাআল্লাহ। (মাফাতিহুল জেনান, দ্বিতীয় অধ্যায়, শাবান মাসের আমল)
১- এ মাসে ইমাম হুসাইন, জয়নুল আবেদীন এবং মাহদী (আ.) এবং হজরত আব্বাস (আ.) জন্মগ্রহণ করেন।
২- আউলিয়াগণ এ মাসের অপেক্ষায় থাকতেন এবং দোয়ায়ে শাবানিয়া পাঠ করতেন। উক্ত দোয়াটি এ মাসের উত্তম আমলসমূহের মধ্যে একটি। উক্ত দোয়ার কিছু অংশ এমনও আছে যা সারা বছর পড়ার জন্য গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। (আল মুরাকেবাত, পৃষ্ঠা ১৭৪)
শাবান মাসের সাধারণ আমল সমূহ:
১- এসতেগফার পাঠ করা:
প্রত্যেকদিন ৭০ বার পড়তে হবে
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَ أَسْأَلُهُ التَّوْبَةَ
২- প্রত্যেকদিন ৭০ বার পড়তে হবে
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لا إِلهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمنُ الرَّحِيمُ الْحَيُّ الْقَيُّومُ وَ أَتُوبُ إِلَيْهِ
বিভিন্ন রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে উক্ত মাসে সবচেয়ে উত্তম দোয়া এবং যিকর হচ্ছে এসতেগফার পাঠ করা। কেউ যদি উক্ত মাসে প্রত্যেক দিন ৭০ বার এসতেগফার পাঠ করে তাহলে তাকে অন্যান্য মাসে ৭০ হাজার এসতেগফার পাঠ করার সমপরিমাণ সওয়াব দান করা হবে।
৩- সাদক্বা দান করা:
শাবান মাসে অর্ধেক পরিমাণ খুরমা হলেও সাদক্বা দানের জন্য তাকিদ করা হয়েছে। কেউ যদি এমনটি করে তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রাণ দান করেন।
ইমাম সাদিক্ব (আ.) উক্ত মাসে রোজা রাখা এবং সাদক্বা দান করা সম্পর্কে বলেছেনঃ একজন লোক রজব মাসের রোজা সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন: কেন তোমরা শাবান মাস সম্পর্কে অনবগত? রাবী জিজ্ঞাসা করেন হে রাসুল (সা.) এর সন্তান! কেউ যদি এ মাসে একদিন রোজা রাখে তাহলে তাকে কি পরিমাণ সওয়াব দান করা হবে? তিনি বলেন: শপথ আল্লাহর তার সওয়াব হচ্ছে বেহেশত। সে আবার জিজ্ঞাসা করে হে রাসুল (সা.) এর সন্তান! উক্ত মাসের সবচেয়ে উত্তম আমল কি কি? তিনি বলেনঃ সাদক্বা দান করা এবং এসতেগফার পাঠ করা। কেউ যদি এ মাসে সাদক্বা দান করে তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে এমন ভাবে লালন পালন করবেন যেভাবে তোমরা উটের বাচ্চাকে লালন পালন কর।
৪- এ মাসে হাজার বার পাঠ করা উত্তম:
لا إِلهَ إِلَّا اللَّهُ وَ لَا نَعْبُدُ إِلَّا إِيَّاهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَ لَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ
কেউ যদি উল্লেখিত বাক্যটি পাঠ করে তাহলে তাকে হাজার মাসের সমপরিমাণ ইবাদতের সওয়াব দান করা হবে।
৫- উক্ত মাসের প্রত্যেক বৃহস্পতিবারে ২ রাকাত নামাজ পড়া উত্তম। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজান্তে ১০০ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে। অতঃপর দোয়া চাইতে হবে।
৬- সালাওয়াত পাঠ করা:
উক্ত মাসে অধিক সালাওয়াত পাঠ করা উত্তম।
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَي مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ وَ عَجِّل فَرَجَهُم
৫- ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: দুরুদ শরীফ পাঠ করা। উক্ত দুরুদ শরীফটি শাবান মাসের প্রত্যেকদিন যাওয়ালের সময় (যোহরের সময়) এবং মধ্য রাতে পাঠ করা উত্তম:
اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسالَةِ وَمُخْتَلَفِ الْمَلاَّئِکةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ وَاَهْلِ بَیتِ الْوَحْىِ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ الْفُلْک الْجارِیةِ فِى اللُّجَجِ الْغامِرَةِ یاءْمَنُ مَنْ رَکبَها وَیغْرَقُ مَنْ تَرَکهَا الْمُتَقَدِّمُ لَهُمْ مارِقٌ وَالْمُتَاَخِّرُ عَنْهُمْ زاهِقٌ وَاللاّزِمُ لَهُمْ لاحِقٌ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ الْکهْفِ الْحَصینِ وَغِیاثِ الْمُضْطَرِّ الْمُسْتَکینِ وَمَلْجَاءِ الْهارِبینَ وَعِصْمَةِ الْمُعْتَصِمینَ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ صَلوةً کثیرَةً تَکونُ لَهُمْ رِضاً وَلِحَقِّ مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ اَداَّءً وَقَضاَّءً بِحَوْلٍ مِنْک وَقُوَّةٍ یا رَبَّ الْعالَمینَ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ الطَّیبینَ الاْبْرارِ الاْخْیارِ الَّذینَ اَوْجَبْتَ حُقُوقَهُمْ وَفَرَضْتَ طاعَتَهُمْ وَوِلایتَهُمْ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَاعْمُرْ قَلْبى بِطاعَتِک وَلا تُخْزِنى بِمَعْصِیتِک وَارْزُقْنى مُواساةَ مَنْ قَتَّرْتَ عَلَیهِ مِنْ رِزْقِک بِما وَسَّعْتَ عَلَىَّ مِنْ فَضْلِک وَنَشَرْتَ عَلَىَّ مِنْ عَدْلِک وَاَحْییتَنى تَحْتَ ظِلِّک وَهذا شَهْرُ نَبِیک سَیدِ رُسُلِک شَعْبانُ الَّذى حَفَفْتَهُ مِنْک بِالرَّحْمَةِ وَالرِّضْوانِ الَّذى کانَ رَسُولُ اللّهِ صَلَّى اللّهُ عَلَیهِ وَالِه وَسَلَّمَ یدْاَبُ فى صِیامِهِ وَقِیامِهِ فى لَیالیهِ وَاَیامِهِ بُخُوعاً لَک فى اِکرامِهِ وَاِعْظامِهِ اِلى مَحَلِّ حِمامِهِ اَللّهُمَّ فَاَعِنّا عَلَى الاِْسْتِنانِ بِسُنَّتِهِ فیهِ وَنَیلِ الشَّفاعَةِ لَدَیهِ اَللّهُمَّ وَاجْعَلْهُ لى شَفیعاً مُشَفَّعاً وَطَریقاً اِلَیک مَهیعاً وَاجْعَلْنى لَهُ مُتَّبِعاً حَتّى اَلْقاک یوْمَ الْقِیمَةِ عَنّى راضِیاً وَ عَنْ ذُنُوبى غاضِیاً قَدْ اَوْجَبْتَ لى مِنْک الرَّحْمَةَ وَالرِّضْوانَ وَاَنْزَلْتَنى دارَ الْقَرارِ وَمَحَلَّ الاْخْیارِ
৬- মুনাজাতে শাবানিয়েহ:
রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম আলী (আ.) এবং তাঁর পরবর্তি ইমামগণ শাবান মাসে উক্ত দোয়াটি গুরুত্ব সহকারে পাঠ করতেন।
اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَاسْمَعْ دُعائى اِذا دَعَوْتُک وَاْسمَعْ نِدائى اِذا نادَیتُک وَاَقْبِلْ عَلىَّ اِذا ناجَیتُک فَقَدْ هَرَبْتُ اِلَیک وَوَقَفْتُ بَینَ یدَیک مُسْتَکیناً لَک مُتَضرِّعاً اِلَیک راجِیاً لِما لَدَیک ثَوابى وَتَعْلَمُ ما فى نَفْسى وَتَخْبُرُ حاجَتى وَتَعْرِفُ ضَمیرى وَلا یخْفى عَلَیک اَمْرُ مُنْقَلَبى وَمَثْواىَ وَما اُریدُ اَنْ اُبْدِئَ بِهِ مِنْ مَنْطِقى واَتَفَوَّهُ بِهِ مِنْ طَلِبَتى وَاَرْجُوهُ لِعاقِبَتى وَقَدْ جَرَتْ مَقادیرُک عَلَىَّ یا سَیدى فیما یکونُ مِنّى اِلى آخِرِ عُمْرى مِنْ سَریرَتى وَعَلانِیتى وَبِیدِک لا بِیدِ غَیرِک زِیادَتى وَنَقْصى وَنَفْعى وَضَرّى اِلهى اِنْحَرَمْتَنى فَمَنْ ذَاالَّذى یرْزُقُنى وَاِنْ خَذَلْتَنى فَمَنْ ذَاالَّذى ینْصُرُنى اِلهى اَعُوذُ بِک مِنَ غَضَبِک وَحُلُولِ سَخَطِک اِلهى اِنْ کنْتُ غَیرَ مُسْتَاْهِلٍ لِرَحْمَتِک فَاَنْتَ اَهْلٌ اَنْ تَجُودَ عَلىَّ بِفَضْلِ سِعَتِک اِلهى کاَنّى بِنَفْسى واقِفَةٌ بَینَ یدَیک وَقَدْ اَظَلَّها حُسْنُ تَوَکلى عَلَیک فَقُلْتَ ما اَنْتَ اَهْلُهُ وَتَغَمَّدْتَنى بِعَفْوِک اِلهى اِنْ عَفَوْتَ فَمَنْ اَوْلى مِنْک بِذلِک وَاِنْ کانَ قَدْ دَنا اَجَلى وَلَمْ یدْنِنى مِنْک عَمَلى فَقَدْ جَعَلْتُ الاِقْرارَ بِالذَّنْبِ اِلَیک وَسیلَتى اِلهى قَدْ جُرْتُ عَلى نَفْسى فِى النَّظَرِ لَها فَلَهَا الْوَیلُ اِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَها اِلهى لَمْ یزَلْ بِرُّک عَلَىَّ اَیامَ حَیوتى فَلا تَقْطَعْ بِرَّک عَنّى فى مَماتى اِلهى کیفَ آیسُ مِنْ حُسْنِ نَظَرِک لى بَعْدَ مَماتى وَاَنْتَ لَمْ تُوَلِّنى اِلاّ الْجَمیلَ فى حَیوتى اِلهى تَوَلَّ مِنْ اَمْرى ما اَنْتَ اَهْلُهُ وَعُدْ عَلَىَّ بِفَضْلِک عَلى مُذْنِبٍ قَدْ غَمَرَهُ جَهْلُهُ اِلهى قَدْ سَتَرْتَ عَلَىَّ ذُنُوباً فِى الدُّنْیا وَاَنَا اَحْوَجُ اِلى سَتْرِها عَلَىَّ مِنْک فى الاُْخْرى اِذْ لَمْ تُظْهِرْها لاَِحَدٍ مِنْ عِبادِک الصّالِحینَ فَلاتَفْضَحْنى یوْمَ الْقِیمَةِ عَلى رُؤُسِ الاْشْهادِ اِلهى جُودُک بَسَطَ اَمَلى وَعَفْوُک اَفْضَلُ مِنْ عَمَلى اِلهى فَسُرَّنى بِلِقاَّئِک یوْمَ تَقْضى فیهِ بَینَ عِبادِک اِلهى اعْتِذارى اِلَیک اِعْتِذارُ مَنْ لَمْ یسْتَغْنِ عَنْ قَبُولِ عُذْرِهِ فَاقْبَلْ عُذْرى یا اَکرَمَ مَنِ اعْتَذَرَ اِلَیهِ الْمُسیئُونَ اِلهى لا تَرُدَّ حاجَتى وَلا تُخَیبْ طَمَعى وَلا تَقْطَعْ مِنْک رَجاَّئى وَاَمَلى اِلهى لَوْ اَرَدْتَ هَوانى لَمْ تَهْدِنى وَلَوْ اَرَدْتَ فَضیحَتى لَمْ تُعافِنى اِلهى ما اَظُنُّک تَرُدُّنى فى حاجَةٍ قَدْ اَفْنَیتُ عُمْرى فى طَلَبِها مِنْک اِلهى فَلَک الْحَمْدُ اَبَداً اَبَداً داَّئِماً سَرْمَداً یزیدُ وَلا یبیدُ کما تُحِبُّ وَتَرْضى اِلهى اِنْ اَخَذْتَنى بِجُرْمى اَخَذْتُک بِعَفْوِک وَاِنْ اَخَذْتَنى بِذُنُوبى اَخَذْتُک بِمَغْفِرَتِک وَاِنْ اَدْخَلْتَنىِ النّارَ اَعْلَمْتُ اَهْلَها اَنّى اُحِبُّک اِلهى اِنْ کانَ صَغُرَ فى جَنْبِ طاعَتِک عَمَلى فَقَدْ کبُرَ فى جَنْبِ رَجاَّئِک اَمَلى اِلهى کیفَ اَنْقَلِبُ مِنْ عِنْدِک بِالْخَیبَةِ مَحْروماً وَقَدْ کانَ حُسْنُ ظَنّى بِجُودِک اَنْ تَقْلِبَنى بِالنَّجاةِ مَرْحُوماً اِلهى وَقَدْ اَفْنَیتُ عُمْرى فى شِرَّةِ السَّهْوِ عَنْک وَاَبْلَیتُ شَبابى فى سَکرَةِ التَّباعُدِ مِنْک اِلهى فَلَمْ اَسْتَیقِظْ اَیامَ اغْتِرارى بِک وَرُکونى اِلى سَبیلِ سَخَطِک اِلهى وَاَنَا عَبْدُک وَابْنُ عَبْدِک قائِمٌ بَینَ یدَیک مُتَوَسِّلٌ بِکرَمِک اِلَیک اِلهى اَنَا عَبْدٌ اَتَنَصَّلُ اِلَیک مِمَّا کنْتُ اُواجِهُک بِهِ مِنْ قِلَّةِ اسْتِحْیائى مِنْ نَظَرِک وَاَطْلُبُ الْعَفْوَ مِنْک اِذِ الْعَفْوُ نَعْتٌ لِکرَمِک اِلهى لَمْ یکنْ لى حَوْلٌ فَانْتَقِلَ بِهِ عَنْ مَعْصِیتِک اِلاّ فى وَقْتٍ اَیقَظْتَنى لِمَحَبَّتِک وَکما اَرَدْتَ اَنْ اَکونَ کنْتُ فَشَکرْتُک بِاِدْخالى فى کرَمِک وَلِتَطْهیرِ قَلْبى مِنْ اَوْساخِ الْغَفْلَةِ عَنْک اِلهى اُنْظُرْ اِلَىَّ نَظَرَ مَنْ نادَیتَهُ فَاَجابَک وَاْستَعْمَلْتَهُ بِمَعُونَتِک فَاَطاعَک یا قَریبَاً لا یبْعُدُ عَنِ المُغْتَرِّ بِهِ وَیا جَواداً لایبْخَلُ عَمَّنْ رَجا ثَوابَهُ اِلهى هَبْ لى قَلْباً یدْنیهِ مِنْک شَوْقُهُ وَلِساناً یرْفَعُ اِلَیک صِدْقُهُ وَنَظَراً یقَرِّبُهُ مِنْک حَقُّهُ اِلهى إ نَّ مَنْ تَعَرَّفَ بِک غَیرُ مَجْهُولٍ وَمَنْ لاذَ بِک غَیرُ مَخْذُولٍ وَمَنْ اَقْبَلْتَ عَلَیهِ غَیرُ مَمْلُوک اِلهى اِنَّ مَنِ انْتَهَجَ بِک لَمُسْتَنیرٌ وَاِنَّ مَنِ اعْتَصَمَ بِک لَمُسْتَجیرٌ وَقَدْ لُذْتُ بِک یا اِلهى فَلا تُخَیبْ ظَنّى مِنْ رَحْمَتِک وَلا تَحْجُبْنى عَنْ رَاْفَتِک اِلهى اَقِمْنى فى اَهْلِ وِلایتِک مُقامَ مَنْ رَجَا الزِّیادَةَ مِنْ مَحَبَّتِک اِلهى وَاَلْهِمْنى وَلَهاً بِذِکرِک اِلى ذِکرِک وَهِمَّتى فى رَوْحِ نَجاحِ اَسْماَّئِک وَمَحَلِّ قُدْسِک اِلهى بِک عَلَیک اِلاّ اَلْحَقْتَنى بِمَحَلِّ اَهْلِ طاعَتِک وَالْمَثْوَى الصّالِحِ مِنْ مَرْضاتِک فَاِنّى لا اَقْدِرُ لِنَفْسى دَفْعاً وَلا اَمْلِک لَها نَفْعاً اِلهى اَنَا عَبْدُک الضَّعیفُ الْمُذْنِبُ وَمَمْلُوکک الْمُنیبُ فَلا تَجْعَلْنى مِمَّنْ صَرَفْتَ عَنْهُ وَجْهَک وَحَجَبَهُ سَهْوُهُ عَنْ عَفْوِک اِلهى هَبْ لى کمالَ الاِنْقِطاعِ اِلَیک وَاَنِرْ اَبْصارَ قُلُوبِنا بِضِیاَّءِ نَظَرِها اِلَیک حَتّى تَخْرِقَ اَبْصارُ الْقُلوُبِ حُجُبَ النُّورِ فَتَصِلَ اِلى مَعْدِنِ الْعَظَمَةِ وَتَصیرَ اَرْواحُنا مُعَلَّقَةً بِعِزِّ قُدْسِک اِلهى وَاجْعَلْنى مِمَّنْ نادَیتَهُ فَاَجابَک وَلاحَظْتَهُ فَصَعِقَ لِجَلالِک فَناجَیتَهُ سِرّاً وَعَمِلَ لَک جَهْراً اِلهى لَمْ اُسَلِّطْ عَلى حُسْنِ ظَنّى قُنُوطَ الاْیاسِ وَلاَ انْقَطَعَ رَجاَّئى مِنْ جَمیلِ کرَمِک اِلهى اِنْ کانَتِ الْخَطایا قَدْ اَسْقَطَتْنى لَدَیک فَاصْفَحْ عَنّى بِحُسْنِ تَوَکلى عَلَیک اِلهى اِنْ حَطَّتْنِى الذُّنُوبُ مِنْ مَکارِمِ لُطْفِک فَقَدْ نَبَّهَنِى الْیقینُ اِلى کرَمِ عَطْفِک اِلهى اِنْ اَنامَتْنِى الْغَفْلَةُ عَنِ الاِسْتْعِدادِ لِلِقاَّئِک فَقَدْ نَبَّهَنِى الْمَعْرِفَةُ بِکرَمِ آلاَّئِک اِلهى اِنْ دَعانى اِلَى النّارِ عَظیمُ عِقابِک فَقَدْ دَعانى اِلَى الْجَنَّةِ جَزیلُ ثَوابِک اِلهى فَلَک اَسْئَلُ وَاِلَیک اَبْتَهِلُ وَاَرْغَبُ وَاَسْئَلُک اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَاَنْ تَجْعَلَنى مِمَّنْ یدیمُ ذِکرَک وَلا وینْقُضُ عَهْدَک وَلایغْفُلُ عَنْ شُکرِک وَلا یسْتَخِفُّ بِاَمْرِک اِلهى وَاَلْحِقْنى بِنُورِ عِزِّک الاْبْهَجِ فَاَکونَ لَک عارِفاً وَعَنْ سِواک مُنْحَرِفاً وَمِنْک خاَّئِفاً مُراقِباً یا ذَاالْجَلالِ وَالاِْکرامِ وَصَلَّى اللّهُ عَلى مُحَمَّدٍ رَسُولِهِ وَ الِهِ الطّاهِرینَ وَسَلَّمَ تَسْلیماً کثیراً
উক্ত মুনাজাতটি যখন ইচ্ছা পাঠ করা যেতে পারে
১লা শাবান রাতের আমল:
শাবান মাসের প্রথম রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়ার জন্য গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। নামাজটির প্রথম রাকাতের সূরা ফাতিহার পরে ১০০ বার সূরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
১লা শাবান দিনের আমল:
রোজা রাখা: ইমাম সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসের প্রথম দিনে রোজা রাখে তাহলে তাকে বেহেশত দান করা হবে, আর কেউ যদি ২ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহর বিশেষ দৃষ্টি তার প্রতি থাকবে। আর কেউ যদি ৩ দিন রোজা রাখে তাহলে সে বেহেশতের যিয়ারত করতে পারবে। (আল মুরাকেবাত, পৃষ্ঠা ১৭৭, মাফাতিহুল জেনান, দ্বিতীয় অধ্যায়, শাবান মাসের আমল, ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৭৪)
২য় শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: ২য় শাবানের রাতে ৫০ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে উক্ত নামাজটি পড়ে তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা তার ফেরেশতাদেরকে বলবেন: হে ফেরেস্তা তুমি আগামী বছর পর্যন্ত উক্ত বান্দার গুনাহকে লিপিবদ্ধ করো না। উক্ত নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইখলাস, ফালাক এবং নাস প্রত্যেকটি একবার করে পাঠ করতে হবে।
অনুরূপভাবে কেউ যদি শাবান মাসে দুই দিন রোজা রাখে তাহলে বৃষ্টির পানি যেভাবে ময়লা আবর্জনাকে দূর করে অনুরূপভাবে তার গুনাহকে আল্লাহ মিটিয়ে দিবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৭৪- ৮৭৫)
৩রা শাবানের আমল:
উক্ত তারিখে কিছু আমল বর্ণিত হয়েছে যা সম্পাদন করা মুস্তাহাব। আমলসমূহ নিন্মরূপ:
১- রোজা রাখা।
২- যিয়ারত- এ আশুরা পাঠ করা।
কাসিম বিন আলা হামেদানী ইমাম হাসান আসকারী (আ.) এর উকিল তিনি বলেছেনঃ ইমাম (আ.) বলেছেন: যেহেতু ৩রা শাবান ইমাম হুসাইন (আ.) এর জন্মদিবস সেহেতু এ দিনে রোজা রাখ এবং নিন্মোক্ত দোয়াটি এই দিনে পাঠ কর:
اَللّهُمَّ اِنّى اَسْئَلُک بِحَقِّ الْمَوْلُودِ فى هذَا الْیوْمِ الْمَوْعُودِ بِشَهادَتِهِ قَبْلَ اْستِهْلالِهِ وَوِلادَتِهِ بَکتْهُ السَّماَّءُ وَمَنْ فیها وَالاْرْضُ وَمَنْ عَلَیها وَلَمّا یطَاْ لابَتَیها قَتیلِ الْعَبْرَةِ وَسَیدِ الاُسْرَةِ الْمَمْدُودِ بِالنُّصْرَةِ یوْمَ الْکرَّةِ الْمُعَوَّضِ مِنْ قَتْلِهِ اَنَّ الاْئِمَّةَ مِنْ نَسْلِهِ وَالشِّفاَّءَ فى تُرْبَتِهِ والْفَوْزَ مَعَهُ فى اَوْبَتِهِ والاْوصِیاَّءَ مِنْ عِتْرَتِهِ بَعْدَ قاَّئِمِهِمْ وَغَیبَتِهِ حَتّى یدْرِکوا الاْوْتارَ وَیثْاَروُا الثّارَ وَیرْضُوا الْجَبّارَ وَیکونُوا خَیرَ اَنْصارٍ صَلَّى اللّهُ عَلَیهِمْ مَعَ اْختِلافِ اللَّیلِ وَالنَّهارِ اَللّهُمَّ فَبِحَقِّهِمْ اِلَیک اَتَوَسَّلُ وَاَسْئَلُ سُؤالَ مُقْتَرِفٍ مُعْتَرِفٍ مُسیئٍ اِلى نَفْسِهِ مِمَّا فَرَّطَ فى یوْمِهِ وَاَمْسِهِ یسْئَلُک الْعِصْمَةَ اِلى مَحَلِّ رَمْسِهِ اَللّهُمَّ فَصَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَعِتْرَتِهِ وَاحْشُرْنا فى زُمْرَتِهِ وَبَوِّئْنا مَعَهُ دارَ الْکرامَةِ وَمَحَلَّ الاِقامَةِ اَللّهُمَّ وَکما اَکرَمْتَنا بِمَعْرِفَتِهِ فَاَکرِمْنا بِزُلْفَتِهِ وَارْزُقْنا مُرافَقَتَهُ وَسابِقَتَهُ وَاجْعَلْنا مِمَّنْ یسَلِّمُ لاِمْرِهِ وَیکثِرُ الصَّلوةَ عَلَیهِ عِنْدَ ذِکرِهِ وَعَلى جَمیعِ اَوْصِیاَّئِهِ وَاَهْلِ اَصْفِیاَّئِهِ الْمَمْدُودین مِنْک بِالْعَدَدِ الاِثْنَىْ عَشَرَ النُّجُومِ الزُّهَرِ وَالْحُجَجِ عَلى جَمیعِ الْبَشَرِ اَللّهُمَّ وَهَبْ لَنا فى هذَا الْیوْمِ خَیرَ مَوْهِبَةٍ وَاَنْجِحْ لَنا فیهِ کلَّ طَلِبَةٍ کما وَهَبْتَ الْحُسَینَ لِمُحَمَّدٍ جَدِّهِ وَعاذَ فُطْرُسُ بِمَهْدِهِ فَنَحْنُ عائِذُونَ بِقَبْرِهِ مِنْ بَعْدِهِ نَشْهَدُ تُرْبَتَهُ وَننْتَظِرُ اَوْبَتَهُ آمینَ رَبَّ الْعالَمینَ اَللّهُمَّ اَنْتَ مُتَعالِى الْمَکانِ عَظیمُ الْجَبَرُوتِ شَدیدُ الِمحالِ غَنِىُّ َعنِ الْخَلایقِ عَریضُ الْکبْرِیاَّءِ قادِرٌ عَلى ما تَشاَّءُ قَریبُ الرَّحْمَةِ صادِقُ الْوَعْدِ سابِغُ النِّعْمَةِ حَسَنُ الْبَلاَّءِ قَریبٌ إذا دُعیتَ مُحیطٌ بِما خَلَقْتَ قابِلُ التَّوبَةِ لِمَنْ تابَ اِلَیک قادِرٌ عَلى ما اَرَدْتَ وَمُدْرِک ما طَلَبْتَ وَشَکورٌ اِذا شُکرْتَ وَذَکورٌ اِذا ذُکرْتَ اَدْعُوک مُحْتاجاً وَاَرْغَبُ اِلَیک فَقیراً وَاَفْزَعُ اِلَیک خاَّئِفاً وَاَبْکى اِلَیک مَکرُوباً وَاَسْتَعینُ بِک ضَعیفاً وَاَتوَکلُ عَلَیک کافِیاً اُحْکمْ بَینَنا وَبَینَ قَوْمِنا [بِالْحَقِّ] فَاِنَّهُمْ غَرُّونا وَ خَدَعُونا وَ خَذَلُونا وَ غَدَرُوا بِنا وَ قَتَلُونا و نَحْنُعِتْرَةُ نَبِیک وَوَلَدُ حَبیبِک مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِاللّهِ الَّذِى اصطَفَیتَهُ بِالرِّسالَةِ وَائْتَمَنْتَهُ عَلى وَحْیک فَاجْعَلْ لَنا مِنْ اَمْرِنا فَرَجاً وَمَخْرَجاً بِرَحْمَتِک یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ
উক্ত দোয়াটির পরে এ দোয়াটি পাঠ কর যে দোয়াটি ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর অন্তিম সময়ে পাঠ করেছিলেন:
اللَّهُمَّ أَنْتَ مُتَعَالِي الْمَكَانِ عَظِيمُ الْجَبَرُوتِ شَدِيدُ الْمِحَالِ غَنِيٌّ عَنِ الْخَلَائِقِ عَرِيضُ الْكِبْرِيَاءِ قَادِرٌ عَلَى مَا تَشَاءُ قَرِيبُ الرَّحْمَةِ صَادِقُ الْوَعْدِ سَابِغُ النِّعْمَةِ حَسَنُ الْبَلَاءِ قَرِيبٌ إِذَا دُعِيتَ مُحِيطٌ بِمَا خَلَقْتَ قَابِلُ التَّوْبَةِ لِمَنْ تَابَ إِلَيْكَ قَادِرٌ عَلَى مَا أَرَدْتَ وَ مُدْرِكٌ مَا طَلَبْتَ وَ شَكُورٌ إِذَا شُكِرْتَ وَ ذَكُورٌ إِذَا ذُكِرْتَ أَدْعُوكَ مُحْتَاجاً وَ أَرْغَبُ إِلَيْكَ فَقِيراً وَ أَفْزَعُ إِلَيْكَ خَائِفاً وَ أَبْكِي إِلَيْكَ مَكْرُوباً وَ أَسْتَعِينُ بِكَ ضَعِيفاً وَ أَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ كَافِياً احْكُمْ بَيْنَنَا وَ بَيْنَ قَوْمِنَا [بِالْحَقِ] فَإِنَّهُمْ غَرُّونَا وَ خَدَعُونَا وَ خَذَلُونَا وَ غَدَرُوا بِنَا وَ قَتَلُونَا وَ نَحْنُ عِتْرَةُ نَبِيِّكَ وَ وَلَدُ [وُلْدُ] حَبِيبِكَ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الَّذِي اصْطَفَيْتَهُ بِالرِّسَالَةِ وَ ائْتَمَنْتَهُ عَلَى وَحْيِكَ فَاجْعَلْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا فَرَجاً وَ مَخْرَجاً بِرَحْمَتِكَ يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
ইবনে আব্বস (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: ইমাম সাদিক্ব (আ.) ৩রা শাবান ইমাম হুসাইন (আ.) এর জন্মদিনে এ দোয়াটি পাঠ করতেন। এছাড়া ৩রা শাবান রাতে রাসুল (সা.) হতে ২ রাকাত নামাজ বর্ণিত হয়েছে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি নিন্মরূপ: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ২৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৭৫)
৪র্থ শাবানের আমল:
৪র্থ শাবানের রাতে রাসুল (সা.) হতে ৪০ রাকাত নামাজ বর্ণিত হয়েছে। কেউ যদি উক্ত নামাজটি পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে প্রত্যেক রাকাতে বিনিময়ে ১০ লক্ষ বছরের ইবাদত, প্রত্যেক সূরার জন্য ১০ লক্ষ শহর এবং ১০ লক্ষ শহীদের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন। উক্ত নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ২৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
এছাড়াও রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি উক্ত মাসে ৪ দিন রোজা রাখে তাহলে তাকে ১০০ বছরের রোজার সমপরিমাণ সওয়াব দান করা হবে এবং কেয়ামতের দিন তার আমলনামা তার ডান হতে দেয়া হবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৭৮)
৫ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ৫ই শাবান তারিখে রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তার হাজারটি মনোবাসনাকে পূর্ণ করবেন এবং আকাশের তারার ন্যায় বেহেস্তে তাকে শহর দান করবেন। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইখলাস ৫০০ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
এছাড়াও উক্ত তারিখে রোজা রাখার অনেক সওয়াব বর্ণিত হয়েছে। আনাস ইবনে মালেক রাসুল (সা.) হতে রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন: যে ব্যাক্তি শাবান মাসে ৫টি রোজা রাখবে তাহলে আল্লাহ তাকে ১০ বছর রোজা এবং মরুভুমির বালুকণার সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন। (ফাযায়েলে মাহে রজব ওয়া শাবান, পৃষ্ঠা ২৫৩, ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৭৯)
৬ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ৬ শাবান রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে সৌভাগ্যেবান করে দিবেন, তার কবরকে বিস্তৃত করে দিবেন এবং কেয়ামতের দিন যখন সে কবর থেকে বাহির হবে তখন তার চেহারা চাঁদের ন্যায় আলোকিত হবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার ৫০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
রাসুল (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, উক্ত মাসে ৬ দিন রোজা রাখলে আল্লাহ তায়ালা তাকে ৮০ ধরণের বালা মুসবিত থেকে রক্ষা করবেন, ১২ বছরের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন এবং তাকে অতিদ্রুত পুল সিরাত অতিক্রম করতে সহায়তা করবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৭৯)
৭ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ৭ই শাবানের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে তার দোয়া কবুল এবং মনোবাসনা পূর্ণ হবে এবং তাকে শহীদের সমপরিমাণ সওয়াব দান করা হবে এবং তার গুনাহসমূহকে ক্ষমা করা হবে। নামাজটি পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: যে ব্যাক্তি উক্ত মাসে ৬ দিন রোজা রাখবে তাহলে তাকে ১২ বছরের রোজার সমপরিমাণ সওয়াব দান করা হবে, তার আমলনামাকে তার ডান হাতে দেয়া হবে এবং তার গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮০)
৮ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে ৮ই শাবানের রাতে ২ রাকাত নামাজ বর্ণিত হয়েছে। কোন ব্যাক্তির গুনাহ যদি সমুদ্রের সমপরিমাণও হয় এবং সে উক্ত নামাজটি পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার গুনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দিবেন এবং তাকে তাওরাত, যাবুর, ইন্জিল এবং কোরআন শরীফ পাঠ করার সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন। উক্ত নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা বাকারার ২৮৫- ২৮৬ আয়াতটি ৫ বার এবং সুরা ইখলাস ১৫ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূভাবে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো অনুরূপভাবে পড়তে হবে। আয়াতটি নিন্মরূপ:
ءَامَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَ الْمُؤْمِنُونَ كُلُّ ءَامَنَ بِاللَّهِ وَ مَلَئكَتِهِ وَ كُتُبِهِ وَ رُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَينَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ وَ قَالُواْ سَمِعْنَا وَ أَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ إِلَيْكَ الْمَصِيرُ
لَا يُكلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَ عَلَيهْا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَ لَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلىَ الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَ لَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَ اعْفُ عَنَّا وَ اغْفِرْ لَنَا وَ ارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلَئنَا فَانصُرْنَا عَلىَ الْقَوْمِ الْكَفِرِي
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি উক্ত মাসে ৮ দিন রোজা রাকে তাহলে আল্লাহ তায়ালা হাউযে কাউসারের পানি দ্বারা তাকে পরিতৃপ্ত করবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮০- ৮৮১)
৯ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ৯ই শাবানে ৪ রাকাত নামাজ পড়ে করে তাহলে আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামের আগুনকে হারাম করে দিবেন এবং প্রত্যেক আয়াতের পরিবর্তে তাকে বদরের যুদ্ধের ১২ শহীদের শাহাদতের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন। উক্ত নামাজটির পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা নাসর ১০ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি শাবান মাসে ৯ দিন রোজা রাখে তাহলে তাকে ১৮ বছরের সমপরিমাণ রোজার সওয়াব দান করা হবে এবং মৃত্যুর পরে মুনকির নাকির ফেরেস্তারা তাকে উদারতা ও সমবেদনার সহিত প্রশ্ন করবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮১)
১০ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ১০ই শাবান তারিখে রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তারা ফেরেশতাদেরকে বলবেন যে, তার আমলনামায় ১০ লক্ষ নেকি লিখে দাও এবং ১ লক্ষ পরিমাণ তার পদমর্যাদা ও সম্মানকে বাড়িয়ে দাও তার জন্য এক লক্ষ বেহেশতের দরজাকে সর্বদার জন্য উন্মুক্ত করে দাও। এমনকি তার পিতামাতা এবং প্রতিবেশিও তার কারণে ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে। নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং ৩ বার সুরা কাউসার পড়তে হবে।
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি উক্ত মাসে ১০ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমলের হিসাব কিতাবকে তার জন্য সহজতর করে দিবেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮১- ৮৮২)
১১ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ১১ই শাবানের রাতে ৮ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তাকে প্রত্যেক রাকাতের জন্য বেহেশতের বাগান দান করবেন। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০ বার সুরা কাফেরুন পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূভাবে পড়তে হবে। অবশিষ্ট রাকাতগুলো অনুরূপভাবে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি উক্ত দিনে রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার কবরে ১১টি আলোকিত মিনার স্থাপন করে দিবেন, সে কবর থেকেই বেহেস্তে তার অবস্থানকে অবলোকন করতে পারবে এবং কেয়ামতের দিন সে ইবাদতকারীদের সারিতে অবস্থান করবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮২)
১২ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি উক্ত তারিখের রাতে ১২ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার ৪০ বছরের কৃত গুনাহকে ক্ষমা করে দিবেন, ৪০ হাজার ফেরেস্তা তার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করবে এবং লাইলাতুল কদরে ইবাদতকারী ব্যাক্তির ন্যায় সমপরিমাণ তাকে সওয়াব দান করবেন। নামাজটি পড়ার পদ্ধতিটি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০ বার সুরা তাকাসুর পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো অনুরূপভাবে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ১২ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালার ফেরেস্তারা সেদিন থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত তার সাথে সাক্ষাতের জন্য আগমণ করবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮৩)
১৩ই শাবানের আমল:
রজব, শাবান এবং রমজান মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখকে “আইয়ামে বাইযা” বলা হয়ে থাকে। উক্ত তারিখের রাতে ২ রাকাত নামাজ পাঠ করতে হবে। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১ বার সুরা তিন পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনরূপভাবে পড়তে হবে। কেউ যদি উক্ত নামাজটি পড়ে তাহলে তাকে হজরত ইসমাইলের জন্মদিনে ২০০ দাশ মুক্ত করার সমপরিমাণ সওয়াব দান করা হবে এবং তার গুনাহ সমূহকে এমনভাবে ক্ষমা করা হবে যে, সে সদ্যই জন্মগ্রহণ করেছে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি শাবান মাসে ১৩ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তাকে ৩০ বছরের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন এবং বেহেস্তে তাকে এবং মুক্তার গম্বুজ দান করবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮৩)
১৪ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ১৪ই শাবান তারিখের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে হজরত আদম (আ.) এর সময় থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত ইবাদতকারীদের নামাজের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৫ বার সুরা আসর পাঠ করতে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি শাবান মাসে ১৪ দিন রোজা রাখে তাহলে স্থল এবং জলজ প্রাণি তার জন্য আল্লাহর নিকটে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮৪)
১৫ই শাবান রাতের আমল:
১৫ই শাবান তারিখে রাত্রি জাগরণের জন্য তাকিদ করা হয়েছে। এ রাতের বিশেষ বৈশিষ্ট হচ্ছে যে, ইমাম মাহদী (আ.) এর জন্মদিবস।
ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: ইমাম বাকের (আ.) কে উক্ত রাত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তরে বলেন: ১৫ই শাবানের রাত শবে ক্বদরের পরে সবচেয়ে ফযিলতপূর্ণ রাত। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর অপার দয়ায় তাঁর বান্দাদেরকে দান করেন এবং তাদেরকে ক্ষমা করেন সুতরাং তোমরা উক্ত রাতে এমনভাবে চাও যেন তোমাদের দোয়া কবুল হয়।
কেউ যদি এ রাতে অবৈধ কিছু না চায় তাহলে আল্লাহ তার দোয়াসমূহকে কবুল করেন।
এ রাত এমন একটি রাত যা আল্লাহ তার বান্দাদেরকে দান করেছেন। উক্ত রাতটি শবে ক্বদরের ন্যায় ফযিলতপূর্ণ একটি রাত সূতরাং তোমরা এ রাতে আল্লাহর ইবাদত কর এবং নিজেদের জন্য দোয়া চাও। উক্ত রাতে বিশেষ কিছু আমল বর্ণিত হয়েছে যেমন:
১- গোসল করা, উক্ত রাতে গোসল করলে আল্লাহ বান্দাদের গুনাহকে ক্ষমা করে দেন।
২- রাত্রি জাগরণ, উক্ত রাতে নামাজ, দোয়া এবং এসতেগফারের মাধ্যমে অতিবাহিত করা উত্তম। কেননা ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) বলেছেন: যে ব্যাক্তি এ রাতকে ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত করবে কেয়ামতে যেদিন সকলের অন্তর মারা যাবে সেদিনও অন্তর চীরন্জিবী থাকবে।
৩- ইমাম হুসাইন (আ.) এর যিয়ারত পাঠ করা: যে ব্যাক্তি এ রাতে যিয়ারত-এ ইমাম হুসাইন (আ.)পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দিবেন।
৪- দোয়া পাঠ করা:
এ দোয়াটি পাঠ করলে ইমাম মাহদী (আ.) এর যিয়ারতের সমপরিমাণ সওয়াব অর্জন করা সম্ভব। দোয়াটি নিন্মরূপ:
اَللّهُمَّ بِحَقِّ لَیلَتِنا [هذِهِ] وَمَوْلُودِها وَحُجَّتِک وَمَوْعُودِهَا الَّتى قَرَنْتَ اِلى فَضْلِها فَضْلاً فَتَمَّتْ کلِمَتُک صِدْقاً وَعَدْلاً لا مُبَدِّلَ لِکلِماتِک وَلا مُعَقِّبَ لاِیاتِک نُورُک الْمُتَاَلِّقُ وَضِیاَّؤُک الْمُشْرِقُ وَالْعَلَمُ النُّورُ فى طَخْیاَّءِ الدَّیجُورِ الْغائِبُ الْمَسْتُورُ جَلَّ مَوْلِدُهُ وَکرُمَ مَحْتِدُهُ وَالْمَلاَّئِکةُ شُهَّدُهُ وَاللّهُ ن اصِرُهُ وَمُؤَیدُهُ اِذا آنَ میعادُهُ وَالْمَلاَّئِکةُ اَمْد ادُهُ سَیفُ اللّهِ الَّذى لا ینْبوُ وَنُورُهُ الَّذى لا یخْبوُ وَ ذوُالْحِلْمِ الَّذى لا یصْبوُا مَدارُ الَّدهْرِ وَنَوامیسُ الْعَصْرِ وَوُلاةُ الاْمْرِ وَالْمُنَزَّلُ عَلَیهِمْ ما یتَنَزَّلُ فى لَیلَةِ الْقَدْرِ وَاَصْحابُ الْحَشْرِ وَالنَّشْرِ تَراجِمَةُ وَحْیهِ وَوُلاةُ اَمْرِهِ وَنَهْیهِ اَللّهُمَّ فَصَلِّ عَلى خاتِمِهْم وَقآئِمِهِمُ الْمَسْتُورِ عَنْ عَوالِمِهِمْ اَللّهُمَّ وَاَدْرِک بِنا اءَیامَهُ وَظُهُورَهُ وَقِیامَهُ وَاجْعَلْنا مِنْ اَنْصارِهِ وَاقْرِنْ ثارَنا بِثارِهِ وَاکتُبْنا فى اَعْوانِهِ وَخُلَصاَّئِهِ وَاَحْینا فى دَوْلَتِهِ ناعِمینَ وَبِصُحْبَتِهِ غانِمینَ وَبِحَقِّهِ قآئِمینَ وَمِنَ السُّوَّءِ سالِمینَ یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ وَالْحَمْدُلِلّهِ رَبِّ الْعالَمینَ وَصَلَواتُهُ عَلى سَیدِنا مُحَمَّدٍ خاتَمِ النَّبِیینَ وَالْمُرْسَلینَ وَعَلى اَهْلِ بَیتِهِ الصّادِقینَ وَعِتْرَتِهَ النّاطِقینَ وَالْعَنْ جَمیعَ الظّالِمینَ واحْکمْ بَینَنا وَبَینَهُمْ یا اَحْکمَ الْحاکمینَ
ইসমাইল বিন ফাযল হাশেমী বলেন: ইমাম সাদিক্ব (আ.) আমাকে এ দোয়াটির শিক্ষা দেন এবং আমিও ১৫ই শাবানে এ দোয়াটি পাঠ করি। দোয়াটি নিন্মরূপ:
اَللّهُمَّ اَنْتَ الْحَىُّ الْقَیومُ الْعَلِىُّ الْعَظیمُ الْخالِقُ الرّازِقُ الْمُحْیى الْمُمیتُ الْبَدىَّءُ الْبَدیعُ لَک الْجَلالُ وَلَک الْفَضْلُ وَلَک الْحَمْدُ وَلَک الْمَنُّ وَلَک الْجُودُ وَلَک الْکرَمُ وَلَک الاْمْرُ وَلَک الْمَجْدُ وَلَک الْشُّکرُ وَحْدَک لا شَریک لَک یا واحِدُ یا اَحَدُ یا صَمَدُ یا مَنْ لَمْ یلِدْ وَلَمْ یولَدْ وَلَمْ یکنْ لَهُ کفُواً اَحَدٌ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَاْغفِرْلى وَارْحَمْنى وَاکفِنى ما اَهَمَّنى وَاقْضِ دَینى وَوَسِّعْ عَلَىَّ فى رِزْقى فَاِنَّک فى هذِهِ اللَّیلَةِ کلَّ اَمْرٍ حَکیمٍ تَفْرُقُ وَمَنْ تَشاَّءُ مِنْ خَلْقِک تَرْزُقُ فَارْزُقْنى وَاَنْتَ خَیرُ الرّازِقینَ فَاِنَّک قُلْتَ وَاَنْتَ خَیرُ الْقاَّئِلینَ النّاطِقینَ وَاسْئَلوُا اللّهَ مِنْ فَضْلِهِ فَمِنْ فَضْلِک اَسْئَلُ وَاِیاک قَصَدْتُ وَابْنِ نَبِیک اعْتَمَدْتُ وَلَک رَجَوْتُ فَارْحَمْنى یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ
হজরত মোহাম্মাদ (সা.) উক্ত রাতে এ দোয়াটি পাঠ করতেন:
اَللّهُمَّ اقْسِمْ لَنا مِنْ خَشْیتِک ما یحُولُ بَینَنا وَبَینَ مَعْصِیتِک وَمِنْ طاعَتِک ما تُبَلِّغُنا بِهِ رِضْوانَک وَمِنَ الْیقینِ ما یهُونُ عَلَینا بِهِ مُصیباتُ الدُّنْیا اَللّهُمَّ اَمْتِعْنا بِاَسْماعِنا وَاَبْصارِنا وَقُوَّتِنا ما اَحْییتَنا وَاجْعَلْهُ الْوارِثَ مِنّا وَاجْعَلْ ثارَنا عَلى مَنْ ظَلَمَنا وَانْصُرنا عَلى مَنْ عادانا وَلا تَجْعَلْ مُصیبَتَنا فى دینِنا وَلا تَجْعَلِ الدُّنْیا اَکبَرَ هَمِّنا وَلا مَبْلَغَ عِلْمِنا وَلا تُسَلِّطْ عَلَینا مَنْ لا یرْحَمُنا بِرَحْمَتِک یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ
৫- ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) এর সালাওয়াত পাঠ করা:
সারা শাবান মাসে যাওয়ালের সময় এবং বিশেষ করে ১৫ই শাবানের রাতে উক্ত সালাওয়াতটি পাঠ করার অনেক ফযিলত রয়েছে।
للَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَ مَوْضِعِ الرِّسَالَةِ وَ مُخْتَلَفِ الْمَلائِكَةِ وَ مَعْدِنِ الْعِلْمِ وَ أَهْلِ بَيْتِ الْوَحْيِ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ الْفُلْكِ الْجَارِيَةِ فِي اللُّجَجِ الْغَامِرَةِ يَأْمَنُ مَنْ رَكِبَهَا وَ يَغْرَقُ مَنْ تَرَكَهَا الْمُتَقَدِّمُ لَهُمْ مَارِقٌ وَ الْمُتَأَخِّرُ عَنْهُمْ زَاهِقٌ وَ اللازِمُ لَهُمْ لاحِقٌ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ الْكَهْفِ الْحَصِينِ وَ غِيَاثِ الْمُضْطَرِّ الْمُسْتَكِينِ وَ مَلْجَإِ الْهَارِبِينَ وَ عِصْمَةِ الْمُعْتَصِمِينَ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ صَلاةً كَثِيرَةً تَكُونُ لَهُمْ رِضًى وَ لِحَقِّ مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ أَدَاءً وَ قَضَاءً بِحَوْلٍ مِنْكَ وَ قُوَّةٍ يَا رَبَّ الْعَالَمِينَ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ الطَّيِّبِينَ الْأَبْرَارِ الْأَخْيَارِ الَّذِينَ أَوْجَبْتَ حُقُوقَهُمْ وَ فَرَضْتَ طَاعَتَهُمْ وَ وِلايَتَهُمْ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ وَ اعْمُرْ قَلْبِي بِطَاعَتِكَ وَ لا تُخْزِنِي بِمَعْصِيَتِكَ وَ ارْزُقْنِي مُوَاسَاةَ مَنْ قَتَّرْتَ عَلَيْهِ مِنْ رِزْقِكَ، ،بِمَا وَسَّعْتَ عَلَيَّ مِنْ فَضْلِكَ وَ نَشَرْتَ عَلَيَّ مِنْ عَدْلِكَ وَ أَحْيَيْتَنِي تَحْتَ ظِلِّكَ وَ هَذَا شَهْرُ نَبِيِّكَ سَيِّدِ رُسُلِكَ شَعْبَانُ الَّذِي حَفَفْتَهُ مِنْكَ بِالرَّحْمَةِ وَ الرِّضْوَانِ الَّذِي كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَ آلِهِ وَ [سَلَّمَ] يَدْأَبُ فِي صِيَامِهِ وَ قِيَامِهِ فِي لَيَالِيهِ وَ أَيَّامِهِ بُخُوعا لَكَ فِي إِكْرَامِهِ وَ إِعْظَامِهِ إِلَى مَحَلِّ حِمَامِهِ اللَّهُمَّ فَأَعِنَّا عَلَى الاسْتِنَانِ بِسُنَّتِهِ فِيهِ وَ نَيْلِ الشَّفَاعَةِ لَدَيْهِ اللَّهُمَّ وَ اجْعَلْهُ لِي شَفِيعا مُشَفَّعا وَ طَرِيقا إِلَيْكَ مَهْيَعا وَ اجْعَلْنِي لَهُ مُتَّبِعا حَتَّى أَلْقَاكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَنِّي رَاضِيا وَ عَنْ ذُنُوبِي غَاضِيا قَدْ أَوْجَبْتَ لِي مِنْكَ الرَّحْمَةَ وَ الرِّضْوَانَ وَ أَنْزَلْتَنِي دَارَ الْقَرَارِ وَ مَحَلَّ الْأَخْيَارِ
৬- তসবিহ পাঠ করা:
সুবহান আল্লাহ - ১০০ বার।
আল হামদু লিল্লাহ- ১০০ বার।
আল্লাহু আকবার – ১০০ বার।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ – ১০০ বার।
উক্ত তসবীহ পাঠ করলে আল্লাহ তার পূর্বে কৃত গুনাহসমূহকে মাফ করে দিবেন এবং তার দোয়াকে কবুল করবেন।
৭- নামাজ:
আবু ইয়াহিয়া ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) কে জিজ্ঞাসা করেন এ রাতের সবচেয়ে উত্তম আমল কি? তিনি বলেন এশার নামাজের পরে দুই রাকাত নামাজ পড়বে। প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে সূরা কাফেরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে সূরা ইখলাসপাঠ করার মাধ্যমে নামাজকে শেষ করবে। তারপরে ৩৩ বার সুবহান আল্লাহ, ৩৩ বার আল হামদুল্লিাহ, ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করবে। অতঃপর বলবে:
یا مَنْ اِلَیهِ مَلْجَاءُ الْعِبادِ فِى الْمُهِمّاتِ وَاِلَیهِ یفْزَعُ الْخَلْقُ فىِ الْمُلِمّاتِ یا عالِمَ الْجَهْرِ وَالْخَفِیاتِ وَ یا مَنْ لا تَخْفى عَلَیهِ خَواطِرُ الاْوْهامِ وَتَصَرُّفُ الْخَطَراتِ یا رَبَّ الْخَلایقِ وَالْبَرِیاتِ یا مَنْ بِیدِهِ مَلَکوتُ الاْرَضینَ وَالسَّمواتِ اَنْتَ اللّهُ لا اِلهَ اِلاّ اَنْتَ اَمُتُّ اِلَیک بِلا اِلهَ اِلاّ اَنْتَ فَیا لا اِلهَ اِلاّ اَنْتَ اجْعَلْنى فى هِذِهِ اللَّیلَةِ مِمَّنْ نَظَرْتَ اِلَیهِ فَرَحِمْتَهُ وَسَمِعْتَ دُعاَّئَهُ فَاَجَبْتَهُ وَعَلِمْتَ اسْتِقالَتَهُ فَاَقَلْتَهُ وَتَجاوَزْتَ عَنْ سالِفِ خَطیئَتِهِ وَعَظیمِ جَریرَتِهِ فَقَدِ اسْتَجَرْتُ بِک مِنْ ذُنُوبى وَلَجَاْتُ اِلَیک فى سَتْرِ عُیوبى اَللّهُمَّ فَجُدْ عَلَىَّ بِکرَمِک وَفَضْلِک وَاحْطُطْ خَطایاىَ بِحِلْمِک وَعَفْوِک وَتَغَمَّدْنى فى هذِهِ اللَّیلَةِ بِسابِغِ کرامَتِک وَاجْعَلْنى فیها مِنْ اَوْلِیاَّئِک الَّذینَ اجْتَبَیتَهُمْ لِطاعَتِک وَاخْتَرْتَهُمْ لِعِبادَتِک وَجَعَلْتَهُمْ خالِصَتَک وَصِفْوَتَک اَللّهُمَّ اجْعَلْنى مِمَّنْ سَعَدَ جَدُّهُ وَتَوَفَّرَ مِنَ الْخَیراتِ حَظُّهُ وَاجْعَلْنى مِمَّنْ سَلِمَ فَنَعِمَ وَفازَ فَغَنِمَ وَاکفِنى شَرَّ ما اَسْلَفْتُ وَاعْصِمْنى مِنَ الاِْزدِیادِ فى مَعْصِیتک وَحَبِّبْ اِلَىَّ طاعَتَک وَما یقَرِّبُنى مِنْک وَیزْلِفُنى عِنْدَک سَیدى اِلَیک یلْجَاءُ الْهارِبُ وَمِنْک یلْتَمِسُ الطّالِبُ وَعَلى کرَمِک یعَوِّلُ الْمُسْتَقیلُ التّائِبُ اَدَّبْتَ عِبادَک بالتَّکرُّمِ وَاَنْتَ اَکرَمُ الاْکرَمینَ وَاَمَرْتَ بِالْعَفْوِ عِبادَک وَاَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحیمُ اَللّهُمَّ فَلا تَحْرِمْنى ما رَجَوْتُ مِنْ کرَمِک وَلا تُؤْیسْنى مِنْ سابِغِ نِعَمِک وَلا تُخَیبْنى مِنْ جَزیلِ قِسَمِک فى هذِهِ اللَّیلَةِ لاِهْلِ طاعَتِک وَاجْعَلْنى فى جُنَّةٍ مِنْ شِرارِ بَرِیتِک رَبِّ اِنْ لَمْ اَکنْ مِنْ اَهْلِ ذلِک فَاَنْتَ اَهْلُ الْکرَمِ وَالْعَفْوِ وَالْمَغْفِرَةِ وَجُدْ عَلَىَّ بِما اَنْتَ اَهْلُهُ لا بِما اَسْتَحِقُّهُ فَقَدْ حَسُنَ ظَنّى بِک وَتَحَقَّقَ رَجاَّئى لَک وَعَلِقَتْ نَفْسى بِکرَمِک فَاَنْتَ اَرْحَمُ الرّاحِمینَ وَاَکرَمُ الاْکرَمینَ اَللّهُمَّ وَاخْصُصْنى مِنْ کرَمِک بِجَزیلِ قِسَمِک وَاَعُوذُ بِعَفْوِک مِنْ عُقُوبَتِک وَاغْفِر لِىَ الَّذنْبَ الَّذى یحْبِسُ عَلَىَّ الْخُلُقَ وَیضَیقُ عَلىَّ الرِّزْقَ حَتّى اَقُومَ بِصالِحِ رِضاک وَاَنْعَمَ بِجَزیلِ عَطاَّئِک وَاَسْعَدَ بِسابِغِ نَعْماَّئِک فَقَدْ لُذْتُ بِحَرَمِک وَتَعَرَّضْتُ لِکرَمِک وَاسْتَعَذْتُ بِعَفْوِک مِنْ عُقُوبَتِک وَبِحِلْمِک مِنْ غَضَبِک فَجُدْ بِما سَئَلْتُک وَاَنِلْ مَا الْتَمَسْتُ مِنْک اَسْئَلُک بِک لا بِشَىءٍ هُوَ اَعْظَمُ مِنْک
অতঃপর সিজদাতে যেয়ে:
২০ বার বলতে হবে (یا رَبِّ)
৭ বার বলতে হবে (یا اَللّهُ)
৭ বার বলতে হবে (لا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ اِلاّ بِاللّهِ)
৭ বার বলতে হবে ( ما شآءَ اللّهُ ده مرتبه لا قُوّةَ اِلاّ بِاللّهِ)
১০ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে।
অতঃপর দোয়া চাইতে হবে। যদি বান্দাদের চাওয়া বৃষ্টির ফোটার ন্যায় অগুণিত হয় তাহলে আল্লাহ তা কবুল করবেন।
এছাড়াও উক্ত রাতে আরেকটি নামাজ বর্ণিত হয়েছে। নামাজটি ৪ রাকাত। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজান্তে নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করা উত্তম:
اللَّهُمَّ إِنِّی إِلَیْكَ فَقِیرٌ وَ مِنْ عَذَابِكَ خَائِفٌ مُسْتَجِیرٌ اللَّهُمَّ لا تُبَدِّلْ اسْمِی وَ لا تُغَیِّرْ جِسْمِی وَ لا تَجْهَدْ بَلائِی وَ لا تُشْمِتْ بِی أَعْدَائِی أَعُوذُ بِعَفْوِكَ مِنْ عِقَابِكَ وَ أَعُوذُ بِرَحْمَتِكَ مِنْ عَذَابِكَ وَ أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَ أَعُوذُ بِكَ مِنْكَ جَلَّ ثَنَاؤُكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَیْتَ عَلَى نَفْسِكَ وَ فَوْقَ مَا یَقُولُ الْقَائِلُونَ.
উক্ত রাতে নিন্মে উল্লেখিত যিকর সমূহ পাঠ করলে আল্লাহ তার গুনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দিবেন এবং দোয়া সমূহকে কবুল করবেন।
- সুবহানাল্লাহ - ১০০ বার।
- আল হামদুলিল্লাহ- ১০০ বার।
- আল্লাহু আকবার – ১০০ বার।
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ – ১০০ বার।
উক্ত রাতে আরো একটি নামাজ বর্ণিত হয়েছে। নামাজটি ১০ রাকাত। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজান্তে সিজদাতে যেয়ে নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করতে হবে:
اَللّهُمَّ لَکَ سَجَدَ سَوادِی و خَیالی و بَیاضی یا عظیمَ کُلِّ عَظیمِ. اغْفِرْلِیَ الذَّنْبَ الْعَظیمُ فَإِنَّهُ لا یَغْفِرُهُ غَیْرُکَ یا عظیمَ.
৮- উক্ত রাতে নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করা উত্তম:
اِلهى تَعَرَّضَ لَک فى هذَا اللَّیلِ الْمُتَعَرِّضُونَ وَقَصَدَک الْقاصِدُونَ وَاَمَّلَ فَضْلَک وَمَعْرُوفَک الطّالِبُونَ وَلَک فى هذَا اللّیلِ نَفَحاتٌ وَجَواَّئِزُ وَعَطایا وَمَواهِبُ تَمُنُّ بِها عَلى مَنْ تَشاَّءُ مِنْ عِبادِک وَتَمْنَعُها مَنْ لَمْ تَسْبِقْ لَهُ الْعِنایةُ مِنْک وَها اَنَا ذا عُبَیدُک الْفَقیرُ اِلَیک الْمُؤَمِّلُ فَضْلَک وَمَعْرُوفَک فَاِنْ کنْتَ یا مَولاىَ تَفَضَّلْتَ فى هذِهِ اللَّیلَةِ عَلى اَحَدٍ مِنْ خَلْقِک وَعُدْتَ عَلَیهِ بِعائِدَةٍ مِنْ عَطْفِک فَصَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ الطَّیبینَ الطّاهِرینَ الْخَیرینَ الْفاضِلینَ وَجُدْ عَلَىَّ بِطَولِک وَمَعْرُوفِک یا رَبَّ الْعالَمینَ وَصَلَّى اللّهُ عَلى مُحَمَّدٍخاتَمِ النَّبیینَ وَ الِهِ الطّاهِرینَ وَسَلَّمَ تَسْلیماً اِنَّ اللّهَ حَمیدٌ مَجیدٌ اَللّهُمَّ اِنّى اَدْعُوک کما اَمَرْتَ فَاسْتَجِبْ لى کما وَعَدْتَ اِنَّک لا تُخْلِفُ الْمیعادَ
উক্ত দোয়াটি সুবহে সাদিকের আগে নামাজে শাফ এর পূর্বে পাঠ করা হয়ে থাকে।
৯- সিজদা এবং দোয়া:
ইমাম সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: ১৫ই শাবান রাতে রাসুল (সা.) সিজদাতে নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করতেন:
سَجَدَ لَک سَوادى وَخَیالى وَآمَنَ بِک فؤ ادى هذِهِ یداىَ وَماجَنَیتُهُ عَلى نَفْسى یا عَظیمُ [عَظیماً] تُرْجى لِکلِّ عَظیمٍ اِغْفِرْ لِىَ الْعَظیمَ فَاِنَّهُ لایغْفِرُ الذَّنْبَ الْعَظیمَ اِلا الرَّبُّ الْعَظیمُ
তারপর তিনি নিজের দুই গালকে মাটির সাথে লাগিয়ে বলতেন:
عَفَّرْتُ وَجْهِي فِي التُّرَابِ وَ حُقَّ لِي أَنْ أَسْجُدَ لَكَ
১০- নামাজে জাফরে তাইয়ার পাঠ করা।
১১- দোয়ায়ে কুমাইল পাঠ করা:
ইমাম আলী (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: উক্ত তারিখে দোয়া কুমাইল পাঠ করার অনেক ফযিলত রয়েছে। ইমাম আলী (আ.) উক্ত দোয়াটি সিজদাতে পাঠ করেতেন।
ইমাম আলী (আ.) বলেন: এই রাতে সকল বান্দার ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়। এ রাতে হজরত খিযির (আ.) এর দোয়া পাঠ করলে তার দোয়া কবুল হয়। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮৫- ৯০২,আল মোরাকেবাত, পৃষ্ঠা ১৯২)
১২- ইমাম মাহদি (আ.) এর সমীপে “আরিজা”:
بسْمِ اللَّهِ الرَّحْمنِ الرَّحيمِ
كَتَبْتُ يا مَوْلايَ صَلَواتُ اللَّهِ عَلَيْكَ مُسْتَغيثاً، وَشَكَوْتُ ما نَزَلَ بي مُسْتَجيراً بِاللَّهِعَزَّوَجَلَّ، ثُمَّ بِكَ مِنْ أَمْرٍ قَدْ دَهَمَني، وَأَشْغَلَ قَلْبي، وَأَطالَ فِكْري، وَسَلَبَني بَعْضَلُبّي، وَغَيَّرَ خَطيرَ نِعْمَةِ اللَّهِ عِنْدي، أَسْلَمَني عِنْدَ تَخَيُّلِ وُرُودِهِ الْخَليلُ، وَتَبَرَّأَ مِنّيعِنْدَ تَرائي إِقْبالِهِ إِلَيَّ الْحَميمُ، وَعَجَزَتْ عَنْ دِفاعِهِ حيلَتي، وَخانَني في تَحَمُّلِهِصَبْري وَقُوَّتي. فَلَجَأْتُ فيهِ إِلَيْكَ، وَتَوَكَّلْتُ فِي الْمَسْأَلَةِ للَّهِ جَلَّ ثَناؤُهُ عَلَيْهِ وَعَلَيْكَ في دِفاعِهِعَنّي، عِلْماً بِمَكانِكَ مِنَ اللَّهِ رَبِّ الْعالَمينَ، وَلِيِّ التَّدْبيرِ وَمالِكِ الْاُمُورِ، وَاثِقاً بِكَ فِيالْمُسارَعَةِ فِي الشَّفاعَةِ إِلَيْهِ جَلَّ ثَناؤُهُ في أَمْري، مُتَيَقِّناً لِإِجابَتِهِ تَبارَكَ وَتَعالى إِيَّاكَ بِإِعْطائي سُؤْلي .وَأَنْتَ يا مَوْلايَ جَديرٌ بِتَحْقيقِ ظَنّي وَتَصْديقِ أَمَلي فيكَ في أَمْرِ كَذا وَكَذا
নিন্মে নিচের চাহিদাগুলোকে লিখতে হবে:
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….................
فيما لا طاقَةَ لي بِحَمْلِهِ، وَلا صَبْرَ لي عَلَيْهِ، وَإِنْ كُنْتُمُسْتَحِقّاً لَهُ وَلِأَضْعافِهِ بِقَبيحِ أَفْعالي وَتَفْريطي فِي الْواجِباتِ الَّتي للَّهِ عَزَّوَجَلَّ،فَأَغِثْني يا مَوْلايَ صَلَواتُ اللَّهِ عَلَيْكَ عِنْدَ اللَّهْفِ، وَقَدِّمِ الْمَسْأَلَةَ للَّهِ عَزَّوَجَلَّ فيأَمْري، قَبْلَ حُلُولِ التَّلَفِ، وَشَماتَةِ الْأَعْداءِ، فَبِكَ بُسِطَتِ النِّعْمَةُ عَلَيَّ.
وَاسْأَلِ اللَّهَ جَلَّ جَلالُهُ لي نَصْراً عَزيزاً، وَفَتْحاً قَريباً، فيهِ بُلُوغُ الْآمالِ، وَخَيْرُالْمَبادي، وَخَواتيمُ الْأَعْمالِ، وَالْأَمْنُ مِنَ الْمَخاوِفِ كُلِّها في كُلِّ حالٍ، إِنَّهُ جَلَّ ثَناؤُهُلِما يَشاءُ فَعَّالٌ، وَهُوَ حَسْبي وَنِعْمَ الْوَكيلُ فِي الْمَبْدَءِ وَالْمَآلِ.
উক্ত আরিজাটিকে কোন প্রবাহিত পানি, কুয়া অথবা কোন স্থায়ি পানিতে ডুবিয়ে দিতে হবে। আরিজাটি ডুবানোর পূর্বে বলতে হবে:
يا حسين بن روح، سَلامٌ عَلَيْكَ، أَشْهَدُ أَنَّ وَفاتَكَ في سَبيلِ اللَّهِ، وَأَنَّكَ حَيٌّ عِنْدَ اللَّهِمَرْزُوقٌ، وَقَدْ خاطَبْتُكَ في حَياتِكَ الَّتي لَكَ عِنْدَاللَّهِ جَلَّ وَعَزَّ وَهذِهِ رُقْعَتي وَحاجَتيإِلى مَوْلانا عَلَيْهِ السَّلامُ، فَسَلِّمْها إِلَيْهِ، فَأَنْتَ الثِّقَةُ الْأَمينُ.
১৫ই শাবান দিনের আমল:
উক্ত দিনে ইমাম মাহদি (আ.) এর যিয়ারত পাঠ করা উত্তম। যে যিয়ারতটি সামেরাতে ইমাম মাহদি (আ.) এর জন্য পাঠ করা হয়ে থাকে।
১৬ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি উক্ত তারিখের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে বেহেশতে এক হাজার প্রাসাদ দান করবেন। নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ১৬ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালার ৭০টি জাহান্নামের পথকে তার জন্য বন্ধ করে দিবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪২- ৯৪৩)
১৭ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি উক্ত তারিখের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার নামাজের স্থান ত্যাগ করার পূর্বেই তার সকল গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দিবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইখলাস ৭১ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ১৭ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামের সকল দরজাকে তার জন্য বন্ধ করে দিবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৩)
১৮ই শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ১৮ই শাবান তারিখের রাতে ১০ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার সকল দূর্ভাগ্যেকে সৌভাগ্যে পরিবর্তন করে দিবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো অনুরূপভাবে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ১৮ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য বেহেশতের সকল দরজা সমূহকে উন্মুক্ত করে দিবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৩- ৯৪৪)
১৯শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ১৯শে শাবান তারিখের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার পূর্বের এবং পরের সকল গুনাহকে ক্ষমা করে দিবেন এবং যদি তার পিতামাতা জাহান্নামে থাকে তাহলেও তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন। উক্ত নামাজের পদ্ধতিটি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৫ বার সুরা মুলক পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ১৯ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে বেহেশতে ৭০ হাজার মুক্ত ও ইয়াকুতের প্রাসাদ দান করবেন। (আমালি সাদুক, পৃষ্ঠা ৩০, সাওয়াবুল আমাল, পৃষ্ঠা ৮৭, ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৪)
২০শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ২০শে শাবান তারিখের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে সে স্বপ্নে বেহেশতে তার অবস্থানকে অবলোকন করবে এবং কেয়ামতের দিন তাকে সৎ ব্যাক্তিদের সাথে উত্তোলন করবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১৫ বার সুরা নাসর পাঠ করতে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২০ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে ৯০ হাজার হুর অথবা গেলেমান দান করবেন। (সাওয়াবুল আমাল, পৃষ্ঠা ৮৯, আমালি সাদুক, পৃষ্ঠা ৩০, ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৫ )
২১শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ২১শে শাবান তারিখের রাতে ৮ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে আকাশের নক্ষত্রের সমতুল্য সওয়াব দান করবেন এবং বেহেশতে তার পদমর্যাদাকে উক্ত পরিমাণ বৃদ্ধি করে দিবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইখলাস, ফালাক এবং নাস প্রত্যেকটি ১ বার করে পাঠ করতে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২১ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালার ফেরেস্তারা তাকে অভর্থনা জানাবে এবং তাকে নিজেদের পাখা দ্বারা আবৃত করে রাখবে। (সাওয়াবুল আমাল, পৃষ্ঠা ৮৭, আমালি সাদুক, পৃষ্ঠা ৩০, ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৫)
২২শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ২২শে শাবান তারিখের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার নামকে সত্যবাদীদের তালিকায় নিবন্ধন করবেন এবং তাকে রাসুলদের সারিতে স্থঅন দান করবেন।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২২ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে ৭০ হাজার মোটা ও পাতলা রেশমি পোষাক পরিধান করাবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৬)
২৩শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ২৩শে শাবান তারিখের রাতে ৩০ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন তার চেহারাকে পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় নুরান্বিত করে দিবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১ বার সুরা যিলযাল পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো অনুরূপভাবে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২৩ দিন রোজা রাখে তাহলে যখন তাকে কবর থেকে উত্তোলিত করা হবে তখন তার কবরের কাছে একটি নুরানী বাহন দাড়িয়ে থাকবে এবং তাকে নিজের উপরে আরোহন করিয়ে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৬)
২৪শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: যদি কোন ব্যাক্তি ২৪শে শাবান তারিখের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা কবরের আযাব বন্ধ, জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রাণ, তার কৃতকর্মের হিসাব নিকাশকে সহজতর করে দিবেন এবং হজরত আদম এবং নূহ (আ.) সহ অন্যান্য নবিগণ তার জন্য শেফায়াত করবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০ বার সুরা নাসর পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২৪ দিন রোজা রাখে তাহলে সে ৭০ হাজার তৌহিদবাদিদের শেফায়াত করতে পারবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৭)
২৫শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ২৫শে শাবান তারিখের রাতে ১০ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে সৎ কাজের উপদেশ এবং অসৎ কাজে বাধা দানের সমপরিমাণ এবং ৭০ জন নবির আমলের পরিমাণ সওয়াব দান করবেন।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২৫ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তার অন্তর থেকে নেফাক এবং কুটিলতাকে দূর করে দিবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৭- ৯৪৮)
২৬শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ২৬শে শাবান তারিখের রাতে ১০ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা পার্থিব এবং পরকালের দুঃখ দূদর্শা থেকে মুক্ত রাখবেন এবং কেয়ামতের দিন তাকে ৬টি নূর দান করবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে সুরা বাকারার ২৮৫- ২৮৬ নং আয়াতটি ১০ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটি অনুরূপভাবে পড়তে হবে। অবশিষ্ট রাকাতগুলো উল্লেখিত নিয়মে পাঠ করতে হবে। আয়াতটি নিন্মরূপ:
ءَامَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَ الْمُؤْمِنُونَ كُلُّ ءَامَنَ بِاللَّهِ وَ مَلَئكَتِهِ وَ كُتُبِهِ وَ رُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَينَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ وَ قَالُواْ سَمِعْنَا وَ أَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ إِلَيْكَ الْمَصِيرُ
لَا يُكلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَ عَلَيهْا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَ لَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلىَ الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَ لَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَ اعْفُ عَنَّا وَ اغْفِرْ لَنَا وَ ارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلَئنَا فَانصُرْنَا عَلىَ الْقَوْمِ الْكَفِرِي
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২৬ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে পুল সিরাত অতিক্রম করানোর দ্বায়িত্ব নিবেন। (সাওয়াবুল আমাল, পৃষ্ঠা ৮৭, ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৮ )
২৭শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ২৭শে শাবান তারিখের রাতে ১০ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার আমল নামায় ১০ লক্ষ সওয়াব লিখবেন এবং ১০ লক্ষ গুনাহকে মিটিয়ে দিবেন এবং তাকে একটি নূরানী মুকুট পরিধান করাবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা আলা ১০ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো অনুরূপভাবে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২৭ দিন রোজা রাখে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে দূরে রাখবেন। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৮- ৯৪৯)
২৮শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ২৮শে শাবান তারিখের রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার চেহারাকে পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় উজ্জল করে দিবেন, তার কবরকে বিস্তৃত করে দিবেন এবং কেয়ামতের বিভৎস এবং ভয়ঙ্কর মূহুর্তগুলো থেকে তাকে রক্ষা করবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইখলাস, ফালাক, এবং নাস প্রত্যেকটি ১ বার করে পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো অনুরূপভাবে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২৮ দিন রোজা রাখে তাহলে কেয়ামতের দিন তার চেহারা নূরানী হবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪৯- ৯৫০)
২৯শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ২৯শে শাবান তারিখের রাতে ১০ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে ইবাদতকারীর সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন, তার ভাল কর্মের পাল্লাক ভারি করে দিবেন, তার কৃতকর্মের হিসাব কিতাবকে সহজতর করে দিবেন। উক্ত নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা তাকাসুর, ফালাক, নাস এবং ইখলাস প্রত্যেকটি ১০ করে পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট নামাজগুলো অনুরূপভাবে পড়তে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসে ২৯ দিন রোজা রাখে তাহলে সে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করবে এবং সৌভাগ্যেবান হবে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৫০)
৩০শে শাবানের আমল:
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি ৩০শে শাবান তারিখের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে নাঈম নামক বেহেস্তে ১০ লক্ষ শহর তাকে দান করবেন এবং যদি ইহলোক এবং পরলোকবাসীদের সওয়াবের পরিমাণকে একত্রিত করা হয় তারপরেও তার সওয়াব বেশি হবে এবং আল্লাহ তার ১ হাজার মনোবাসনাকে পূর্ণ করবেন। উক্ত নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০ বার সুরা আলা পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজান্তে রাসুল (সা.) এর প্রতি ১০০ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে।
অনুরূপভাবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি শাবান মাসে ৩০ দিন রোজা রাখে তাহলে হজরত জিব্রাইল (আ.) আল্লাহর আরশের সামনে থেকে আহবান জানাবেন: হে ব্যাক্তি! (যে শাবান মাসে ৩০ দিন রোজা রেখেছে)তুমি নতুনভাবে আমল শুরু কর কেননা তোমার পূর্ববর্তি সকল গুনাহকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। (ইকবালুল আমাল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৫০- ৯৫১)
শাবান মাসের শেষ দিনগুলোর আমল সমূহ:
ইমাম রেযা (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: এ মাসের শেষের দিনগুলোতে নিন্মোক্ত দোয়াটি বেশী পাঠ কর।
اللَّهُمَّ أن لَم يکُن غَفَرتَ لَنَا فيي مَا مَضَي مِن شَعبَانَ فَاغفِر لَنَا فِيمَا بَقِي مِنه
শাবান মাসের শেষের তিন দিন রোজা রাখা উত্তম। ইমাম সাদিক্ব (আ.) বলেছেন: কেউ যদি শাবান মাসের শেষের দিনগুলোর সাথে রমজানের রোজাকে মিলিয়ে দেয় তাহলে আল্লাহ তাকে দুই মাসের রোজার সওয়াব দান করবেন।
শাবান মাসের শেষ তারিখ এবং রমজান মাসের প্রথম তারিখে নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করা উত্তম:
اَللّهُمَّ اِنَّ هذَا الشَّهْرَ الْمُبارَک الَّذى اُنْزِلَ فیهِ الْقُرآنُ وَ جُعِلَ هُدىً لِلنّاسِ وَ بَیناتٍ مِنَ الْهُدى وَالْفُرْقانِ قَدْ حَضَرَ فَسَلِّمْنا فیهِ وَ سَلِّمْهُ لَنا وَ تَسَلَّمْهُ مِنّا فى یسْرٍ مِنْک وَ عافِیةٍ یا مَنْ اَخَذَ الْقَلیلَ وَ شَکرَ الْکثیرَ اِقْبَلْ مِنِّى الْیسیرَ اَللّهُمَّ اِنّى اَسْئَلُک اَنْ تَجْعَلَ لى اِلى کلِّ خَیرٍ سَبیلاً وَ مِنْ کلِّ ما لا تُحِبُّ مانِعاً یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ یا مَنْ عَفا عَنّى وَ عَمّا خَلَوْتُ بِهِ مِنَ السَّیئاتِ یا مَنْ لَمْ یؤاخِذْنى بِارْتِکابِ الْمَعاصى عَفْوَک عَفْوَک عَفْوَک یاکریمُ اِلهى وَ عَظْتَنى فَلَمْ اَتَّعِظْ وَ زَجَرْتَنى عَنْ مَحارِمِک فلَمْ اَنْزَجِرْ فَما عُذْرى فَاعْفُ عَنّى یا کریمُ عَفْوَک عَفْوَک اَللّهُمَّ اِنّى اَسْئَلُک الرّاحَةَ عِنْدَ الْمَوْتِ وَالْعَفْوَ عِنْدَ الْحِسابِ عَظُمَ الذَّنْبُ مِنْ عَبدِک فَلْیحْسُنِ التَّجاوُزُ مِنْ عِنْدِک یااَهْلَ التَّقْوى وَ یا اَهْلَ الْمَغْفِرَةِ عَفْوَک عَفْوَک اَللّهُمَّ اِنّى عَبْدُک بْنُ عَبْدِک بْنُ اَمَتِک ضَعیفٌ فَقیرٌ اِلى رَحْمَتِک وَ اَنْتَ مُنْزِلُ الْغِنى والْبَرَکةِ عَلَى الْعِبادِ قاهِرٌ مُقْتَدِرٌ اَحْصَیتَ اَعمالَهُمْ وَ قَسَمْتَ اَرْزاقَهُمْ وَ جَعَلْتَهُمْ مُخْتَلِفَةً اَلْسِنَتُهُمْ وَ اَلْوانُهُمْ خَلْقاً مِنْ بَعْدِ خَلْقٍ وَ لا یعْلَمُ الْعِبادُ عِلْمَک وَ لا یقْدِرُ الْعِبادُ قَدْرَک وَکلُّنا فَقیرٌ اِلى رَحْمَتِک فَلا تَصْرِفْ عَنّى وَجْهَک وَاجْعَلْنى مِنْ صالِحى خَلْقِک فِى الْعَمَلِ وَالاْمَلِ وَالْقَضاَّءِ وَالْقَدَرِ اَللّهُمَّ اَبْقِنى خَیرَ الْبَقاَّءِ وَ اَفْنِنى خَیرَ الْفَناَّءِ عَلى مُوالاةِ اَوْلِیاَّئِک وَ مُعاداةِ اَعْداَّئِک وَ الرَّغْبَةِ اِلَیک وَ الرَّهْبَةِ مِنْک وَالْخُشُوعِ وَالْوَفاءِ وَالتَّسْلیمِ لَک وَالتَّصْدیقِ بِکتابِک وَاتِّباعِ سُنَّةِ رَسُولِک اَللّهُمَّ ما کانَ فى قَلْبى مِنْ شَک اَوْ رَیبَةٍ اَوْ جُحُودٍ اَوْ قُنُوطٍ اَوْ فَرَحٍ اَوْ بَذَخٍ اَوْ بَطَرٍ اَوْ خُیلاَّءَ اَوْ رِیاَّءٍ اَوْ سُمْعَةٍ اَوْ شِقاقٍ اَوْ نِفاقٍ اَوْ کفْرٍ اَوْ فُسُوقٍ اَوْ عِصْیانٍ اَوْ عَظَمَةٍ اَوْ شَىءٍ لا تُحِبُّ فَاَسْئَلُک یا رَبِّ اَنْ تُبَدِّلَنى مَکانَهُ ایماناً بِوَعْدِک وَ وَفآءً بِعَهْدِک وَ رِضاً بِقَضاَّئِک وَ زُهْداً فِى الدُّنْیا وَ رَغْبَةً فیما عِنْدَک وَ اَثَرَةً وَ طُمَاْنینَةً وَ تَوْبَةً نَصُوحاً اَسْئَلُک ذلِک یا رَبَّ الْعالَمینَ اِلهى اَنْتَ مِنْ حِلْمِک تُعْصى وَ مِنْ کرَمِک وَ جُودِک تُطاعُ فَکانَّک لَمْ تُعْصَ وَ اَنَا وَ مَنْ لَمْ یعْصِک سُکانُ اَرْضِک فَکنْ عَلَینا بِالْفَضْلِ جَواداً وَ بِالْخَیرِ عَوّاداً یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ وَ صَلَّى اللّهُ عَلى مُحَمَّدٍ وَ الِهِ صَلوةً داَّئِمَةً لا تُحْصى وَ لا تُعَدُّ وَ لا یقْدِرُ قَدْرَها غَیرُک یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন