তালেবান ও আমেরিকার বন্দি বিনিময়
তালেবান ও আমেরিকার বন্দি বিনিময়
'স্বার্থ চাই, তাই সমঝোতায় ক্ষতি নাই'
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হ্যাগেল তার দেশের একজন সেনাকে মুক্ত করার জন্য তালেবানের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মার্কিন সেনা বো বার্গডালের ‘জীবন বিপন্ন’ ছিল বলে এ সমঝোতা করতে হয়েছে।
একইসঙ্গে বিষয়টি মার্কিন কংগ্রেসকে না জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আমেরিকার আইন লঙ্ঘন করেছেন যে অভিযোগ উঠেছে তারও ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন হ্যাগেল।
গত শনিবার কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে’র নির্যাতন শিবির থেকে পাঁচ তালেবান নেতার মুক্তির বিনিময়ে মার্কিন সেনা সার্জেন্ট বো বার্গডালকে ছেড়ে দিয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান। কাতারের মধ্যস্থতায় এ বন্দি বিনিময় হওয়ার আগে পাঁচ বছর তালেবানের হাতে পণবন্দি ছিলেন বার্গডাল।
চাক হ্যাগেল বলেছেন, হোয়াইট হাউজের সব কর্মকর্তার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বার্গডালকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। ওই মার্কিন সেনার জীবন ‘বিপন্ন’ হয়ে পড়েছিল বলে ওয়াশিংটনের মনে হচ্ছিল; এ কারণে তাকে তড়িঘড়ি করে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে পরামর্শ করা যায়নি বলে তিনি দাবি করেন। অথচ আমেরিকায় প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার ৩০ দিন আগে কংগ্রেসকে জানানোর আইন রয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাবি করেছেন, বার্গডালের জীবন ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ছিল বলে আমরা দেরি করতে পারি নি। আরো ৩০ দিন অপেক্ষা করতে হলে কী হতো তা কল্পনাও করা যায় না।
মার্কিন সরকার এমন সময় তালেবানের সঙ্গে এ সমঝোতা করল যখন এই তালেবানকে ধ্বংস করার জন্য এখনো আফগানিস্তানে হাজার হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। অথচ আফগানিস্তানে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এক সময় পাকিস্তানের সহযোগিতায় এই মার্কিন সরকারই তালেবান সৃষ্টি করেছিল। কাজেই পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, কথিত সন্ত্রাসবাদ দমন বা অন্য যেকোনো অজুহাতের কথাই সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা বলুক না কেন আসলে সবকিছুর মূলে রয়েছে মার্কিন স্বার্থ। আমেরিকার স্বার্থে যখন তখন যাকে খুশি তাকে বন্ধু আবার যাকে খুশি তাকে শত্রু করা যায়। এজন্য লজ্জা-শরমের ধার ধারে না আমেরিকা।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন