শিয়াদের অর্থনৈতিক শক্তি যোগাতে ইমাম কাযিম (আ.) এর ভুমিকা
শিয়াদের অর্থনৈতিক শক্তি যোগাতে ইমাম কাযিম (আ.) এর ভুমিকা
এস, এ, এ
নিঃসন্দেহে অর্থ হচ্ছে মানুষের জীবন পরিচালনার মূল চাবিকাঠি। মানুষ অর্থ ছাড়া কখনই সুস্থ ও সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারে না। বিভিন্ন ধর্মের ন্যায় ইসলামে কখনই বলা হয়নি যে ফকিরের ন্যায় জীবন যাপন কর। হজরত আবু যার (রা.) এর খুব সুন্দর একটি কথা বলেছেনঃ দারিদ্রতা যখন ঘরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে তখন দ্বীন আরেক দরজা দিয়ে প্রস্থান করে। রাসুল (সা.) বলেছেনঃ
من لا معاش له لا معاد له
যার সম্পদ নাই তার আধ্যাত্মিক জীবনও নাই। (চে বয়াদ কারদ, পৃষ্ঠা ২৯০- ২৯১)
ইমাম কাযিম (আ.) ভালভাবেই জানতেন যে খোদায়ী আধ্যাতিকতার চরম উৎকর্ষে পৌছাতে হলে মানুষের পার্থিব চাহিদাকে নিবারণ করতে হবে যেন মানুষের আত্মিক উন্নতীর ক্ষেত্রে কোন বাধা না আসে। কেননা পার্র্থিব চাহিদা মিটে গেলে মানুষেরা আত্মিকভাবে শক্তিশালী হবে।
ইমাম কাযিম (আ.) ছিলেন উকিল সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি তার উকিলদের মাধ্যমে সারা বিশ্বে তার সাথে সাধারণ জনগণের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। ইমাম (আ.) এর উকিলগন জনগণের দেয়া উপঢৌকন এবং জাকাত সমূহ আদায় করতো এবং ইমাম (আ.) এর কাছে প্রেরণ করতো। এভাবে সারা পৃথিবীর শিয়ারা ইমাম (আ.) এর সাথে সম্পর্ক রেখেছিল। (মাকতাব দার ফারায়ান্দে তাকামুল, পৃষ্ঠা ৪০)
একটা বিষয় স্পষ্ট হয় আর তা হচ্ছে ইমাম (আ.) এ সমস্ত ধর্মীয় খাতে অর্জিত সম্পদ শিয়াদের উন্নয়নের কাজে ব্যায় করতেন এবং তাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতেন। যদিও তিনি খেলাফতের চাপে খুব কষ্টের জীবন যাপন করছিলেন কিন্তু তারপরেও তার দান ও বদান্যতা ছিল উদাহরণ স্বরূপ যেমন বলা হয়ে থাকে যে ইমাম কাযিম (আ.) এর দানকৃত সোনার থলি যদি কারো কাছে পৌছায় তাহলে তার আর কোন চাহিদা থাকতো না। (হায়াতে ফিকরি ওয়া সিয়াসি ইমামানে শিয়া, পৃষ্ঠা ৪৫৯- ৪৬০)
ইমাম মূসা কাযিম (আ.) এর আরো একটি পদক্ষেপ ছিল শিয়াদেরকে আব্বাসীয় খলিফাদের অত্যাচার এবং বন্দিশালা থেকে শিয়াদের পরিত্রাণের ব্যাবস্থা করা। তিনি আলী বিন ইয়াক্বতিন নামক ব্যাক্তিকে নির্দেশ দেন যে সে যেন খেলাফতের নির্ধারিত পদে বহাল থাকে এবং শিয়াদেরকে সাহায্যে করেন।
আলী বিন ইয়াক্বতিন ছিলেন ইমাম (আ.) এর একজন একনিষ্ঠ সাহাবী যিনি খলিফা হারুনের প্রিয়ভাজন ছিলেন এবং তার আস্থা অর্জন করেন এবং তার বিশাল ইসলামী খেলাফত মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্বে ছিল। তিনি তার যথাসাধ্য তার ক্ষমতার মাধ্যমে শিয়াদেরকে বিভিন্ন প্রতিকুল অবস্থা থেকে রক্ষা করতো বিশেষত আর্থিকভাবে তিনি শিয়ারদেরকে এবং ইমাম মূসা কাযিম (আ.) কে অর্থ প্রেরণ করতো।
আলী বিন ইয়াক্বতিন প্রকাশ্যেভাবে শিয়াদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করতো কিন্তু সুযোগ পেলে তাদেরকে তা দান করতো। তার কারণ ছিল যে হারুনের হুকুমত ইসলামী ছিল না। তিনি এভাবে শিয়াদেরকে আর্থিকভাবে সাহায্যে করতো।
সে প্রত্যেক বছর তার পক্ষ থেকে বেশকিছু লোককে হজ্বের জন্য প্রেরণ করতো এবং তাদের প্রত্যেককেই দশ থেকে বিশ হাজার দিরহাম দান করতো। হজ্বে প্রেরণ ছিল তার একটি ওসিলা মাত্র তিনি এভাবে শিয়াদেরকে আর্থিক সাহায্যে করতেন। (সীরে পিশওয়াইয়ান, পৃষ্ঠা ৪৬৯- ৪৭২)
এভাবেই ইমাম মূসা কাযিম (আ.) তার যুগে তার শিয়াদেরকে সাহায্যে ও সহযোগিতা করতেন এবং দ্বীন ইসলামের খেদমত করতেন।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন