অনুতপ্ত ক্যাপ্টেন: যাত্রীদের ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করেছিলাম

দক্ষিণ কোরিয়ার ডুবে যাওয়া জাহাজের ক্যাপ্টেন বলেছেন, জাহাজ ত্যাগ করলে যাত্রীরা ভেসে যেতে পারে ভেবে তিনি আগেভাগে জাহাজ খালি করার নির্দেশ দেননি।

অনুতপ্ত ক্যাপ্টেন: যাত্রীদের ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করেছিলাম
দক্ষিণ কোরিয়ার ডুবে যাওয়া জাহাজের ক্যাপ্টেন বলেছেন, জাহাজ ত্যাগ করলে যাত্রীরা ভেসে যেতে পারে ভেবে তিনি আগেভাগে জাহাজ খালি করার নির্দেশ দেননি।

সময়মতো জাহাজটি খালি করার নির্দেশ দিলে আরো অনেক যাত্রীর প্রাণ বাঁচানো যেত বলে তদন্তে উঠে আসার পর শুক্রবার ৬৯ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন লি জুন-সেয়োককে আরো দুই ক্রুসহ আটক করা হয়। এ ছাড়া, দুর্ঘটনার সময় জাহাজের ক্যাপ্টেনের পরিবর্তে একজন জুনিয়র অফিসার ফেরিটি চালাচ্ছিলেন বলেও তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন।

জাহাজটি কাত হয়ে ডুবে যেতে প্রায় দু’ঘন্টা সময় নেয়। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে,কাত হয়ে যাওয়ার পরও এটির ক্রুরা যাত্রীদেরকে জাহাজে অবস্থান করার নির্দেশ দিচ্ছিলেন।

ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা এবং জাহাজ চলাচল বিষয়ক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আজ (শনিবার) তাকে টেলিভিশনে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি বলেন, "এত বড় একটি বিপত্তি ঘটানোর জন্য আমি দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের সামনে দুঃখ প্রকাশ করছি। দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারবর্গের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।" জুনিয়র অফিসারের কাছে জাহাজ পরিচালনার দায়িত্ব হস্তান্তর সম্পর্কে তিনি বলেন, "আমি চলার গতিপথ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিয়ে কিছুক্ষণের জন্য বাথরুমে গিয়েছিলাম এবং ঠিক সে সময়ই জাহাজডুবির ঘটনা ঘটে। এ সময় সাগরে প্রচণ্ড স্রোত ছিল এবং পানি ছিল ঠাণ্ডা। এ অবস্থায় যদি তাদেরকে ফেরি ত্যাগ করতে বলি তাহলে তারা স্রোতের টানে ভেসে যেতে পারে বলে সে নির্দেশ আমি দেইনি।" উদ্ধারকারী নৌকাগুলো তখনো পৌঁছেনি বলে তিনি দাবি করেন।

আজ (শনিবার) উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত ডুবুরিরা জানিয়েছেন, তারা জাহাজের ভেতর তিনটি লাশ খুঁজে পেয়েছেন কিন্তু সেগুলো বের করে আনতে পারেননি। প্রায় ৫০০ যাত্রীবাহী ফেরিটি গত বুধবার সকালে ডুবে যায়। এর ১৭৪ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে; এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরো ২৭৩ জন। এ ছাড়া, ২৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চললেও অত্যন্ত ঘোলা পানি এবং প্রচণ্ড স্রোতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের আর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলে ধরে নিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।

সূত্রঃ রেডিও তেহরান

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন