সালাফি বা ওয়াহাবীদের গ্রান্ড মুফতি কে? - ১
সালাফি বা ওয়াহাবীদের গ্রান্ড মুফতি কে? - ১
ওয়াহাবীদের গ্রান্ড মুফতি ও সৌদি আরবের ফতওয়া বিষয়ক মন্ত্রী আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল লাতিফ আলুশ শেইখ ইমাম হুসাইন (আ.) ও বিশ্বের শিয়াদের ঘোরশত্রু এবং সর্বক্ষেত্রে তার শত্রুতার বিষয়টি ফুট উঠেছে। তিনি ওয়াহাবি চিন্তাধারার জনক আব্দুল ওয়াহাবের বংশধর এবং বিন বাযের পর গ্রান্ড মুফতির পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। অন্য সকল বৈশিষ্ট্যের মাঝে তার দৃষ্টিহীনতার বিষয়টি সবার আগে অপরের নজরকাড়ে। অন্তর্দৃষ্টিহীন এ ব্যক্তির বাহ্যিক এক চোখও অন্ধ।
শৈশব
আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল লাতিফ আলুশ শেইখ ১৩৬২ হিজরীর ৩রা জিলহজ্ব মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৩৭০ হিজরীতে মাত্র ৮ বছর বয়সে পিতৃহারা হন। জন্মসূত্রেই তিনি ছিলেন দৃষ্টিশক্তি দূর্বলতার শিকার এবং ১৩৮১ হিজরীতে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান।
পড়াশুনা
আহমাদ বিন সানান মসজিদে পবিত্র কুরআন শিক্ষা শুরু করেন আলুশ শেইখ এবং বলা হয়েছে যে, ১২ বছর বয়সে পবিত্র কুরআনের হেফজ সম্পন্ন করেন।
তিনি তার শিক্ষাজীবন আল-হালক অঞ্চলের কয়েকজনের আলেমের নিকট শুরু করেন এবং ১৩৮৩-৮৪ শিক্ষাবর্ষে ফিকাহ বিষয়ক কলেজ হতে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
যে সকল পদে দায়িত্ব পালন করেছেন
তিনি ১৩৯২ সাল পর্যন্ত ‘ইমামুদ দাওয়াহ আল-ইলমি’তে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৩৯২ সালে রিয়াদের ফিকাহ বিষয়ক কলেজের শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তিনি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য রিয়াদে স্থানান্তর এবং রিয়াদের মুহাম্মাদ বিন সাউদ বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের পর ১৪০৭ হিজরী হতে সৌদি আরবের সিনিয়র ওয়াহাবী ওলামা পরিষদের সদস্য পদলাভ করেন।
১৪১২ হিজরীতে সৌদি আরবের বাদশা’র সরাসরি নির্দেশে ধর্মীয় পড়াশুনা এবং ফতওয়া প্রদান বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত হন।
১৩১৭ হিজরীতে তিনি ভারপ্রাপ্ত গ্রান্ড মুফতির দায়িত্ব পান এবং ১৪২০ হিজরীর ২৯শে মহররম তত্কালীন গ্রান্ড মুফতি শেইখ আব্দুল আযিয বিন বাযের মৃত্যুর পর সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি এবং সৌদি আরবের সিনিয়র ওলামা পরিষদের প্রধানের দায়িত্ব লাভ করেন।
তার কর্তৃক প্রদত্ত হাস্যকর ও অবাক করা ফতওয়ার কয়েকটি নমুনা :
• ঈদে মীলাদুন্নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম) পালন করা হারাম!
• ইয়াযিদের বিরুদ্ধে ইমাম হুসাইন (আ.) এর বিপ্লব ছিল একটি হারাম কর্ম!
• ইয়েমেনীদেরকে অত্যাচারী ইরানের সহযোগিতা হারাম!
• লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী’র জন্য দোয়া করা এবং তাদের জন্য সাহায্য প্রেরণ করা হারাম!
• সকল গীর্জা ভেঙ্গে দাও!
• আশুরার দিন তার পুত্রের বিয়ের অনুষ্ঠান!!!!
• সৌদি আরবের জাতীয় উত্সব হালাল!
• মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম) এর ব্যক্তিত্ব রক্ষা এবং তাঁর অবমাননার প্রতিবাদে মিছিল করা হারাম!
• আমেরিকার বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়া হারাম!
• গাজা ও ফিলিস্তিনের জনগণের সমর্থনে মিছিল করা নিষেধ!
• নারীদের কর্তৃক নারীদের অন্তর্বাস বিক্রয় করা হারাম!
• সকল ইসলামি নিদর্শন ভেঙ্গে দাও এবং প্রাচীন নিদর্শন রক্ষা কর!
• শিয়াদের প্রতি হামলা!
• ইসলামি জাগরণ এবং স্বৈরাশাসকদেরকে বিতাড়িত করা হারাম!
• তুরস্কে নির্মিত টিভি-সিরিয়ালসমূহ দেখা হারাম!
• গোল করার পর ফুটবলিস্টরা যে সিজদা করেন তা মাকরুহ!
• ইমাম যামানের অস্তিত্ব মিথ্যা!
• ইরানীরা মাজুস ও অগ্নিউপাসক!
• বাহরাইনের জনগণের পক্ষ নেয়া হারাম!
• সিরিয়া সরকারের উপর হামলা চালানো ওয়াজিব!•
দশ বছরের কিশোরীদেরকে তাদের সম্মতি ছাড়া বিবাহ দানে বাধ্য করার বৈধতা! ইত্যাদি...
আগামী পর্বে এ সকল ফতওয়ার উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে।
সূত্রঃ বার্তা সংস্থা আবনা
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন