হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছে ইউরোপে নারীরা
হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছে ইউরোপে নারীরা
এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরোপের অর্ধেক সংখ্যক নারী নানাভাবে হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মৌলিক অধিকার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা এফআরএ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের প্রতি তিন জন নারীর মধ্যে একজন ১৫ বছর বয়সেই শারীরিকভাবে নির্যাতন কিংবা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে একজন নারী যৌন হয়রানি শিকার হয়েছে এবং প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮টি দেশের ৪২ জন নারীর সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মৌলিক অধিকার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা এফআরএর এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, নারীদের ওপর সহিংস আচরণের ঘটনা ঘটলেও খুব কমই তা প্রকাশ পায়। নারীদের ওপর যেসব সহিংস আচরণ করা হয় তার মাত্র ১৪ শতাংশই প্রকাশ পায় এবং বাকি ঘটনা কেউ জানতেও পারে না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মৌলিক অধিকার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা এফআরএ’র এই প্রতিবেদনে গৃহে নারীদের ওপর সহিংসতা বিরোধী আন্তর্জাতিক কনভেনশনে যোগ দেয়ার জন্য ইউরোপের সব দেশের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে। ইউরোপে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঘটনা শুধু শারীরিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় একই সঙ্গে তারা সামাজিক ও লিঙ্গ বৈষম্যেরও সম্মুখীন হচ্ছে।
ইউরোপের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী হলেও তারা নানাভাবে গৃহে কিংবা সামাজিকভাবে বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। ইউরোপে পর্যাপ্ত আইন থাকলেও তা নারীদের যৌন হয়রানি রোধে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। অবশ্য ইউরোপে শুধু নারীরাই নানা ক্ষেত্রে হয়রানি ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে তা নয় একই সঙ্গে এসব দেশে বসবাসকারী অভিবাসী এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে ব্যাপক বৈষম্য করা হচ্ছে এবং বহু ক্ষেত্রে তাদের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হচ্ছে।
ইউরোপীয় দেশগুলোতে সংখ্যালঘু মুসলিম নারীদের ওপর বহু সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এসব দেশে বসবাসকারী মুসলিম নারীদের ইসলামি শালীন পোশাক বা হিজাব ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা উল্লেখ করা যায়। ইউরোপীয় সমাজ সাংস্কৃতিক ভিন্নতা বা বৈচিত্র্যের বিষয়টি মেনে নেয়ার পরিবর্তে মুসলিম নারীদের হিজাব ব্যবহার নিষিদ্ধ করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসা চেষ্টা করছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তৎপর উগ্র খ্রিস্টান গোষ্ঠীগুলো কেবল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করছে তাই নয় একই সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠদের বিরুদ্ধেও তারা অবস্থান নিয়েছে।
ইউরোপীয় সমাজে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ সংঘটিত হতে দেখা যায় এবং ইউরোপীয় দেশগুলো সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে মেনে নেয়ার পরিবর্তে কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠদের অবস্থান ঠিক রাখার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে নারী হোক, মুসলিম হোক কিংবা কৃষ্ণাঙ্গ যেই হোক না কেনো তাদের কাছে কোনো পার্থক্য নেই।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন