সৌদি আরব ও ইসরাইল প্রকাশ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে
সৌদি আরব ও ইসরাইল প্রকাশ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে
সৌদি আরব ও ইহুদিবাদী ইসরাইল বহু বছর ধরে গোপন সম্পর্ক বজায় রাখার পর এখন তারা প্রকাশ্যে গোয়েন্দা, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিয়েছে।
লেবাননের আল-মানার টিভি চ্যানেলের ইন্টারনেট সংস্করণে বলা হয়েছে, ইসরাইল ও সৌদি আরব সম্পর্ক এতদূর পর্যন্ত গড়িয়েছে যে, এ অঞ্চলের আরব জাতিগুলোকে মোকাবেলা করা, স্বাধীনচেতা আরব দেশের সরকারগুলোকে দুর্বল করা ও সন্ত্রাসীদের সমর্থন দেয়ার ব্যাপারে তেলআবিব ও রিয়াদ একজোট হয়েছে। সৌদি কর্মকর্তারা ইসরাইলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তাদেরকে প্রস্তাব দিয়েছেন, সৌদি আরব ইসরাইলের নিরাপত্তা রক্ষা এবং গোলান মালভূমি নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরাইল ও সৌদি আরব নিরাপত্তা ও তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে ব্যাপক সহযোগিতা বাড়িয়েছে এবং এর প্রভাব আমরা সিরিয়া, মিশর, লেবানন ও বাহরাইন সংকটে দেখতে পাচ্ছি।
সৌদি আরবের সাবেক বাদশাহ ফাহাদ বিন আব্দুল আজিজই প্রথম দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন এবং ১৯৯৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেন। ২০০৫ সালে রিয়াদ সেদেশে ইসরাইলি পণ্য প্রবেশের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর থেকে ইসরাইল ও সৌদি আরবের সম্পর্ক প্রকাশ্যে চলে আসে।
বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড প্রেস ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে এক প্রতিবেদনে তুর্কমেনিস্তান ও আজারবাইজান সীমান্তে বৃহৎ গ্যাস ফিল্ড পরিচালনার জন্য ইসরাইল ও সৌদি আরবের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছিল। এরপর ২০১০ সালের জুলাইয়ে ব্রিটিশ দৈনিক টাইমস জানিয়েছিল, ইরানে সামরিক হামলা চালানোর জন্য সৌদি আরব ইসরাইলকে তাদের আকাশসীমা ব্যবহারের সুযোগ দেবে।
ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রায় এক বছর আগে সৌদি আরবের অর্থ সহায়তায় গোলান মালভূমিতে তাকফিরি ও সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সেখান থেকে তাদেরকে সিরিয়ায় পাঠাচ্ছে যুদ্ধের জন্য। বলা হচ্ছে, ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য তুর্কি ফয়সালকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবের জনগণ ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার তীব্র বিরোধী।
তুর্কি ফয়সাল ছিলেন, সৌদি আরবের তথ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক দপ্তরের প্রধান। এ ছাড়া, তিনি লন্ডন ও ওয়াশিংটনে সৌদি রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাকেই রিয়াদ ও তেলআবিবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের অবকাশে ইসরাইলি বিচার বিভাগের প্রধান তাজিপি লিউনির সঙ্গে সৌদি কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎ থেকে তাদের মধ্যকার সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের পত্রপত্রিকা ও রেডিওর খবরে বলা হয়েছে, তাজিপি লিউনির সঙ্গে তুর্কি ফয়সালের সাক্ষাতে ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইসরাইলের আপোষ আলোচনা এবং ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তি পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে সৌদ আল ফয়সালের পরিবর্তে তুর্কি ফয়সালকে সৌদি পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান করা হতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এ থেকে তেলআবিব ও রিয়াদের মধ্যে সম্পর্ক বিস্তারের বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন