তামিল নাড়ু সরকার রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে
তামিল নাড়ু সরকার রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে
রাজীব গান্ধী- জয়ললিতা (উপরে), পেরারিভালান, সান্থান, মুরুগান (নিচে)
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত সাতজনকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার।
সুপ্রিম কোর্ট গতকাল রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে তিন আসামীর মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন সাজার নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে তাদের মুক্তির বিষয়টি তামিলনাড়ু সরকারের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। আদালতের ওই নির্দেশের পর আজ মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। বৈঠকে অভিযুক্ত নলিনী, সান্থান, পেরারিভালান, মুরুগানসহ মোট সাতজনকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে, তামিলনাড়ু বিধাসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা।
এরইমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিন দিন সময় দেয়া হয়েছে। এই সময়সীমার মধ্যে কেন্দ্র কিছু না জানালে তাদের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
সান্থান, মুরুগান এবং পেরারিভালানের প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে দীর্ঘ ১১ বছরে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। এই দেরির কারণে মঙ্গলবার তিনজনের ফাঁসির সাজা মওকুফের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এ ছাড়া বাকি চারজন নলিনী, রবার্ট পায়াস, জয়াকুমার ও রবিচন্দ্রন বর্তমানে যাবজ্জীবন করাদণ্ড ভোগ করছেন। রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সোনিয়া গান্ধীর হস্তক্ষেপে আগেই মুরুগানের স্ত্রী নলিনীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমানো হয়েছে। দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা শ্রীলঙ্কাভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন লিবারেশন টাইগার অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) সদস্য।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুডুরে নির্বাচনী প্রচারের সময় আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন রাজীব গান্ধী। ১৯৯৮ সালে রাজীব হত্যা মামলায় সান্থান, মুরুগান এবং পেরারিভালানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। দু’বছর পর তারা প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানান। কিন্তু ১১ বছর আবেদনটি ঝুলে থাকার পর ২০১১ সালে তাদের আবেদন খারিজ করে দেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রতিভা পাতিল। তবে প্রেসিডেন্টের কাছে করা ক্ষমার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়ার যুক্তিতে ওই বছরই মাদ্রাজ হাইকোর্ট আসামিদের ফাঁসি কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে জানিয়েছিল, প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অহেতুক দেরি হলে ফাঁসি মওকুফ হতে পারে।গত ২১ জানুয়ারি ১৫ আসামির ফাঁসি মওকুফ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এরপরই রাজীব হত্যা মামলার ওই তিন আসামী মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আবেদন জানান। ৪ ফেব্রুয়ারি তাদের আর্জি শোনার পর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয় ১৮ ফেব্রুয়ারি। অবশেষে গতকাল মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন