হিজবুল্লাহ মহাসচিবের ইসরাইলের বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি
হিজবুল্লাহ মহাসচিবের ইসরাইলের বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি
লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলকে লেবানন ও ফিলিস্তিনিদের জন্য খুবই বিপদজনক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, সব মুসলিম দেশ নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ব্যস্ত এবং ইসরাইলের বিপদের বিষয়টি তারা বেমালুম ভুলে গেছে। গতকাল (রোববার) রাতে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণে হিজবুল্লাহর শহীদ কমান্ডারদের স্মরণে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেছেন।
সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ আরো বলেছেন, ইসরাইলের বিপদ সম্পর্কে মুসলিম বিশ্বের বর্তমান নীরবতা আমেরিকা ও ইসরাইলেরে কাম্য। কারণ তারা চায় না মুসলিম বিশ্ব ফিলিস্তিন নিয়ে ব্যস্ত থাকুক। তিনি বলেন, ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ সংগ্রাম যদি অব্যাহত না থাকতো তাহলে ইসরাইল লেবানন দখল করে নিত। কারণ ইসরাইল দীর্ঘদিন ধরে লেবাননে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে আসছে এবং তারা কখনোই লেবাননের জনগণের কল্যাণ চায় না। হিজবুল্লাহ মহাসচিব মধ্যপ্রাচ্যে তৎপর উগ্র সালাফি ও তাকফিরি গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে এ অঞ্চলের জন্য আরেকটি বিপদ হিসেবে উল্লেখ করে তাদের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকালে বোঝা যায়, ১৯৪৮ সালে এ অঞ্চলে ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্য অনিরাপদ হয়ে উঠেছে এবং এ অঞ্চলের দেশগুলো সবসময়ই ইসরাইলের ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন। ইহুদিবাদী ইসরাইল দখলদারিত্বের মাধ্যমে নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইসরাইলের সমর্থক পাশ্চাত্যের দেশগুলোও এ অঞ্চলের মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির মাধ্যমে ইসরাইলের ষড়যন্ত্রের বিপদ সম্পর্কে জনমতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে কখনোই শান্তির দেখা মেলেনি। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে লেবানন হচ্ছে অন্যতম। কারণ এ দেশটি সবসময়ই ইসরাইলি আগ্রাসন ও পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন ছিল। বিশ্ববাসী দেখছে ইসরাইল লেবাননসহ এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে কীভাবে যুদ্ধ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ইসরাইল ১৯৮২ সালে হামলা চালিয়ে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল দখল করে নিয়েছিল। ওই হামলার উদ্দেশ্য ছিল পুরো লেবানন দখল করে নেয়া। কিন্তু শুরু থেকেই লেবাননের জনগণের প্রতিরোধের কারণে ইসরাইল তার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
ধর্মীয় উদ্দীপনায় গড়ে ওঠা হিজবুল্লাহর নেতৃত্বে লেবাননের জনগণের তীব্র প্রতিরোধের কারণে ইসরাইল ক্রমান্বয়ে পরাজিত হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ২০০০ সালে ইসরাইল দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। তবে সেনা প্রত্যাহার করে নিলেও ইসরাইল তার ব্যর্থতা ঢাকার জন্য দক্ষিণ লেবাননের দুটি গ্রামের ওপর এখনো দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে। অর্থাৎ লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হুমকি এখনো বজায় রয়েছে।
এর পর ২০০৬ সালের ৩৩ দিনের যুদ্ধেও ইসরাইলি সেনারা হিজবুল্লাহর কাছে লজ্জাজনকভাবে পরাজিত হলেও তাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। হিজবুল্লাহ মহাসচিব তার বক্তব্যে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন