বণী সাআদাতে মক্কার কুরাইশ ও মদিনার আনসারদের বিবাদ

বণী সাআদাতে মক্কার কুরাইশ ও মদিনার আনসারদের বিবাদ

হযরত আলী , মক্কা, মদিনা, কুরাইশ, আনসার, বণী-সাআদা, সকিফা, আবুবকর, ওমর, আবু উবায়দা , গ্বাদীরে খুম ,  বায়াত
হযরত আলী যখন মৃত নবীর দাফন-কাফনে ব্যস্ত, ঐ সময় আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে খলিফা নির্বাচন নিয়ে ‘সকিফা-বণী-সাআদা’য় তর্ক-বিতর্ক ও দ্বন্দ্ব শুরু হয়। মুহাজিরদের দাবীর পক্ষে হযরত আবুবকর বলেন, ‘‘মুহাজিরগণ সর্বপ্রথম আল্লাহ ও তার নবীর প্রতি ঈমান এনেছিল, তা ছাড়া তারা রাসুলের বন্ধুবান্ধব-আত্মীয় স্বজন, এ কারণে তারা খিলাফতের যোগ্য’’। আনসারী হুবাব ইবনে মুনযির বলেন, ‘‘হে আনসারগণ তোমাদের হাতের লাগাম অন্যের হাতে তুলে দিও না’’। ওমর বলে ওঠেন, ‘‘আল্লাহর কসম, তোমাদের ভেতর থেকে রাষ্ট্রপ্রধান আরবগণ কখনো মেনে নেবে না’’। জবাবে হুবাব আনসারদের উদ্দেশ্যে আবার বলে উঠেন, ‘‘যদি তারা তোমাদের অধিকার মেনে না নেয়, তবে তাদেরকে তোমাদের শহর থেকে বের করে দাও। খেলাফতের হকদার তোমাদের চেয়ে আর কে বেশি আছে’’? আবুবকর এই বলে তা প্রত্যাখ্যান করেন যে, "কুরাইশরা অবস্থান ও বংশগত দিক দিয়ে যেমন গোটা আরবের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, তেমনি মর্যাদা ও প্রতিপত্তির দিক থেকেও সবার শীর্ষে [বুখারী-৩৩৯৫]। এ বিষয়ক হাদিস : যতদিন পৃথিবীতে দু’জন লোকও অবশিষ্ট থাকবে, ততদিন শাসনভার চিরকাল কুরাইশদের হাতেই থাকবে (বুখারী-৩২০৪)। খিলাফত সব সময় কুরাইশদের মধ্যে বিরাজমান থাকবে, এমনকি তাদের মধ্যে ২-জন লোক অবশিষ্ট থাকলেও (বুখারী-৬৬৪১)। কেউ কুরাইশদের অপদস্থ করার ইচ্ছে করবে, আল্লাহ তাকে অপদস্থ করবেন (তিরমিযী-৩৮৪১), রাজত্ব কুরাইশদের, বিচার বিধান আনসারদের, আযান হাবশীদের, আমানতদারী ইয়ামানীদের (তিরমিযী-৩৮৭১), মক্কা বিজয়ের দিন নবী বললেন, আজকের পর কিয়ামত পর্যন্ত কুরাইশদের হত্যা করা হবে না (মুসলিম-৪৪৭৭)"। এ নিয়ে দু’পক্ষে গালাগালি শুরু হয়ে গেলে আনসাররা তাদের পক্ষে সা’দের কাছে বায়াত গ্রহণ করতে যাচ্ছিল, এমন সময় আনসার বশির ইবনে আমর বললেন, ‘‘এতে সন্দেহ নেই যে, আমরা দ্বীনকে সমর্থন করেছিলাম। মুহম্মদ ছিলেন কুরাইশ বংশের, সেহেতু খেলাফতে তাদের অধিকার সমধিক’’। বশিরের কথার মধ্যেই আনসারদের মধ্যে গোলযোগ দেখা দিলো এবং এই সুযোগে প্রথমে আনসার বশির, তারপর ওমর ও আবু উবায়দা আবুবকরের হাতে বায়াত গ্রহণ করেন। পরে বশিরের গোত্রের সকল আনসার এসেও বায়াত গ্রহণ করে।
অথচ যেখানে রাসুল (সা.) গ্বাদীরে খুমে সকল সাহাবীদের সামনে হজরত আলী (আ.) কে তাঁর পরে মুসলিম উম্মার ইমাম বা খলিফা নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু তাপরেও অনেকেই রাসুল (সা.) এর বানীর তোয়াক্কা না করেই রাসুল (সা.) পবিত্র লাশ মোবারক ছেড়ে দিয়ে তারা নিজেদের খামখেয়ালিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছিল।

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন