ইরাকে ফের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা
ইরাকে ফের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা
ইরাকে গত কয়েকদিন ধরে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। একদিকে, ইরাকের সরকার ও সেনাবাহিনী সেদেশের পশ্চিমাঞ্চলে তৎপর সন্ত্রাসীদের নির্মূল না করা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। অন্যদিকে সন্ত্রাসীরাও হামলা জোরদার করেছে।
ইরাকে গতকালের ধারাবাহিক বোমা হামলায় ৫০ জনের বেশি লোক হতাহত হয়েছে। রাজধানী বাগদাদ ও শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় মূলত এসব হামলা হয়েছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে গাড়ি বোমা হামলা চালিয়ে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। হামলার ধরন দেখে বোঝা যায় উগ্র আল-কায়দা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো এসব হামলার সঙ্গে জড়িত। গত একমাস ধরে আল আনবার প্রদেশে সরকারি বাহিনীর সামরিক অভিযানে আল কায়দা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, সেনা অভিযানে আল কায়দা সন্ত্রাসীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ওই ব্যর্থতা পুষিয়ে নেয়ার জন্য তারা ইরাকের বিভিন্ন শহরে হামলা চালিয়ে নিরীহ মানুষজন হত্যা করছে। গত কয়েকদিনে ইরাকে তারা একাধিক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে এবং এসব হামলার একমাত্র লক্ষ্য সাধারণ মানুষ। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি সরকারকে দুর্বল করা এবং পশ্চিমাঞ্চলে সেনাবাহিনী যে অভিযান চালাচ্ছে তা ঠেকানোর জন্যই সন্ত্রাসীরা নিরীহ মানুষ হত্যার পথ বেছে নিয়েছে। ইরাকের কর্মকর্তারা বলছেন, বাইরে থেকে আসা সন্ত্রাসীরা সেদেশে তৎপরতা চালাচ্ছে। বিশেষ করে সিরিয়া থেকে আসা সন্ত্রাসীরা ইরাকে নৈরাজ্য ও নিরপত্তাহীনতা সৃষ্টিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। তারা আরো বলেছেন, সৌদি আরবের মত কয়েকটি আরব দেশ এসব সন্ত্রাসীদের অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়ায় এখন যা ঘটছে ইরাকেও তার অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে এবং এর পেছনে রাজতন্ত্র শাসিত কয়েকটি আরব দেশের ইন্ধন রয়েছে। এ দেশগুলো উগ্র সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে লেবাননকেও অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করছে। ইরাকের কর্মকর্তারা সেদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষয়টি ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছেন এবং এ কারণে তারা সেনাবাহিনী ও জনগণের সহায়তায় নিরাপত্তা বিঘ্নসৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
বর্তমানে ইরাকের সুন্নি উপজাতিরাও সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করছে। সন্ত্রাসীদের পুরোপুরি উৎখাতে ইরাক সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা বাস্তবায়ন যদিও অত্যন্ত কঠিন হবে কিন্তু নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার সীমান্তে সব রকম আসা যাওয়া বন্ধ করে দেয়ায় অনেকটা আশার আলো দেখা দিয়েছে। একদিকে ইরাক সরকার সেনা ও গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতায় সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্যদিকে ইরাকের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দও সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সেনাবাহিনী, সরকার ও জনগণের মধ্যে ঐক্যের ওপর ব্যাপকভাবে জোর দিয়েছেন।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন