সৌদি শাহজাদা ও ইসরাইলের লিভনির গোপন বৈঠক
সৌদি শাহজাদা ও ইসরাইলের লিভনির গোপন বৈঠক
ইহুদিবাদী ইসরাইলের কথিত বিচারমন্ত্রী জিপি লিভনি ও সৌদি প্রিন্স তার্কি বিন ফয়সাল সম্প্রতি জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনের অবকাশে গোপনে বৈঠক করেছেন।
ওই বৈঠকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের আপোস প্রক্রিয়া নিয়ে তারা কথা বলেছেন।
সৌদি রাজপুত্র তার্কি বিন ফয়সাল ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রদূত ছিলেন এবং তাকে সৌদি পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারকদের খুবই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি বলে মনে করেন পশ্চিমা কূটনীতিকরা।
লিভনি ও তার্কি ২০০২ সালে উত্থাপিত সৌদি শান্তি প্রস্তাব নিয়ে কথা বলেছেন। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল ইসরাইল ১৯৬৭ সালে দখল করা সব অঞ্চল ছেড়ে দিলে আরব দেশগুলো ইসরাইলের সঙ্গে পুরোপুরি স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে।
তবে আরবরা ও বিশেষ করে ফিলিস্তিনি জনগণ মনে করেন সৌদি ওই প্রস্তাব ব্যর্থ হতে বাধ্য।
ইসরাইলি রেডিও জানিয়েছে, সৌদি শাহজাদা তার্কি লিভনিকে বলেছেন, ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় তাকে ইসরাইলি পক্ষের নেতা হিসেবে নিযুক্ত করায় সৌদি রাজা আবদুল্লাহ খুশি হয়েছেন, 'কারণ এর ফলে এটা নিশ্চিত হল যে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু (আলোচনার বিষয়ে) খুব কঠোর হবেন না'।
জবাবে লিভনি বলেছেন, তিনি সৌদি উদ্যোগটিকে 'খুবই ইতিবাচক' বলে মনে করেন এবং 'ইসরাইলি নেতাদের বিশ্বাস কোনো চুক্তিতে উপনীত না হওয়ার মূল্য চুক্তিতে উপনীত না হওয়ার মূল্যের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর'।
লিভনি আরো বলেন, ইসরাইল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সাম্প্রতিক শান্তি প্রস্তাবের প্রতিটি দিককে প্রেমময় বলে মনে না করলেও তার 'সহাবস্থান সহ্য করতে পারবে'।
কেরির ওই প্রস্তাবে মুসলমানদের প্রথম কিবলা ঐতিহাসিক আল-আকসা মসজিদের শহর পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাস বা জেরুজালেমকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ভাগাভাগি করার এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের দেশে ফিরতে না দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, পূর্ব বায়তুল মোকাদ্দাসকে ভবিষ্যত স্বাধীন ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে মেনে নেয়া না হলে ইসরাইলের সঙ্গে কোনো আপোস করা হবে না।
হামাস ও জিহাদসহ ফিলিস্তিনের সংগ্রামী দলগুলো ইসরাইলের সঙ্গে কথিত শান্তি আলোচনার বিরোধিতা করে আসছে এবং এই দলগুলো দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ-বিরতি বা সন্ধিকে মেনে নিলেও কখনও দখলদার ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে না বলেও উল্লেখ করে আসছে। সংগ্রামী এইসব দলের বক্তব্য অনুযায়ী ফিলিস্তিনকে পুরোপুরি স্বাধীন করা হলে জবরদখলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত গোটা ইসরাইলের অস্তিত্ব তথা ইসরাইলের এক ইঞ্চি জমিও টিকে থাকবে না।
ফিলিস্তিনের সংগ্রামী দলগুলো আরো বলছে, ইসরাইল শান্তি আলোচনাকে কেবল অবৈধ ইহুদি বসতি বিস্তারের হাতিয়ার বা ঢাল হিসেবেই ব্যবহার করে আসছে।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন