মুনাজাত-এ মানযুমা: হজরত আলী (আ.) হতে বর্ণিত দোয়া
মুনাজাত-এ মানযুমা: হজরত আলী (আ.) হতে বর্ণিত দোয়া
হে আল্লাহ!) সমস্ত প্রশংসা তোমার এবং বদান্যতা, ক্ষমা, উচ্চতম মর্যাদা এবং মহানুভবতা এ সব কিছুই আপনার সাথে সম্পৃক্ত। আপনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা দান করা থেকে বিরত থাকেন। হে আমার খোদা! সৃষ্টিকর্তা, রক্ষক এবং আশ্রয়দাতা আমি আমার সুবিধা এবং অসুবিধায় আপনার মুখাপেক্ষি। হে আমার আল্লাহ! যদিও আমার গুনাহ হচ্ছে বড় এবং অসীম, কিন্তু আপনার ক্ষমামার্জনা হচ্ছে সীমাহীন। হে আমার আল্লাহ! যদিও আমি আামার নাফসের অনুসরণ করেছি কিন্তু আপনি আমার অবস্থা সম্পর্কে অবগত, আপনি আমাকে দেখছেন এবং আমার দারিদ্রতা দুঃখ দূর্দশা সম্পর্কে অবগত এবং আমার গোপন আশা ও আবেদনকে শ্রবণ করেন। হে আমার আল্লাহ! আমার আশাকে আপনার কারামতের দরবার থেকে নিরাশ করেন না এবং আমাকে অন্ধকারে ছেড়ে দিবেন না কেননা আমি আপনারই দয়া ও অনুগ্রহের মুখাপেক্ষি। হে আল্লাহ! যদি আপনিও আমাকে নিরাশ করেন বা আপনার দরবার থেকে বহিষ্কার করেন তাহলে আর কে আছে যার কাছে আমি আশাবাদী হব, যে আমার শেফায়াত করবে। হে আমার আল্লাহ! আপনি আমাকে সমস্ত রোষ এবং আযাব থেকে আশ্রয় দান করুন, কেননা আমি আপনার একজন নগণ্য দাস, যে আপনার দরবারে ভীত অবস্থায় উপস্থিত হয়েছি। হে আমার আল্লাহ! আপনি আমাকে এমন কিছুর শিক্ষা দান করুন যেন আমি স্বস্তি ও শান্তি অনুভব করি। যখন কবর হবে আমার স্থায়ি ঠিকানা বা বাড়ি। যেখানে হয়তো আমাকে হাজার বছর শাস্তি দেয়া হবে কিন্তু তবুও আপনার প্রতি আমার রহমতের আশা নিরাশায় পরিণত হবে না। হে আমার আল্লাহ! যখন সম্পদ এবং সম্পদ কোনই কাজে আসবে না তখন আপনার ক্ষমার যে স্বাদ তা আমাকে দান করুন । হে আমার আল্লাহ! সম্পদ কোনই কাজে আসবে না তখন যদি আপনি আমার প্রতি দয়া না করেন তাহলে আমার আর কোন উপায় থাকবে না। আর যদি আপনি দয়া করেন তাহলে আমি কখনই জেরবার হব না। হে আমার আল্লাহ! যদি আপনি সাধারণ মানুষ যারা সৎ না তাদের প্রতি দয়া বা ক্ষমা না করেন তাহলে যারা নিজের নাফসের তাড়নায় অসৎ কাজ করে বেড়ায় তাহলে তো তারা মোটেও ক্ষমা পাবে না। হে আমার আল্লাহ! আমি তাকওয়া অর্জনের ক্ষেত্রে দ্বায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছি আমি ভেবেছিলাম যে আপনার ক্ষমা ও দয়ার আঁচলে আশ্রয় পাব। হে আমার আল্লাহ! যদি আমি অজান্তেও কোন ভুল করেছি তার কারণ ছিল যে আপনার অপার রহমত এবং দয়ার প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস ছিল। যার ফলে আমি এ পর্যন্ত বলার মতো নির্ভীকতার পরিচয় দিয়েছি। হে আমার আল্লাহ! আমার গুনাহ সমূহ পাহাড়ের চেয়েও বৃহৎ এবং আপনার ক্ষমা ও দয়া এর চেয়েও অনেক বেশি বৃহৎ এবং বিস্তৃত। হে আমার আল্লাহ! আপনার দয়া ও অনুগ্রহের কথা চিন্তা করে আমি নিজের অন্তরে শান্তি অনুভব করি এবং যখন আমি আমার ভুল কর্ম সমূহ এবং গুনাহের প্রতি দৃষ্টিপাত করি তখন আমি আফসোস করি। হে আমার আল্লাহ! আমার ভুল কর্ম এবং গুনাহ সমূহকে মুছে দিন কেননা আমি আমার বারবার গুনাহ সম্পাদন করার ভয়ে আপনার দরবারে ক্রন্দন করছি। হে আমার আল্লাহ! আপনার পক্ষ থেকে আমাকে আত্মিক শান্তি ও প্রশান্তি দান করুন যেন আমি শুধুমাত্র আপনারই দয়া ও অনুগ্রহের মুখাপেক্ষি হই। হে আমার আল্লাহ! যদি আপনি আমাকে নিজের দরবার থেকে নিরাশ অবস্থায় ফিরিয়ে দেন তাহলে আমি জানি না যে কি করব। হে আমার আল্লাহ! যারাই তোমার প্রতি আসক্ত তারা সারা রাত তোমার কারণে জাগ্রত অবস্থায় অতিবাহিত করে। আমি তোমার কাছে দোয়া প্রার্থনায় মশগুল আছি অথচ গাফেল ব্যাক্তিরা সকাল অবধি নিদ্রায় মগ্ন রয়েছে। হে আমার আল্লাহ! তোমার এই দূর্বল সৃষ্টিরা নিদ্রা এবং জাগ্রত অবস্থার অবস্থায় রয়েছে এবং কেউ কেউ তোমার দরবারে আহাজারি করছে যদিও সবার কাছে তোমার অনুগ্রহের বিষয়টি স্পষ্ট রয়েছে এবং সবাই তোমার অপার রহমত এবং বেহেস্তের প্রতি আশাবাদি। হে আমার আল্লাহ! আমি আশা করছি আপনার দয়া আমাকে স্বান্তনার সুসংবাদ দিবে। কিন্তু গুনাহ আমাকে নিন্দা এবং অপমানের দিকে প্রলোভিত করছে। হে আমার আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন কেননা আপনার ক্ষমা হচ্ছে আমার পরিত্রাণের উপায়। তানাহলে আমি আমার গুনাহের কারণে ধ্বংস হয়ে যাব। হে আমার আল্লাহ! সত্যিই মোহাম্মাদ (সা.) যিনি হাশেমি ছিলেন এবং তোমার সেই পবিত্র বান্দার ওসিলা দিয়ে দোয়া করছি যারা তোমার সমিপে ছিলেন নম্র এবং বিনয়ি। হে আমার আল্লাহ! হজরত মোহাম্মাদ (সা.) এবং তাঁর চাচাতো ভাই আলী (আ.) এবং সৎ বান্দা যারা তোমার প্রতি বিনয়ী। আমিও তোমার দরবারের প্রতি বিনয়ি। হে আমার আল্লাহ! আমাকে তোমার রাসুল (সা.) এর দ্বীনের প্রতি পুণরুত্থান দিবসে উত্তোলন করো। হে আমার আল্লাহ! আমাকে আপনার রাসুল (সা.) এর শাফায়াত থেকে বঞ্চিত করো না কেননা তাঁর শাফায়াতকে কবুল করা হবে। যতদিন পর্যন্ত সৎ ও একত্ববাদী বান্দারা তোমার দরবারে দোয়া চাইবে এবং ইবাদত করবে ততদিন দুরুদ হোক তাঁর প্রতি এবং তার পরিবারের প্রতি।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন